Ajker Patrika

বাগেরহাটে ৭৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলা বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন

বাগেরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ অক্টোবর ২০২২, ১৭: ১৯
বাগেরহাটে ৭৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলা বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় ৭৯ বছরের পুরোনো মেলা বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বলভাদ্রপুর গ্রামবাসী। আজ শনিবার দুপুরে বলভাদ্রপুর সর্বজনীন পূজামন্দিরে দুর্গাপূজা কমিটি এই মানববন্ধনের আয়োজন করে। পূজামন্দিরের সামনে বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কে ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে সহস্রাধিক লোক অংশ নেন। 

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বলভাদ্রপুর সর্বজনীন পূজামন্দিরে দুর্গাপূজা উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক কমলেশ দাস, পূজামন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুধাংশু কুমার দাস খোকন, স্থানীয় অনুপকুন্ডু, সাথী দাস, বিথিকা দাস, রিতা রানী দাস, মৌ দাস প্রমুখ। 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৯৪৩ সালে বলভাদ্রপুর সর্বজনীন পূজামন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে এই মন্দিরে দুর্গাপূজার সঙ্গে মেলা হয়ে থাকে। করোনার সময়েও এখানে মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারও পূজার সঙ্গে মেলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার রাতে মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম মন্দিরে এসে মেলা না করার নির্দেশ দেন। মন্দির কমিটি ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মেলা চালুর অনুমতির জন্য অনুনয়-বিনয় করা হলেও ইউএনওর মন গলেনি। মেলা বন্ধ হওয়ায় এলাকার বৃদ্ধ থেকে বাচ্চা সবাই ক্ষুব্ধ। ৭৯ বছরের এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে এবং মেলা চালুর অনুমতি দেওয়ার আবেদন করেন তাঁরা। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা সুধাংশ কুমার দাস খোকন বলেন, ‘বাগেরহাট শহরে মাসব্যাপী মেলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে মেলা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা শুধু আমাদের মেলা নিয়ে। যেকোনো মূল্যে এখানে মেলা করার অনুমতি দিতে হবে। না হলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যাব।’ 

দুর্গাপূজা উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক কমলেশ দাস বলেন, ‘অজানা কারণে মাত্র এক দিন আগে মেলা বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা খুবই হতাশ। মেলায় কিছু খাবার ও কসমেটিকসের দোকান থাকে। অন্য কিছু তো থাকে না, তাহলে কেন মেলা বন্ধ করে দেওয়া হলো।’ 

এদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা যায়, মেলা উপলক্ষে আগত ব্যবসায়ী ও জুয়ার আসর থেকে বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রিপন কুমার দাস মোটা অঙ্কের টাকা গ্রহণ করেছেন। এই টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মেলার জায়গার মালিক সোমনাথ দের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে এই মেলা বন্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া চেয়ারম্যানের একচ্ছত্র আধিপত্যের কারণে সোমনাথ দে ও চেয়ারম্যানের লোকজনের মধ্যে অন্তর্কোন্দল চলছে এলাকায়। 

বলভাদ্রপুর গ্রামের ৭৯ বছরের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে মানববন্ধন করছেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকাএ বিষয়ে জানতে চাইলে বনগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান রিপন কুমার দাস বলেন, ‘একটি পক্ষ জুয়ার কোট বসাতে চেয়েছিল। স্থানীয় চেয়ারম্যান হিসেবে জুয়ার কোট বসাতে না দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মেলার টাকা মন্দির কমিটি নিয়েছে, আমি মেলার কোনো টাকা নিইনি।’ 

জমির মালিক সোমনাথ দে বলেন, ‘মেলা বন্ধের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। অনুমতি না থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জুয়ার কোট ও আর্থিক বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই।’ 

ইউএনও মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে অনুমতি ছাড়া মেলা আয়োজনসহ বেশ কিছু অসংগতি পাওয়া যায়। যার কারণে মেলা করতে নিষেধ করা হয়েছে। পূজা ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান যথারীতি চলবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল পুনর্বিন্যাস আনছে ভারত, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলে

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে কক্সবাজার ভ্রমণ: ৫ নেতাকে শোকজ করল এনসিপি

‘বাবার অসুস্থতায় পরামর্শ নিতে’ চিকিৎসকের বাসায় নারী, দুজনকে পুলিশে দিল স্থানীয়রা

১৪৬ যাত্রী নিয়ে ব্যাংককের পথে এক ঘণ্টা উড়ে মিয়ানমার থেকে ফিরে এল বিমানের সেই ফ্লাইট

৬ বছর পর চীন সফরে যাচ্ছেন মোদি, আসবেন পুতিনও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত