Ajker Patrika

বাড়ি দখল করতে চায় একটি চক্র, থানায় অভিযোগ দিলেন এসপি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
বাড়ি দখল করতে চায় একটি চক্র, থানায় অভিযোগ দিলেন এসপি

রাজশাহীতে একজন পুলিশ সুপারের (এসপি) বাড়ি ভাড়া নিয়ে দখলচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বর্তমানে টাঙ্গাইলে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে এসপি (ট্রেনিং) পদে কর্মরত।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রহিম শাহ চৌধুরী নামের ওই পুলিশ সুপারের (এসপি) বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেখানে নার্সিং ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা হয়েছে। সাত বছর ধরে ভাড়া না দেওয়ায় ২৪ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে। এমনকি নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য এবং এসপি রহিমের স্বাক্ষর জাল করে তাঁকে ওই ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান বানানো হয়।

বিষয়টির সুরাহা করতে না পেরে গত ২৯ আগস্ট এসপি রহিম রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মহানগরীর ডিঙ্গাডোবা ব্যাংক কলোনির মনিরুজ্জামান বাবুল ও সদর হাসপাতাল কলোনি এলাকার বাসিন্দা শবনম মোস্তারি মমির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন তিনি।

এসপি রহিম থানায় অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০১৬ সালে মমতা ট্রেনিং ইনস্টিটিউট নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালু করেন মনিরুজ্জামান বাবুল ও শবনম মোস্তারি মমি। মহানগরীর বালিয়াপুকুর এলাকায় ইনস্টিটিউটের জন্য এসপি রহিমের বাড়িটি তাঁরা ভাড়া নেন। পরের বছরের মার্চে রহিম ভাড়া চাইলে মমি ও বাবুল কালক্ষেপণ করতে থাকেন।

কিছুদিন পর এসপি রহিম তাঁর বাড়ির কেয়ারটেকার সোহেল রানাকে ভাড়ার জন্য বাবুল ও মমির কাছে পাঠান। এ সময় বাবুল সোহেল রানাকে মারধর করেন এবং হত্যার হুমকি দেন। এ ঘটনায় তখন এসপি রহিম বাবুল ও মমির নামে বোয়ালিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

এ ঘটনার পর বাবুল ও মমি মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউটের সঙ্গে এসপি রহিমকে সম্পৃক্ত করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে এসপি রহিমকে মমতা ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান হিসেবে উল্লেখ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির কার্যনির্বাহী পরিষদের স্বাক্ষর জাল করে এসপি রহিমকে ওই ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান হিসেবে অনুমোদন করা হয়। এ ছাড়া এসপি রহিমের স্বাক্ষরও জাল করা হয়। রহিমের থানায় করা অভিযোগে বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়, এসপি রহিম মমতা নার্সিং ইনস্টিটিউটের রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেননি। এ ছাড়া এস এম কাজিম উদ্দিন, আব্দুল ওয়াহেদ, ডা. আশরাফুল হকসহ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তাকে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়।

কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে এসপি রহিমকে মমতা ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়। কার্যনির্বাহী পরিষদে অবৈধভাবে চেয়ারম্যান অনুমোদনের পর এসপি রহিমকে বাড়ি ভাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানান বাবুল ও মমি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসপি রহিম বলেন, ‘নার্সিং কাউন্সিলে দাখিল করা মমতা ইনস্টিটিউটের কাগজপত্র থেকে জানতে পেরেছি, ২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর আমার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। বাবুল ও মমি আমার বাড়ি ভাড়া নিয়ে ভাড়া না দেওয়ার জন্য আমার ও কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে আমাকে তাঁরা চেয়ারম্যান করেন। আমি তাঁদের কাছে ২৪ লাখ টাকা বাড়ি ভাড়া পাব। ভাড়া না দিয়ে তাঁরা আমার বাড়িটি দখল করে রেখেছেন।’

এসপি রহিম আরও বলেন, ‘তাঁরা আমাকে নানাভাবে হয়রানি করেছেন। বাড়ি ভাড়া, বাড়ির দখল ও স্বাক্ষর জাল করার প্রতিকার পাওয়ার জন্যই আমি তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছি।’

তবে পলাতক থাকায় মনিরুজ্জামান বাবুল ও শবনম মোস্তারি মমির বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বোয়ালিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাবুল ও মমির প্রতারণার বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ইতিমধ্যে তারা গা-ঢাকা দিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

‘তুমি ঘুমাও কীভাবে’, সৌদি যুবরাজকে নিয়ে ট্রাম্পের বিস্ময়

বিদায় বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত