Ajker Patrika

ঢাকার যুবককে মনিরামপুরে অপহরণ, ৯৯৯ নম্বরে কলের পর উদ্ধার

আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০: ৩৮
ঢাকার যুবককে মনিরামপুরে অপহরণ, ৯৯৯ নম্বরে কলের পর উদ্ধার

যশোরের মনিরামপুরে ঢাকার এক যুবককে অপহরণ করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরে এ ঘটনায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে তথ্য পেয়ে গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ অপহরণের শিকার ওই যুবককে উদ্ধার করেছে। 

আজ বুধবার দুপুরে ভুক্তভোগী ওই যুবক বাদী হয়ে মনিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যানের সহকারী আশিকুর রহমান আশিকসহ অজ্ঞাত ২-৩ জনের নামে থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ অভিযুক্ত আশিকুর রহমান আশিককে গ্রেপ্তার করেছে। 

ভুক্তভোগী যুবকের নাম—মোহাম্মদ সাজিদ (৪০)। তিনি ঢাকার কেরানীগঞ্জের কাজী মাহমুদুল হাসানের ছেলে। 

গ্রেপ্তার আশিকের বাড়ি উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নে। কয়েক দিন ধরে তিনি মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানমের বাড়ির পাশে ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। 

ভুক্তভোগী সাজিদের অফিসের দায়িত্বশীল কাজল বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনশক্তি সরবরাহ করা আমার কাজ। মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ে আমার ১১ জন লোক নিয়োগ দেওয়া আছে। সাজিদ আমার অফিসের কর্মচারী।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘মনিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগপ্রাপ্ত ১১ জনের বেতন সংক্রান্ত কাজে সাজিদ সোমবার বিকেলে মনিরামপুর হাসপাতালে যান। সেখান থেকে দুজন ব্যক্তি একটি নম্বর থেকে সাজিদকে কল করে মনিরামপুর দোলখোলা মন্দিরের পাশে নিয়ে যান। এরপর তাঁরা একটি মোটরসাইকেলে করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সাজিদকে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে সাজিদের নম্বরে আমার সঙ্গে কথা বলে আশিক। তখন সে নিজেকে জুবায়ের পরিচয় দিয়ে আমার কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না পেয়ে রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমের বাড়ির পাশে সাজিদকে একটি ঘরে আটকে রাখে আশিকসহ আরেকজন।’ 

কাজল বিশ্বাস বলেন, ‘পরে রাত ৩টার দিকে সাজিদকে উদ্ধারে ৯৯৯ নম্বরে কল করে সহায়তা চাইলে মনিরামপুর থানা-পুলিশ নাজমা খানমের বাড়ির পাশ থেকে সাজিদকে উদ্ধার করে। এ সময় আশিককে আটক করে পুলিশ। পরে নাজমা খানম এসে আশিককে হেফাজতে নেন। আজ দুপুরে মামলা হওয়ার পর পুলিশ আশিককে গ্রেপ্তার করেছে।’ 

এ দিকে গ্রেপ্তার আশিকুর রহমান আশিক অভিযোগ করে বলেন, ‘সাজিদ যাদের নিয়ন্ত্রণে কাজ করে এদের মাধ্যমে ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমার একজনের কাজ হয়েছে। পরে আমার আরেক লোককে চাকরি দেওয়ার কথা ছিল। নিয়োগ সংক্রান্ত টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে আমি সাজিদকে ধরেছি।’

এ অভিযোগের বিষয়ে কাজল বিশ্বাস বলেন, ‘আশিককে আমি চিনি না। লোক নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে তাঁর সঙ্গে আমার কখনো কথা হয়নি।’ 

এ বিষয়ে মনিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আশিককে আমি সহযোগী হিসেবে বেতন দিয়ে রেখেছি। কয়েক দিন ধরে সে আমার বাড়ির পাশে ঘর ভাড়া করে থাকে। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ ওদের দুজনকে ধরে আমার কাছে নিয়ে আসে। আমি সবকিছু শুনে তখন আশিককে হেফাজতে রেখে দিই। পরে পুলিশ আশিককে গ্রেপ্তার করেছে।’ 

নাজমা খানম আরও বলেন, ‘কাউকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবির বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’ 

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে আমরা যুবককে উদ্ধার করেছি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মামলা দায়ের করেছেন। মামলার প্রধান আসামি আশিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত