Ajker Patrika

পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে স্কুলের ভেতরে রেখে তালা দিয়ে যান পিয়ন, পরে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ মে ২০২৩, ২২: ০২
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে স্কুলের ভেতরে রেখে তালা দিয়ে যান পিয়ন, পরে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার

বিদ্যালয়ে ঈদের ছুটির ঘোষণার দিন বাথরুমে আটকে পড়ে ১২ বছরের এক ছাত্র। বাইরে থেকে তাকে তালা দিয়ে চলে যান পিয়ন। দীর্ঘ ১০ দিন অবর্ণনীয় কষ্ট শেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে ওই শিশু। ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া ছুটির ঘণ্টা সিনেমার গল্প এটি। এই গল্পের ঘটনাই বাস্তবে ঘটল নেত্রকোনার এক বিদ্যালয়ে। পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বিদ্যালয়ের ভেতরে রেখেই তালা দিয়ে চলে গিয়েছিলেন পিয়ন।

ঘটনাটি ঘটে গতকাল বৃহস্পতিবার নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের সাতুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্কুল থেকে ওই ছাত্রীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

ওই ছাত্রীর নাম ঝর্ণা আক্তার (১১)। সে উপজেলার ধনপুর গ্রামের মজিবুর রহমানের মেয়ে ও সাতুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ঝর্ণা আক্তারের মা সাতুলা বেগম বলেন, ‘ঝর্ণার স্কুল প্রতিদিন ৪টায় ছুটি হয়। বাড়ি ফিরতে ২০-২৫ মিনিট সময় লাগে। কিন্তু গতকাল বিকেল ৫টা হয়ে গেলেও সে স্কুল থেকে ফেরেনি। তাকে খুঁজতে থাকি। সহপাঠীরাও ঝর্ণার সন্ধান দিতে পারেনি। বিকেল শেষে সন্ধ্যা গড়ায়। শুরু হয় ঝড়-তুফান। পড়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কল দিয়ে বিষয়টি জানাই।’

সাতুলা বেগম আরও বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক পিয়নকে ডেকে স্কুল খুলতে বলেন, ভেতরে ঝর্ণা রয়ে গেছে কি না খোঁজার জন্য। স্কুল খোলার পর দেখি ঝর্ণা দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে। তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসি।’

 ‘ঝর্ণার কাছ থেকে জানতে পারি স্কুল ছুটির পর সহপাঠীরা তার আগে দোতলা থেকে নেমে পড়ে। সে পেছনে রয়ে যায়। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় অজ্ঞান হয়ে পড়ে ঝর্ণা, বিষয়টি কেউ খেয়াল করেনি। স্কুল শেষে শিক্ষকেরা বাড়ি চলে যান। এদিকে পিয়নও স্কুলের প্রধান ফটক তালা দিয়ে চলে যান।’ বলেন ঝর্ণার মা সাতুলা বেগম।

এ বিষয়ে জানতে স্কুলের পিয়ন জয়নাল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজন ফোনে আমাকে বিষয়টি জানান। পরে পিয়নকে নিয়ে স্কুল খুলে ভেতরে  ঝর্ণাকে অচেতন অবস্থায় দেখি। এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়ায় কেউ তাকে খেয়াল করেনি। পিয়নও হয়তো মনে করেছে, সবাই চলে গেছে। তাই সে তালা লাগিয়ে চলে গেছে।’

এদিকে বিষয়টি জানতে আজ শুক্রবার বিকেলে মোহনগঞ্জের সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিপ্লব সরকারকে কল দেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘আমি ছুটিতে ছিলাম। এখন পথে আছি, কর্মস্থলে ফিরছি। তবে কেউ আমাকে এ বিষয়টি জানায়নি। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’

প্রাথমিক এই শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে স্কুল ছুটির পর শ্রণিকক্ষসহ সকল জায়গা ভালোভাবে দেখে পরে স্কুল তালা দেওয়ার বিষয়ে শিক্ষকদের বলে দেব। আগামী মাসিক সমন্বয় সভায় এ বিষয়ে সতর্ক হওয়ার জন্য শিক্ষকদের বলব। ঘটনাটি দুঃখজনক।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত