Ajker Patrika

তিন দশক পর খুলনায় নাছিরপুর খাল উদ্ধার, উচ্ছ্বাস এলাকাবাসীর

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি 
তিন দশক পর আজ খুলনার পাইকগাছায় নাছিরপুর খালটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। মাছ ধরার আনন্দে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা
তিন দশক পর আজ খুলনার পাইকগাছায় নাছিরপুর খালটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। মাছ ধরার আনন্দে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা

তিন দশক পর খুলনার পাইকগাছায় আলোচিত নাছিরপুর খালটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার (২ জুলাই) তালতলা থেকে হরিঢালী পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে খালটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ধার ও উন্মুক্ত করে উপজেলা প্রশাসন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইফতেখারুল ইসলাম শামীম, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক, কৃষি কর্মকর্তা একরামুল হোসেন, ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কৃষ্ণপদ দাসসহ সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা। তিন দশক পরে খালের ওপর পূর্ণ অধিকার ফিরে পেয়ে মাছ ধরার আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন এলাকাবাসী।

অভিযানে খালের বিভিন্ন স্থানে থাকা সব ধরনের অবৈধ প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়। প্রায় ২০৫ বিঘা জমির ওপর টানিয়ে দেওয়া হয় ‘সরকারি সম্পত্তি’ লেখা সাইনবোর্ড।

এলাকাবাসী জানান, খালটি ঘিরে আশপাশের ২০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের জীবিকা ও পানির উৎস নির্ভর করত। দীর্ঘ তিন দশক খালটি অবরুদ্ধ থাকায় পানির সংকট, ঘের ব্যবসায় ক্ষতি ও কৃষিকাজে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। খাল উন্মুক্ত হওয়ার পর হাজারো নারী-পুরুষ উৎসবমুখর পরিবেশে মাছ ধরতে নামেন। আনন্দে অনেকেই মিষ্টি বিতরণ করেন।

তালতলা, চিনেমলা, গোয়ালবাথান, প্রতাপকাঠি, খোলা, কাজীমুছা, রেজাকপুর, কাশিমনগর, কানাইডাঙ্গা, কপিলমুনি, হরিঢালী, সলুয়া, শ্রীরামপুর, হাউলি, নাছিরপুর, রামনগর ও মাহমুদকাঠির বাসিন্দাদের কাছে দিনটি আনন্দ-উল্লাস ও প্রত্যাশা পূরণের দিন বলে জানান জনসাধারণ।

তিন দশক পর আজ খুলনার পাইকগাছায় নাছিরপুর খালটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। মাছ ধরার আনন্দে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা
তিন দশক পর আজ খুলনার পাইকগাছায় নাছিরপুর খালটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। মাছ ধরার আনন্দে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা

খালটি উদ্ধারে নিরলস ভূমিকা রাখেন পাইকগাছা-কয়রার সাংবাদিক ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীন। প্রশাসন জানায়, ৩০ জুন খুলনা জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে ভূমি মন্ত্রণালয়ের জলমহাল ইজারা কমিটির সভায় খালটি উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ও দখলদার চক্র খালটির দখল নিয়ে রেখেছিল। স্থানীয় শাহাদাত হোসেন ডাবলুর নেতৃত্বে খালে বাঁশের পাটা ও জালের বেড়া দিয়ে পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কৃষি ও মৎস্য খাতের মানুষের জন্য এটি ছিল মারাত্মক বিপর্যয়। প্রতিবাদ করলে জেলে ও কৃষকদের মারধর করা হতো। নানা সময়ে দখল-পাল্টাদখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।

সাধারণ মানুষ নানা সময় মানববন্ধন, সমাবেশ ও সংবাদ সম্মেলন করেও সমাধান পাননি। অবশেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের উদ্যোগে খালটি উদ্ধারে কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে এলাকাবাসী তাঁকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেন এবং মিষ্টি বিতরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত