Ajker Patrika

জামালপুরের ৩ উপজেলা কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুর, আত্মগোপনে আ.লীগের নেতারা

এম কে দোলন বিশ্বাস, ইসলামপুর (জামালপুর) 
আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০২৪, ১৪: ৫৯
Thumbnail image

জামালপুরের ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ ও বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগসহ ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। মূলত ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরপরই পৌর শহরের দলের প্রধান কার্যালয়গুলোতে অগ্নিসংযোগসহ ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধরা। 

পুলিশ প্রশাসন নিষ্ক্রিয় থাকায় জনরোষ থেকে বাঁচতে আত্মগোপনে চলে গেছেন দলটির পদধারী নেতারা। পাশাপাশি তাঁদের কাছের অনুসারীরাও মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। এ অবস্থায় অসহায় হয়ে পড়েছেন কর্মীরা। 

গত রোববার ইসলামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের নেতৃত্বে বইঠা মিছিলের মাধ্যমে উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মহড়া দিলেও এক দিন পরই সবকিছু বদলে যায়। সোমবার ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার খবর সংবাদমাধ্যমে আসার পরপরই আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। বিকেল পর্যন্ত নেতাদের মোবাইল ফোন খোলা থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে বন্ধ পাওয়া যায় অনেকের ফোন। আজ বুধবার অন্তত ৩০ জন নেতার মোবাইল ফোনে কল দিয়েও বেশির ভাগের ফোন সচল পাওয়া যায়নি। 

সরেজমিনে দেখা যায়, ইসলামপুর পৌর শহরের থানা মোড়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের দোতলা কার্যালয়টিতে ভাঙচুর করা হয়েছে। অগ্নিসংযোগ করায় ভবনটি বিভিন্ন স্থানে পুড়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। বকশীগঞ্জ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ে ভাঙচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধরা। পৌর শহরের মালিবাগ এলাকায় বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। আসবাবপত্র তছনছ করা হয়। পরে বিক্ষুব্ধরা কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ ছাড়া দেওয়ানগঞ্জ পৌর শহরের পোস্ট অফিস রোডে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়টি ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধরা। 

ইসলামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নুরে আজাদ ইমরান বলেন, ‘আপাতত আত্মগোপনে আছি। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের ঘোষণার পরেই দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’ 

ইসলামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকাবকশীগঞ্জ উপজেলার নীলাখিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম খোকা বলেন, ‘ভাঙচুরের পর দলীয় কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে ছাত্র-জনতা। আমাদের অনেক নেতা-কর্মী আত্মগোপনে রয়েছেন। এলাকায় থমথমে অবস্থা।’ 

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মুন্নি আক্তার বলেন, ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবর টেলিভিশনে শোনার পরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। কার্যালয়ে টানানো বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাসহ দলীয় নেতাদের ছবি পুড়িয়ে ফেলে। আসবাবপত্রও লুট করে নিয়ে যায় বিক্ষুব্ধরা। তবে এ সময় কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের দেখা যায়নি।’ 

ইসলামপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিত দাস বলেন, ‘আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের কিংবা আগুন ধরিয়ে দেওয়ার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত