Ajker Patrika

ডাকাতি মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ ১৩ আসামি কারাগারে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
ডাকাতি মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারসহ ১৩ আসামি কারাগারে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ ১৩ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার সকালে লুটপাট ও ডাকাতির মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে জামিন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. নূরে আলম সিদ্দিকী আসাদ এই তথ্য জানিয়েছেন।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ন কবীর এই আদেশ দেন। একটি বিবাহ বিচ্ছেদকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের একটি কক্ষে বাবা ও ছেলেকে আটকে রেখে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানোর পর বাড়িতে লুটপাট করার অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়। 

মামলার প্রধান আসামি গোবরাতলা ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম টিপু। দুই নম্বর আসামি গোবরাতলা ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. নুরুল ইসলাম। অন্য আসামিরা হলেন গোবরাতলা ইউনিয়নের মুনসেফপুর গ্রামের মোহাম্মদ ইব্রাহিম আলী, মো. হবু আলী, শারিফ আলি, মো. ফারুক আলী, মোহাম্মদ ওসমান আলী, আলী আহসান, ইউনুস আলী, আহাদ আলী, মোসা. মোসলেমা, মোসা. রোকেয়া বেগম ও মিলি বেগম।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদী শাহ জামালের ছেলে জসিম উদ্দিনের সঙ্গে ২০২১ সালের ২৫ এপ্রিল পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের মুনসেফপুর গ্রামের মোসলেমা খাতুনের। পারিবারিক বনিবনা না হওয়ায় এক বছর পর ২০২২ সালের ৩১ মে স্ত্রীকে তালাক দেন জসিম। তালাক নিষ্পত্তি করতে ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম টিপু ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে সালিসের আয়োজন করেন। এ সময় বউ তালাক দেওয়া বাবদ জসিমকে ২ লাখ ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন ইউপি চেয়ারম্যান।

বাদীপক্ষের অভিযোগ, সালিসে অতিরিক্ত জরিমানা হওয়ায় দিতে অস্বীকৃতি জানালে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে আটকে রাখা হয় জসিম ও তাঁর বাবা শাহ জামালকে। ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে না চাইলে তাঁদের ছেড়ে দেন চেয়ারম্যান। পরে ২৫ জুলাই ভোর সাড়ে ৫টার দিকে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের নির্দেশে অন্য আসামিরা শাহ জামালের বাড়িতে হামলা চালায়।

মামলার বাদী শাহ জামাল বলেন, লুটপাটের সময় তাঁর ঘরের দরজায় তালা মেরে বাড়ির উঠানে থাকা দুটি গরু নিয়ে যায়। গরু দুটির মূল্য ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ছেলের বউ জেসমিন আখতারের গলা ও কানে থাকা দশ আনা স্বর্ণের মালা ও ছয় আনা ওজনের দুটি কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এমনকি দুটি স্মার্টফোন ও বিছানার নিচে থাকা ৪৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা। এ সময় বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নানারকম ভয়ভীতি দেখায় আসামিরা।

এ বিষয়ে বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. নূরে আলম সিদ্দিকী আসাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত ৭ আগস্ট আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন। আজ রোববার আদালতে হাজির হয়ে ১৩ আসামি জামিন আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ২০২২ সালের ৩১ জুলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আমলি আদালতে মামলাটি করেন সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরি মির্জাপুর গ্রামের মো. শাহ জামাল। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত