Ajker Patrika

১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ায় উত্তপ্ত ক্যাম্পাস, একজনের আত্মহত্যার চেষ্টা

শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০: ০৬
১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ায় উত্তপ্ত ক্যাম্পাস, একজনের আত্মহত্যার চেষ্টা

শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কেটে দিয়েছেন এক শিক্ষক। এ ঘটনায় অপমানিত এক ছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আত্মহত্যার চেষ্টার খবর ছড়িয়ে পড়লে সোমবার রাত ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ওই শিক্ষকের অপসারণ দাবি করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলীসহ অন্য শিক্ষক ও কর্মচারীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আজ মঙ্গলবার সকালে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী।   

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী তানভীর ও জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত হওয়া পরীক্ষার সময়সূচি নিয়ে ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের সঙ্গে কয়েকজন শিক্ষার্থীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় ওই শিক্ষার্থীদের চুল কেটে নির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষার হলে যেতে বলেন ওই শিক্ষক। পরদিন পরীক্ষার হলে প্রবেশের সময় ১৪ জন ছাত্র চুল কেটে না আসায় তাদের মাথার সামনের অংশের চুল কেটে দেন তিনি। 

অপমান সহ্য করতে না পেরে এ দিনের পরীক্ষা শেষে ওই বিভাগের এক শিক্ষার্থী ছাত্রাবাসে গিয়ে তাঁর কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেন। এ সময় তিনি বেশ কিছু ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি তাঁর সহপাঠীরা টের পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাঁকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী বলেন, 'আমরা নাজমুলের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তাঁর উন্নত চিকিৎসা চলছে। আশা করি সে ভালো হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবে।'

শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মনোয়ার হোসেন সুজন বলেন, ওই শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এখন সে আইসিইউতে আছে ডাক্তার বলেছেন ৭২ ঘণ্টার পরে তাঁর অবস্থা বোঝা যাবে। 

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। 

এ দিকে ছাত্রদের বিক্ষোভের বিষয়টি জানতে পেরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ও ট্রেজারার আব্দুল লতিফ ক্যাম্পাসে এসে ছাত্রদের বিচার দেওয়ার আশ্বাস দেন এবং হলে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান। পরে শিক্ষার্থীরা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

এ দিকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের উত্তপ্ত পরিস্থিতি দেখে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে শাহজাদপুর মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস দ্রুত সরিয়ে তাঁদের নিজস্ব জায়গায় নেওয়ার আহ্বান জানান। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত