Ajker Patrika

বিজ্ঞানের ছাত্রের মানবিকের প্রবেশপত্র, পরীক্ষার ব্যবস্থা করলেন ইউএনও

কুমারখালী (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
বিজ্ঞানের ছাত্রের মানবিকের প্রবেশপত্র, পরীক্ষার ব্যবস্থা করলেন ইউএনও

বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শিপন আলী। কিন্তু প্রবেশপত্রে লেখা মানবিক বিভাগ। এই প্রবেশপত্র নিয়ে এরই মধ্যে পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছে। কিন্তু এতদিন এই বিষয়টি কারও নজরে আসেনি। পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষার আগের রাতে (গতকাল শুক্রবার) নজরে পড়ে ওই পরীক্ষার্থীর। এতে চরম উৎকণ্ঠায় মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। 

এরপর বিষয়টি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানালে শিক্ষকেরা মানবিক বিষয়ে পরীক্ষার জন্য পরামর্শ দেন। এতে আরও ভেঙে পড়ে ওই শিক্ষার্থী। রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) ফোন নম্বরে কল দেয়। শিক্ষার্থীর নিরুপায় অবস্থা বুঝতে পেরে তাকে আশ্বস্ত করেন ইউএনও। ইউএনওর উদ্যোগেই আজ শনিবার পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা সম্পন্ন করে ওই পরীক্ষার্থী। 

পরীক্ষার্থী মো. শিপন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জেএন মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। সে পৌরসভার মো. শাহিন মণ্ডলের ছেলে। সে কুমারখালী সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। 

আজ শনিবার বিকেলে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. শিপন বলে, ‘পাঁচটি পরীক্ষা হয়ে গেলেও বুঝতে পারিনি। স্যারেরাও টের পাননি। গত শুক্রবার রাতে টের পেয়েই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকদের জানাই। শিক্ষকেরা মানবিক বিভাগেই পরীক্ষা দেওয়ার কথা স্পষ্ট জানিয়ে দেন। পরে দুশ্চিন্তায় দিশেহারা হয়ে ইউএনও স্যারকে কল দিয়েছিলাম। স্যার আমার পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমি খুব খুশি। কিন্তু সংশোধিত প্রবেশপত্র এখনো পাইনি।’ 

বিষয়টি নিয়ে কথা বললে জেএন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মকছেদ আলী বলেন, ‘শিপন স্কুলে অনিয়মিত ছিল। বিষয়টি আগে জানায়নি, আমরাও টের পাইনি। টেকনিক্যাল ভুলে এমন হতে পারে। ওকে নিয়ে বোর্ডে যাওয়া হবে।’ 

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ বলেন, ‘হঠাৎ জানতে পেরেছি বিজ্ঞানের ছাত্র মানবিকে পরীক্ষা দিচ্ছে। সংশোধনের জন্য প্রধান শিক্ষক কাজ করছেন।’ 

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউএনও বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ‘রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিপন কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার সমস্যার কথা জানায়। বারবার বলছিল, আমার পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। এ কথা শুনে আমি তাকে টেনশন না করে পদার্থবিদ্যা পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলি। রাতভর কথা বলে শিক্ষা অফিসার ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) স্যারের মাধ্যমে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করি।’ 

ইউএনও আরও বলেন, ‘শিপন আজ পদার্থবিদ্যা পরীক্ষা দিয়েছে। খুব দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে। এসএসসি পরীক্ষা ছাত্রজীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। একটি ভালো কাজ করতে পেরে খুব আনন্দিত আমি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত