Ajker Patrika

কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় শুকিয়ে যাচ্ছে পাটখেত

আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২২, ১৪: ১৯
কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় শুকিয়ে যাচ্ছে পাটখেত

যশোরের মনিরামপুরে চলতি বছর পাটের বাম্পার ফলন হলেও কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হওয়ায় খেতেই শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে গাছ। একাধিকবার সেচ দিয়েও খেত বাঁচাতে পারছেন না চাষিরা। আষাঢ়-শ্রাবণে বর্ষার পুরো মৌসুম হলেও এ বছর এখনো কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা মেলেনি। মাঠঘাটসহ চারদিক শুকিয়ে গেছে। ফলে খরায় পাটগাছের পাতা শুকিয়ে কুঁচকে যাচ্ছে। 

উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ করা হয়েছে, যা গত বছর ছিল ৫ হাজার ২০০ হেক্টর। দাম বেশি পেয়ে গত দুই বছরে পাট চাষে ঝুঁকেছেন এই অঞ্চলের কৃষকেরা। এ বছর উপজেলার ঝাঁপা, পৌর এলাকা, খেদাপাড়া, শ্যামকুড়, চালুয়াহাটি ও মশ্মিমনগর ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে। পাট গবেষণায় খরাসহিষ্ণু রবি-১ ও ইন্ডিয়ান জাতের পাটের চাষ বেশি করা হয়েছে। তবে এবারের খরায় পাটখেত বাঁচাতে পারছেন না চাষিরা। 

গতকাল শনিবার বিকেলে উপজেলার কদমবাড়িয়া, বাকোশপোল, দেবিদাসপুর ও হাকোবা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পাটগাছগুলো শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। এরই মধ্যে যেসব জমিতে বেলেমাটির পরিমাণ বেশি, সেসব খেতের পাটগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তায় আছেন চাষিরা। শুধু তাই নয়, আর কদিন পরে পাট কাটা শুরু হবে। ভরা মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় খালবিল, ডোবা-নালায় পানি জমেনি। ফলে পাট কেটে জাগ দেওয়া নিয়েও চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা। কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওনা নিয়ে শঙ্কার মধ্যে দিন কাটছে তাঁদের। 

কৃষকেরা জানান, বেশ কয়েক দিন ধরে থেমে থেমে আকাশে মেঘ জমছে। এরপর কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি পড়ে মেঘ সরে যাচ্ছে। তা ছাড়া এখন চৈত্র মাসের মতো রোদ ও গরম পড়ছে। বৃষ্টি না হওয়ায় একদিকে যেমন মাঠে পাটগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা না মেলায় আমন চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। আমনের বীজতলা তৈরি হলেও বৃষ্টির অভাবে চারা খেতে রোপণ করা যাচ্ছে না। 

কদমবাড়িয়া গ্রামের চাষি ওমর আলী বলেন, ‘আমি ১০ কাঠা জমিতে পাট চাষ করেছি। বৃষ্টির অভাবে খেতের অর্ধেক অংশে পাটগাছ শুকিয়ে গেছে। কয়েকবার সেচ দিয়েও কাজ হচ্ছে না।’ 

মামুদকাটি গ্রামের চাষি আবু হানিফ বলেন, ‘আমি তিন বিঘায় পাট চাষ করেছি। ফলন বেশ ভালো হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে ২৫ কাঠা জমির পাটগাছ শুকিয়ে নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থায় পাট কেটে ফেলব বলে ভাবছি। কিন্তু খালবিল শুকনো থাকায় সেটাও সম্ভব হচ্ছে না।’

মনিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, দাম ভালো হওয়ায় এবার উপজেলায় পাটের চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। চাষিরা দাম বেশি পাওয়ায় পাট চাষে ঝুঁকছেন। তা ছাড়া অনেকে তিলের চাষ বাদ দিয়ে পাটের আবাদ করেছেন। 

পাটগাছ মরে যাওয়ার বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তা বলেন, শুধু খরা না, নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পাটগাছ মারে যেতে পারে। তবে আক্রান্তের হার খুব বেশি না হওয়ায় এসংক্রান্ত কোনো তথ্য আমাদের দপ্তরে নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত