Ajker Patrika

তদন্ত প্রতিবেদনে প্রত্যক্ষদর্শী, সাক্ষী বলছেন ঘটনাস্থলে ছিলেনই না

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আপডেট : ২৫ জুলাই ২০২৩, ১৯: ৩১
তদন্ত প্রতিবেদনে প্রত্যক্ষদর্শী, সাক্ষী বলছেন ঘটনাস্থলে ছিলেনই না

রাজশাহীতে ভাঙচুর, চাঁদা দাবি ও লুটপাটের একটি মামলায় ১৬১ ধারায় সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছেন পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা। সেখানে সাক্ষীর উপস্থিত থাকার কথা উল্লেখ থাকলেও সাক্ষীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আজকের পত্রিকাকে জানান, যে সময়ের ঘটনা সে সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন। তদন্ত কর্মকর্তা কীভাবে এটি দিয়েছেন তা জানেন না তিনি।

মামলাটির তদন্তে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) রাজশাহীর উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন। মামলার আরও দুই সাক্ষীর সঙ্গে কথা বলে গোঁজামিল পাওয়া গেছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে তদন্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হয়। কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

ওই মামলার সাক্ষী রাজশাহী নগরীর দেবিশিংপাড়া মহল্লার বাসিন্দা হাসান আলী। মামলার তদন্তের সময় তদন্ত কর্মকর্তা ১৬১ ধারায় তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। তারপর লিপিবদ্ধকারী হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রের সঙ্গে সাক্ষীর জবানবন্দির একটি কপি আদালতে দাখিল করেছেন।

ওই কপিতে লেখা রয়েছে, হাসান আলী তাঁকে জানিয়েছেন যে তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন। ভাঙচুর করতে দেখেছেন। মামলার আসামি দুরুল হোদাকে বাদী আবদুল বারীর কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদাও চাইতে দেখেছেন।

তবে যোগাযোগ করা হলে হাসান আলী বলেন, ‘ভোর সাড়ে ৪টার সময় ঘটনা। তখন সবাই বাড়িতে থাকে, আমিও বাড়িতে ছিলাম। ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তদন্ত কর্মকর্তা এটা কীভাবে দিয়েছেন তা জানি না।’

আহসাদ হাবিব রনি নামের আরেক সাক্ষীর জবানবন্দি হিসেবে তদন্ত কর্মকর্তা লিখেছেন, এই সাক্ষী বাদী আবদুল বারীর কাছে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা চাইতে দেখেছেন।

তবে যোগাযোগ করা হলে আহসাদ হাবিব রনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনি চাঁদা দাবি করতে দেখেননি, শুনেছেন।

কত টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছিল সে প্রশ্নে হাসান বলেন, ‘আমি সেটা জানি না।’

এদিকে মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ভাড়াটিয়া মিজানুর রহমানের দোকানের ৫ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করেছেন আসামিরা। তবে মিজানুর তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেছেন, তিনি নিজেই তাঁর দোকান থেকে চাল বের করে নিয়ে যান। যোগাযোগ করা হলে মিজানুর বলেন, চাঁদা চাইতে তিনি দেখেননি। যা বলার আদালতে গিয়েই বলবেন।

দুরুল হোদার অভিযোগ, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন প্রভাবিত হয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন। দুরুল ২০২২ সালে নগরীর সপুরা আহম্মদনগর এলাকায় লাকি বেগম নামের এক নারীর কাছ থেকে প্রায় সোয়া পাঁচ কাঠা জমি কেনেন। এই জমি নিজের বলে দাবি করে আসছেন বারী। তবে লাকি বেগমের নানি সাপিনা বেগম ২০১৫ সালে যখন এ জমির মালিক ছিলেন, তখনই আদালতে প্রমাণিত হয়েছিল যে জালিয়াতি করে বারী এই জমির খাজনা-খারিজ করেছিলেন নিজের নামে।

পরে সাপিনা বেগম তাঁর নাতনি লাকিকে এ জমি দেন। তারপর লাকি বিক্রি করেন দুরুলের কাছে। দুরুল তাঁর জমিতে থাকা দোকানপাট ভেঙে ফেললে বারী মামলা করেন। যদিও এখন জমির খাজনা-খারিজ দুরুলের নামে। এই জমির কাগজপত্র জমা দিয়ে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) থেকে ভবন নির্মাণের ছাড়পত্র নিয়েছেন। একতলা বাড়ি করে পেয়েছেন বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ। বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ পেতেও জমা দিতে হয়েছিল জমির কাগজপত্র। ই-পরচা ওয়েবসাইটেও রয়েছে দুরুলের নাম।

নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, আবদুল বারী ২০০৬ সালে এই জমির একটি দলিল বের করেন। এই দলিলে দেখা যায়, আবদুল বারী এবং তাঁর স্ত্রী সেলিনা বারী নাজির আহমেদ নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে জমিটি কিনেছেন। নাজিরের বাবার নাম শেখ বসির আহমেদ। অথচ এই জমির আরএস খতিয়ানে দেখা গেছে, রেকর্ড অনুযায়ী মালিক সেখ হারুন ও তাঁর ভাই সেখ নাজির। দুজনের বাবার নাম সেখ মোহাম্মদ। সুতরাং, বারী ও তাঁর স্ত্রী যে নাজিরের কাছ থেকে জমি ক্রয় দেখাচ্ছেন আরএস খতিয়ানে তাঁর নামই নেই।

অথচ এ দলিল দিয়েই ২০০৭ সাল থেকে নিজের নামে জমির খাজনা দিতে শুরু করেছিলেন বারী ও তাঁর স্ত্রী। এ জন্য বারী বোয়ালিয়া ভূমি অফিসে সাকিনা বেগমের একটি প্রত্যয়নপত্র দেন। সাকিনার টিপসই দেওয়া এই প্রত্যয়নপত্রে লেখা, এই জমি নিয়ে সাকিনার কোনো দাবি নেই। এর প্রেক্ষিতে সার্ভেয়ার সায়েম আলী বারীর খাজনা নেওয়ার সুপারিশ করেন। ফলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) তখন বারী ও তাঁর স্ত্রীর খাজনা নেওয়ার অনুমতি দেন। 

 ২০১১ সালে সাকিনা বেগম খাজনা দিতে গেলে জানতে পারেন, এই জমির খাজনা নেওয়া হচ্ছে বারী ও তাঁর স্ত্রীর কাছ থেকে। এ নিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) আদালতে মামলা করেন। 

 ২০১৫ সালে মামলার রায়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আতাউল গণি উল্লেখ করেন, শেখ হারুন ও শেখ নাজিরের কাছ থেকে ১৯৭৫ সালে এই জমি কিনে ভোগদখল করছেন সাকিনা বেগম। সিআইডির মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, সাকিনার না-দাবির ব্যাপারে তাঁর যে প্রত্যয়নপত্র বারী দিয়েছেন সেই টিপসই সাকিনার নয়। 

তাই আদালত বারী ও তাঁর স্ত্রীর খাজনা বন্ধ করে সাকিনার নামেই খাজনা নেওয়ার নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি বারীর পক্ষে মিথ্যা প্রতিবেদন দেওয়ায় আদালত ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সার্ভেয়ারের চাকরি চলে যায়। ২০০৭ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আট বছর জালিয়াতির মাধ্যমে বারী ও তাঁর স্ত্রী জমির খাজনা দিলেও রায়ে সেটি অবৈধ প্রমাণিত হয়ে যায়। 

পরে লাকির কাছ থেকে জমি কিনে দুরুল বাড়ি করতে গেলে আবদুল বারী বাধা দেন। তার ওপর হামলাও হয় দুই দফা। এ নিয়ে বারী ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়। দুরুল জমিটা কেনার আগে থেকেই সামনের অংশে পাঁচটি দোকানঘর ছিল। ভবন নির্মাণের জন্য দুরুল চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি দোকানগুলো ভেঙে ফেলেন। আর এই কারণে বারী এবার দুরুলসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। এ মামলার তদন্তেই পক্ষপাতিত্ব করার অভিযোগ উঠেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাড়ি ফেরার পথে লালনশিল্পীকে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত

কুষ্টিয়া প্রতি‌নিধি
লালনশিল্পী রতন। ছবি: সংগৃহীত
লালনশিল্পী রতন। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় রতন (৪২) নামের এক লালনশিল্পীকে ছুরিকাঘাত করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সদর উপজেলার মিললাইন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত শিল্পী রতন কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের মৃত আফসার আলীর ছেলে। তিনি ‘শিল্পী সমাজ’ নামক কুষ্টিয়ার একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহসভাপতি।

পুলিশ ও আহত শিল্পীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার রাতে গানের অনুষ্ঠান শেষ করে রতন কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়া লালন মাজার এলাকা থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সদর উপজেলার মিললাইন এলাকায় পৌঁছালে চলন্ত অবস্থায় দুর্বৃত্তরা তাঁর পিঠে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলটি অন্ধকার থাকায় তিনি কাউকে চিনতে পারেননি। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, রাত ২টার দিকে রতনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।

লালন একাডেমির নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য ও ভবের হাট সংগীত একাডেমির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু বলেন, ‘রতন লালন একাডেমির একজন নিয়মিত শিল্পী। তার ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদসহ অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন বলেন, রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে কুমারখালী ও মডেল থানা যৌথভাবে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

দৌলতপুরে অস্ত্র ও মাদকসহ যুবদল নেতা গ্রেপ্তার

অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার যুবদল নেতা জামিল মালিথা। ছবি: আজকের পত্রিকা
অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেপ্তার যুবদল নেতা জামিল মালিথা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের আবেদের ঘাট এলাকা থেকে অস্ত্র ও মাদকসহ পদ্মার চরের শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিল মালিথাকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গ্রেপ্তার জামিল কুখ্যাত ‘চল্লিশ বাহিনী’র প্রধান রাখিবুল ইসলাম রাখির ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং ফিলিপনগর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যসচিব। এ সময় জামিল মালিথার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, একটি গুলি এবং ৪৮ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার জামিল মালিথা ফিলিপনগর গ্রামের মৃত জালাল মালিথার ছেলে।

জামিলের ফিলিপনগর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যসচিব পদে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক বেনজির আহমেদ বাচ্চু।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, জামিল একজন চিহ্নিত অস্ত্র ও মাদক কারবারি। ভারত থেকে অবৈধভাবে বিপুল সংখ্যক আধুনিক অস্ত্র, বিশেষ করে অটোমেটিক পিস্তল পাচারের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক জাকিরুল ইসলাম।

এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, ‘জামিলের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। রাতেই বিজিবি তাঁকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। আজ তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেরপুরে গণসংযোগে হামলার অভিযোগ জামায়াতের, অস্বীকার বিএনপির

শেরপুর প্রতিনিধি
হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে বিক্ষোভ করে শেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামী। ছবি: আজকের পত্রিকা
হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার রাতে বিক্ষোভ করে শেরপুর জেলা জামায়াতে ইসলামী। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুর-১ (সদর) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলামের গণসংযোগে হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের ডাকপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এতে জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতিসহ জামায়াতের অন্তত ২০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁদের জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে এই ঘটনার জেরে শুক্রবার রাতে শহরজুড়ে জামায়াত ও বিএনপি পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেছে।

জামায়াত নেতাদের অভিযোগ, শুক্রবার জুমার নামাজের পর শেরপুর-১ আসনের মনোনীত প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম ডাকপাড়া গ্রামে গণসংযোগে বের হলে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাতে বাধা দেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে বাগ্‌বিতণ্ডা হয় এবং পরে বিএনপির সমর্থকেরা জামায়াত নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে। এ সময় জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম স্বপনসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলে শুক্রবার রাতে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপি। ছবি: আজকের পত্রিকা
জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলে শুক্রবার রাতে প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপি। ছবি: আজকের পত্রিকা

জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীর গণসংযোগে অতর্কিত হামলা চালানো হয়েছে। ৫ আগস্টের বিপ্লবের পর এসব হামলার ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ইতিমধ্যে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে প্রশাসনের প্রতি আলটিমেটাম দিচ্ছি।’

জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হাফেজ রাশেদুল ইসলাম বলেন, বিএনপি যদি জনগণের পালস বুঝতে না পারে, তাহলে আগামী দিনে তারাও বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে হারিয়ে যেতে বাধ্য হবে।

অন্যদিকে জামায়াতের এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে শুক্রবার রাতে শেরপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘জামায়াতের লোকজন পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডাকপাড়া গ্রামে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতে গিয়েছিল। সেখানে কয়েকটি মসজিদে মিটিং-মিছিল করে তারা গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এলাকাবাসী এর তীব্র প্রতিবাদ করলে তারা এলাকা ছেড়ে চলে আসে।’

সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে তারা থানায় গিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। তারা মিথ্যা কথা বলছে এবং উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে। আমরা তাদের এই প্রোপাগান্ডা ও মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আদিতমারীতে অটোরিকশা উল্টে নিহত ২, আহত ১

লালমনিরহাট প্রতিনিধি 
খাদে পড়ে যাওয়া অটোরিকশা। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাদে পড়ে যাওয়া অটোরিকশা। ছবি: আজকের পত্রিকা

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় অটোরিকশা উল্টে খাদে পড়ে দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও একজন। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে উপজেলার মহিষখোচা বাজার আদিতমারী বাইপাস সড়কের আনছার খাঁর পুকুরপাড় এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া ব্রমত্তর গ্রামের মৃত তালেব্বর রহমানের ছেলে বকুল মিয়া (৬০) ও একই ইউনিয়নের কচুড়ুমা বারহাত কালী এলাকার মেছের আলীর জামাতা আতিকুল ইসলাম আতিক (৩৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মহিষখোচা বাজার থেকে কয়েকজন যাত্রী নিয়ে একটি অটোরিকশা আদিতমারী যাচ্ছিল। আনছার পুকুরপাড়ে ওই অটোরিকশায় ওঠেন আতিকুল ইসলাম আতিক। একটু এগিয়ে যাওয়ার পরই খাদে পড়ে উল্টে গিয়ে নিচের গর্তে পড়ে যায় অটোরিকশা। এতে ঘটনাস্থলে আতিকুল মারা যান। আহত হন বকুল মিয়াসহ একজন নারী।

স্থানীয় বাসিন্দারা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে প্রথমে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে আশঙ্কাজনক বকুল মিয়াকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। রংপুর যাওয়ার পথেই মারা যান বকুল মিয়া।

আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আকবর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত