Ajker Patrika

মুন্সিরহাট খাদ্যগুদাম

সিন্ডিকেটে ধান ক্রয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা

মো. জাকিরুল ইসলাম, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) 
আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৭: ৫০
সিন্ডিকেটে ধান ক্রয় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার মুন্সিরহাট সরকারি খাদ্যগুদামে চলতি বোরো মৌসুমে কৃষকদের পরিবর্তে সিন্ডিকেট থেকে ধান কেনার অভিযোগ উঠেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন অনলাইনে নিবন্ধন করেও ধান বিক্রি করতে না পারা প্রান্তিক কৃষকেরা।

ভুক্তভোগী কৃষকদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট করে বহিরাগত ব্যবসায়ীদের কাছে ধান কিনেছে খাদ্য বিভাগ। এতে কৃষকেরা প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করে ধান গুদামে নিয়েও বিক্রি করতে না পেরে ফেরত এনেছেন। তাঁদের দাবি, গুদামে ধান না দিতে পারায় তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ বছর সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে মুন্সিরহাট খাদ্যগুদামের আওতায় ধোবাউড়া সদর, ঘোষগাঁও ও বাঘবেড় ইউনিয়নের ৬৯৬ কৃষক অনলাইনে নিবন্ধন করেন। গুদামে ধান কেনার বরাদ্দ পায় ৬১০ টন। ৩৬ টাকা কেজি দরে ধান নেওয়া ২৮ মে থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় ২৮ জুন।

অভিযোগ রয়েছে, মুন্সিরহাট এলএসডি (লোকাল সাইলো ডিপো) গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বাইরের ধান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে তাঁদের কাছ থেকে ধান কিনে নিজে মুনাফা লুটেছেন। অন্যদিকে তালিকাভুক্ত কৃষকেরা গুদামে একাধিকবার ধান বিক্রি করতে গেলে কেনা শেষ বলে জানিয়ে দেন।

বাঘবেড় ইউনিয়নের মান্দালিয়া এলাকার কৃষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমিসহ আমার পরিবারের পাঁচটি নাম তালিকায় রয়েছে। সরকারি গুদামে ধান বিক্রি শুরু হলে শর্ত পূরণ করে আমি ধান প্রস্তুত করে গুদামে যাওয়ার পর বলা হলো, কেনা শেষ; পরে আবার বরাদ্দ পেলে নেওয়া হবে। এদিকে দেখি রাতের আঁধারে গুদামে গাড়িভর্তি ধান যাচ্ছে অথচ আমাদের ধান নিচ্ছে না। পরে জানতে পারলাম, একটি প্রভাবশালী মহলের কাছ থেকে গুদামের কর্মকর্তারা ধান কিনছেন।’

মুন্সিরহাট এলাকার ওলি মাহমুদ বলেন, ‘আমরা ধান নিয়ে গেলে বলে, কেনা শেষ। অথচ প্রতিদিন রাতে ধান যায়, সেগুলো কি কিনে খাবে? আমরা তালিকাভুক্ত থাকা সত্ত্বেও ধান দিতে পারলাম না। অথচ ধান কেনা শেষ হয়ে গেল। তাহলে আমার বরাদ্দের ধান দিল কে? এই বিচার কে করবে?’

আরেক কৃষক শাহ আলম বলেন, ‘কয়েক দিন ধান নিয়ে আসলাম, এতে খরচও হলো। এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে বিচারের দাবি আশা করছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান সংগ্রহের অভিযোগ অস্বীকার করেন মুন্সিরহাট এলএসডি খাদ্যগুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘যাঁরা অনলাইনে আবেদন করেছেন, সবারই তালিকায় নাম আসায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। বরাদ্দের পরিমাণ কম ও কৃষক বেশি থাকায় যাঁরা আগে ধান নিয়ে আসছেন, তাঁদের কাছ থেকে ধান কেনা হয়েছে।’

যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন বলেন, ‘এ বছর নিবন্ধিত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে। যাঁরা আগে আসছেন, তাঁরা আগে ধান বিক্রি করতে পারবেন। মুন্সিরহাটের এ ঘটনা জানার পর খাদ্য কর্মকর্তাকে সরেজমিনে তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি ধান কেনায় কোনো অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও কেউ অনিয়ম করলে লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘অপারেশন সিঁদুরে’ তিন শত্রুর মোকাবিলা করেছে ভারত, অন্য দেশের নাম জানালেন সেনা কর্মকর্তা

যুবলীগ নেতাকে ধরতে নয়, বাসাটি ঘেরাওয়ের নেপথ্যে অন্য কারণ

‘একটা মার্ডার করেছি, আরও ১০০টা মার্ডার করব’, ভিডিও ভাইরাল

জুলাই আন্দোলনের প্রথম অংশ ‘অবশ্যই মেটিকুলাসলি ডিজাইনড’: মাহফুজ

মুরাদনগরে ধর্ষণ: ভাইয়ের সঙ্গে বিবাদের প্রতিশোধ নিতে ছড়ানো হয় ভিডিও, বলছে র‍্যাব

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত