Ajker Patrika

ঝিনাইদহে টান টান উত্তেজনার গরুর গাড়ির রেস

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২২, ২৩: ৫৮
ঝিনাইদহে টান টান উত্তেজনার গরুর গাড়ির রেস

প্রতি বছরের মতো এবারও ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেতাই গ্রামে অনুষ্ঠিত হলো গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা। গান্না ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আতিকুল হাসান মাসুম এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। এ আয়োজনকে ঘিরে বেতাই গ্রাম বসেছিল মেলা। হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেন প্রতিযোগিতা দেখতে। 

গতকাল রোববার সকালে বেতাই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কনকনে শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে মাঠে হাজির হয়েছেন ঝিনাইদহসহ আশপাশের জেলার হাজার হাজার মানুষ। ভ্যান, রিকশা, মোটরসাইকেলসহ নানা বাহনে এসেছেন নারী-শিশু আবাল বৃদ্ধ বনিতা। আর প্রতিযোগীরা এসেছেন যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে। ২৭টি গরুর গাড়ি প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। 

মঞ্চ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে ছয়টি সারিতে গরুর গাড়ি সাজিয়ে দেওয়া হয়। বাঁশিতে ফুঁ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়োয়ানের হাতের ছোঁয়ায় মুহূর্তে পাল্টে যায় দৃশ্যপট। গাড়োয়ানের হাঁকডাকে ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড় দেয় একেকটা গাড়ি। উচ্ছ্বসিত হাজার হাজার দর্শক তাদের চিৎকার করে উৎসাহ দেয়। 

ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা অন্তর মাহমুদ বলেন, ‘এ অঞ্চলের ঐতিহ্য গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগিতা। আমরা শুনে আসছি এখানে। আমরা বন্ধুরা মিলে দেখতে এসেছি। খুবই ভালো লাগছে খেলা দেখতে। গ্রামের মানুষের মাঝে প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। খেলাটি সত্যিই উপভোগ্য।’ 

কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর গ্রাম থেকে আসা কলেজছাত্র রাব্বি হোসেন বলে, ‘এই খেলা দেখতে যে কত ভালো লাগছে তা বলে বোঝানো যাবে না। এই খেলা দেখতে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছে।’ 

তবে রাব্বি শঙ্কা নিয়ে বলে, ‘এখানে এসে দেখি মানুষের মধ্যে করোনার কোনো ভয় নেই। এখানে হাজার হাজার লোক কারও মুখে মাস্ক নেই। কমিটির একটু সচেতন হাওয়ার দরকার ছিল।’ 

খেলায় অংশ নেওয়া গাড়োয়ান কবির হোসেন বলেন, ‘আমরা সারা বছর চাষাবাদ করি। বছরের এই সময়টা অপেক্ষায় থাকি এই খেলার জন্য। মানুষ আমাদের খেলা দেখে আনন্দ পায়, সেটা দেখে আমরাও আনন্দ পাই। আনন্দ পাওয়ার জন্যই আমরা দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিই।’ 

এ ব্যাপারে আয়োজক গান্না ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আতিকুল হাসান মাসুম বলেন, ‘গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষকে আনন্দ দেওয়া আর গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতেই আমরা প্রতিবছর এই ধরনের আয়োজন করে থাকি। শীত আর বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ খেলা দেখতে এখানে এসেছেন তাতেই প্রমাণ হয় এটি মানুষকে কতটা আনন্দ দেয়। আমরা আশা করি, আগামীতে আরও বড় পরিসরে এই আয়োজন করতে পারব।’ 

দিনভর প্রতিযোগিতা শেষে প্রথম হয়েছেন যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নজরুল মুন্সি। পুরস্কার হিসেবে তাঁকে দেওয়া হয়েছে একটি ২৪ ইঞ্চি রঙিন টেলিভিশন। দ্বিতীয় হয় মহেশপুর উপজেলার দোলন হোসেন। তিনি পান একটি বাইসাইকেল। আর তৃতীয় পুরস্কার ফ্যান পান যশোরের রহমত আলী। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত