Ajker Patrika

ঘর করেই দায়িত্ব শেষ খোঁজ রাখে না কেউ

 মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ২৩: ৫৪
ঘর করেই দায়িত্ব শেষ খোঁজ রাখে না কেউ

‘স্বামীর জীবন কাটছে মানুষের বাড়িতে কাজ করে। আমিও সারা জীবন কাটাইছি অন্যের বাড়ির ছনের ছাউনি ও পাটখড়ির বেড়ার ঘরে। স্বামী মুক্তিযুদ্ধ করছিলেন বলেই শেষ বয়সে একটা পাকা ঘরে আশ্রয় পাইছিলাম। কিন্তু সেইডাও ভেঙে যাচ্ছে।’

বীর নিবাসের ভাঙা ঘর দেখিয়ে কথাগুলো বলছিলেন নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের মান্দাউরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল তালুকদারের স্ত্রী নয়ন তারা।

মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মান্দাউরা গ্রামের মৃত সুরেন্দ্র তালুকদারের ছেলে মতিলাল। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। পৈতৃক কোনো সম্পত্তি না থাকায় কয়েক যুগ কাটিয়েছেন অন্যের বাড়িতে। তারই সহোদর বড় ভাই গীরেন্দ্র তালুকদারের আশ্রয় মিলেছে ছত্রমপুর গুচ্ছগ্রামে। দীর্ঘদিন আগে একমাত্র বোনও ভারত চলে গেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত অবদানের জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার বীর নিবাস বরাদ্দ পান মতিলাল। কিন্তু ঘর নির্মাণ করার বছর ঘুরতেই সামনের অংশ ভেঙে যায়। প্রত্যন্ত হাওরাঞ্চলে মতিলালের বীর নিবাসের তেমন কোনো খোঁজ রাখেননি সংশ্লিষ্টরা।

নেত্রকোনার মদনের মান্দাউরা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল তালুকদারকে বরাদ্দ দেওয়া বীর নিবাস। এটি নির্মাণের বছর না ঘুরতেই সামনের অংশ ভেঙে যায়। পরে সেটি আর সংস্কার করা হয়নিবীর নিবাসে লাগানো নামফলকের তথ্য অনুযায়ী কাজটি বাস্তবায়ন করে এলজিইডি। কোন অর্থবছরে ঘরটি বরাদ্দ বা নির্মাণ করা হয়েছে, নাম ফলকে অবশ্য সে তথ্য নেই। এ বিষয়ে মদন এলজিইডি অফিসে বেশ কয়েক দিন ঘুরেও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে মদন উপজেলায় এই বীর নিবাস প্রকল্পের বরাদ্দ হয় বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিলাল তালুকদার বলেন, ‘আমার বাবার কোনো জমি নেই। বড় ভাই থাকেন গুচ্ছগ্রামে। ১০ শতাংশ জমি কিনে ঘরের জন্য আবেদন করার পর ঘর পেয়েছি। তিন বছর আগে সরকার আমারে ঘর করে দিয়েছে। ঘরের দরজাগুলো ভালো করে লাগানো হয়নি। তাই টিন দিয়ে কোনো রকম আটকে রাখছি। ঘরের কাজ ভালো হয়নি। তাই নির্মাণ করার কিছুদিন পরেই সামনের অংশ ভেঙে গেছে।’

জানতে চাইলে মদন উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া পিয়েল বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। ভাঙা ঘরের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব।’

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘বীর নিবাসের ঘর ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ভেঙে যাওয়ার ঘরটির খোঁজ নিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত