Ajker Patrika

‘এক বেলার হাসি’তে হাসি ফুটেছে তাদের মুখে

ইমাম হাসান মুক্তি, লালপুর (নাটোর)
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০: ০৫
‘এক বেলার হাসি’তে হাসি ফুটেছে তাদের মুখে

রান্নার কর্মযজ্ঞ শেষে খাবার পরিবেশনের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। পাশে অপেক্ষায় রয়েছে শিশু থেকে বৃদ্ধ বিভিন্ন বয়সের অসহায়, দরিদ্র ও ভাসমান মানুষ। এই চিত্র দেখা যায় গতকাল মঙ্গলবার নাটোরের লালপুর উপজেলার আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশনের পাশে কড়ইতলায় ‘এক বেলার হাসি’ নামে এক কার্যক্রমে। 
 
আজিমনগর রেলওয়ে স্টেশনে বিনা মূল্যে প্রতিদিন এক বেলার এই খাবার পরিবেশন করে লাভলী ফাউন্ডেশন নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। তারা এই কার্যক্রমকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে ‘এক বেলার হাসি’ নামে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন তিন শতাধিক মানুষকে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়, যা হাজারো মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। মঙ্গলবার এই কার্যক্রমের ৫৬তম দিনে কড়ইতলায় গিয়ে কথা হয় খেতে আসা মানুষদের সঙ্গে। 

বৃদ্ধা আম্বিয়া বেগম জানান, এই কার্যক্রম শুরুর পর থেকে প্রতিদিন নাতনিকে নিয়ে দুপুরের খাবার খেতে আসেন। ভাতের সঙ্গে থাকে মাছ, মাংস কিংবা ডিম। এমন খাবার খেতে পেরে তাঁরা খুশি। 

প্রতিদিন তিন শতাধিক মানুষকে দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। ছবি: আজকের পত্রিকাভাঙ্গারি ব্যবসায়ী জাবেদ মণ্ডল জানান, তিনি গ্রাম ঘুরে বিভিন্ন ভাঙা জিনিসপত্র কেনেন। প্রতিদিন দুপুরে না খেয়ে একবারে সন্ধ্যায় বাড়ি গিয়ে পেট পুরে ভাত খেতেন। লোকমুখে বিনা মূল্যে খাবারের কথা শুনে এখন দুপুর হলেই খাবার খেতে চলে আসেন। 

আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কল্যাণমূলক এই কাজে যুক্ত রয়েছেন একঝাঁক তরুণ স্বেচ্ছাসেবক। তাঁরা সম্পূর্ণ বিনা পারিশ্রমিকে এই প্রকল্পে কাজ করছেন। শুরুতে শতাধিক হতদরিদ্র মানুষের খাবারের আয়োজন করা হয়। এখন সেটা আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় ৩০০ জনে বাড়ানো হয়েছে। 

লাভলী ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা পথে অনেক ক্ষুধার্ত মানুষকে দেখি। ওরা এক বেলা খাবারের জন্য সবার কাছে হাত পাতে। তার পরই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিলভিয়া পারভীন লেনির উদ্যোগে মূলত ক্ষুধার্ত ভাসমান মানুষের জন্য এক বেলার খাবার বিতরণের আয়োজন হয়। বিনা মূল্যে খাবার পাওয়ার বিষয়টি চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের এলাকারও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার নিম্নবিত্ত মানুষ এখানে দুপুরের খাবার খেতে আসে। বিনা মূল্যে খাবার পেয়ে তারা খুশি। আমরাও চেষ্টা করি তাদের সাধ্যমতো আপ্যায়ন করতে। বিত্তশালীদের আরও সহযোগিতা পেলে এই কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া সহজ হবে।’ 

তিনি জানান, শুধু এই বেলার খাবার নয়, মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বিভিন্ন জায়গায় এমন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ ছাড়া প্রতি ঈদে ঈদসামগ্রী, শীতবস্ত্র বিতরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাসহ বিভিন্ন সমাজকল্যাণ মূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে সংগঠনটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত