Ajker Patrika

গাংনীতে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী বামন্দী পশুহাট

রাকিবুল ইসলাম, গাংনী (মেহেরপুর) 
আপডেট : ২৩ মে ২০২৫, ২১: ৩১
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী পশুহাট থেকে গত শুক্রবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বামন্দী পশুহাট থেকে গত শুক্রবার তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঈদুল আজহা সামনে রেখে জমে উঠেছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বামন্দী পশুহাট। প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো এই হাটে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসছেন ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা। কেউ গরুর দড়ি ধরে অপেক্ষায় থাকছেন ক্রেতার জন্য, কেউ খুঁজছেন নিজের পছন্দের কোরবানির পশু। জেলার চাহিদা মিটিয়ে এখানকার পশু চলে যাচ্ছে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়।

খামারি ও বাড়িতে পশু পালনকারীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ পরিবারের প্রয়োজনে কয়েকটি গরু লালন-পালন করছেন, আবার কেউ বাণিজ্যিকভাবে খামার করছেন। পারিবারিকভাবেই গরু, ছাগল, ভেড়া এমনকি মহিষও পালন করছেন অনেকে। সারা বছরের যত্ন আর ভালোবাসায় গরু বড় করে এখন বিক্রির সময় এসেছে। অনেকের জন্য কোরবানির গরু বিক্রি আয়ের প্রধান উৎস।

বানিয়াপুকুর গ্রামের খামারি শাজাহান আলী বলেন, শিক্ষিত বেকার যুবকেরা খামারে এগিয়ে এলে বেকারত্ব যেমন দূর হবে, তেমনি তাঁরা স্বাবলম্বী হতে পারবেন। তাঁর খামারে প্রাকৃতিক খাদ্য খাইয়ে গরু মোটাতাজা করা হয়। কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। ইতিমধ্যে কিছু গরু বিক্রি হয়েছে, বাকি গরু ঈদের আগেই বিক্রি হয়ে যাবে বলে আশা করেন তিনি।

বালিয়াঘাট গ্রামের মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার যদি খামারিদের বিনা সুদে ঋণ দিত, তাহলে আরও অনেক বেকার যুবক এই পেশায় আগ্রহী হতো। তিনি বলেন, পরিবার মিলে খামারের গরুগুলোর যত্ন নিচ্ছেন এবং ন্যায্যমূল্যে বিক্রির আশা করছেন।

খামারি আবুল বাশার জানান, পারিবারিকভাবে গরু পালন করে কোরবানির জন্য বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছেন। নারীরাও এতে সহযোগিতা করছেন। তবে গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়া এবং প্রচণ্ড গরমে পশুপালনে কষ্ট হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বামন্দী হাটে গরু কিনতে আসা আবু জাফর বলেন, দীর্ঘদিন দেশের বাইরে ছিলেন, এবার ছুটিতে এসে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করবেন বলে গরু কিনতে হাটে এসেছেন। তবে পশুর দাম বেশি মনে হলেও প্রয়োজন মেটাতে কিনতে হবে।

ছাগল ব্যবসায়ী ইয়াসিন আলী জানান, এবারের হাটে বড় ছাগলের চাহিদা বেশি। বিভিন্ন গ্রাম থেকে ছাগল কিনে এনে বিক্রি করছেন তিনি। অন্যদিকে গরু ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন, এবারের বাজারে গরুর দাম ভালো, সরবরাহও পর্যাপ্ত এবং চাহিদাও রয়েছে প্রচুর।

বামন্দী পশুহাটের ইজারাদার ও সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল জানান, হাটে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, যাতে কেউ প্রতারণার শিকার না হন। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও পর্যবেক্ষণ চলছে।

গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, উপজেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ৮৩৮টি পশু। এর মধ্যে গরু ৪১ হাজার ৫৭৮টি, ছাগল ৯৬ হাজার ৮৪৫টি, মহিষ ৩৮৫টি ও ভেড়া ২ হাজার ৩০টি। অথচ চাহিদা প্রায় ৪২ হাজার পশুর, ফলে জোগান চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি।

গাংনী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, উপজেলায় পশুর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। এখানকার পশু জেলার বাইরে অন্যান্য জেলার চাহিদাও পূরণ করবে। বামন্দী হাটে পশু অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য মেডিকেল টিমও রয়েছে।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, ঈদ সামনে রেখে বামন্দী পশুহাটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, জাল নোট শনাক্তকারী মেশিনসহ সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাড়ি থেকে ভিজিএফের চাল উদ্ধার দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটি ভিন্ন ঘটনার

দেশ টিভির কার্যালয়ে ১২০০ বস্তা চাল পাঠানো প্রয়োজন: উপদেষ্টা আসিফ

অপমানিত সহকর্মীর ছাদ থেকে লাফ, শ্রমিক বিক্ষোভে রণক্ষেত্র শ্রীপুর, আহত শতাধিক

সরকারি কর্মচারীদের ১০–১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি

জাদুঘরে রাখা হলো একটি কনডম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত