Ajker Patrika

সংসারের দায়িত্ব যখন স্কুলছাত্র নিলয়ের কাঁধে

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ মে ২০২২, ১০: ৪৮
সংসারের দায়িত্ব যখন স্কুলছাত্র নিলয়ের কাঁধে

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের অসহায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী অষ্টম শ্রেণির ছাত্র নিলয় শীল। যে বয়সে নিলয়ের স্কুল থেকে ফিরে বন্ধুদের সঙ্গে খেলায় মেতে থাকার কথা। সেই বয়সে বই-খাতা রেখে খেয়ে-না খেয়ে তাকে ছুটে যেতে হয় সেলুনে। বেলা ৩টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত করতে হয় সেলুনের কাজ। অসুস্থ মা ও বোনের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে নিলয়। পাশাপাশি চালিয়ে যেতে হচ্ছে নিজের লেখাপড়ার খরচও।

স্কুলছাত্র নিলয়ের বয়স এখন ১৪ বছর। কোমল হাতে চালাতে হয় ক্ষুর-কাঁচির কাজ। তার স্বল্প আয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটে অসহায় অরুণা রানীর পরিবার। 

জানা যায়, নিলয়ের মায়ের নাম অরুণা রানী শীল। বাবা নিরঞ্জন শীল প্রয়াত হয়েছেন ১১ বছর আগে। সেই থেকে ভাইদের সহযোগিতা এবং অন্যের বাড়িতে কাজ করে ছেলেমেয়েকে নিয়ে খেয়ে-না খেয়ে ছোট একটি টিনের ঘরে মানবেতর জীবন যাপন করছেন অরুণা। 

নিলয় শীল স্থানীয় বীরেন শিকদার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। মেয়ে নীলিমা রানী শীল কালীপদ রায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

অরুণা রানী শীল বলেন, ‘নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন বিছানায় ভুগে মারা যান নিলয়ের বাবা। সেই থেকে নিলয়ের কাকা পলাশের সহযোগিতা এবং আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করে ছেলেমেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে বেঁচে আছি। কাকারা আর কত দেখবেন। তাঁদেরও তো সংসার আছে। এখন আমিও অসুস্থ, প্রায় ছয় মাস হলো পা ভেঙে গেছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। তাই বাধ্য হয়ে ছেলেটাকে কাজে দিয়েছি। এসব কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন অসহায় অরুণা রানী শীল। 

আমরা দুই শতক জমিতে ছোট একটি টিনের ঘরে বসবাস করি। সরকারিভাবে একটু সহযোগিতা পেলে কিছুটা উপকৃত হতাম। কত মানুষ সরকারি ঘর পেল, কিন্তু আমি পেলাম না। সরকার একটা ঘর দিলি খেতে না পারলেও ছেলেমেয়েকে নিয়ে রাতে একটু শান্তিতে ঘুমাতে পারতাম।’ 

স্কুলছাত্র নিলয় জানায়, সেলুনের কাজ করে দিনে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আয় হয়। তা দিয়েই লেখাপড়া আর পরিবারের খরচ চালাতে হয়। সব মিলিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন যাপন করতে হয়। 

বীরেন শিকদার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমান মিলন বলেন, ‘নিলয় লেখাপড়ায় ভালো। সে জন্য তাকে উপবৃত্তি ও অন্যান্য বৃত্তিসহ সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়।’

মহম্মদপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল আক্তার কাফুর উজ্জ্বল বলেন, ‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখে তাকে সহযোগিতা করব।’

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও রামানন্দ পাল বলেন, ‘ভূমিহীন হতদরিদ্র মানুষদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরগুলো দেওয়া হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে ওই পরিবারকে সহযোগিতার চেষ্টা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

দুই ঘণ্টা আগে একই বিমানে ভ্রমণের দাবি এক ব্যক্তির, জানালেন ভয়াবহ তথ্য

ইরানের বিপ্লবী গার্ডের নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা

সাতক্ষীরায় পুলিশ পরিচয়ে ডাকাতি, সেনা জালে ৩ সমন্বয়ক

‘উড়োজাহাজটি আছড়ে পড়ার সময় আমার ছেলে হোস্টেলের দোতলা থেকে ঝাঁপ দেয়’

১০ মিনিটের দেরি বাঁচিয়ে দিল ভূমিকে, অল্পের জন্য ধরতে পারেননি বিধ্বস্ত বিমানটি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত