Ajker Patrika

এক মামলাবাজ পরিবারের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ গ্রামবাসী!

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২১, ২২: ৫৫
এক মামলাবাজ পরিবারের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ গ্রামবাসী!

নিজেদের মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবি ও সুদের কারবার করার কারণে এলাকায় প্রভাবশালী তাঁরা। পান থেকে চুন খসলেই গ্রামবাসীর নামে মামলা দেন। এভাবে ৩০০ জনের নামে ৩৫টি মামলা দিয়েছেন ওই গ্রামের দুই সহোদর ভাই মো. শামসুর রহমান ও মোস্তফা কামাল সুমন। যেখানে গ্রামের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১ হাজার ২০০ জন।

গ্রামটির নাম বারফা। এটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। ওই দুই ভাই মূলত সুদের ব্যবসা করেন। তাঁদের সুদের ব্যবসার ফাঁদে পড়ে সব হারিয়েছেন গ্রামের অনেক মানুষ। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, এর আগে ওই দুই ভাইয়ের বাবা আফছার বিশ্বাসও গ্রামের মানুষদের নামে বিভিন্ন সময় মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন। তাঁর কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন একাধিক পরিবার। 

আজ সোমবার ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গ্রামের বাসিন্দারা। এ সময় গ্রামের লোকজন জুতা ও ঝাড়ু মিছিলও করেন। 

সংবাদ সম্মেলনে গ্রামের বাসিন্দা আশরাফুল ইসলাম খোকন লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রকৃতপক্ষে শামছুর রহমান এলাকায় একজন চিহ্নিত ঠান্ডা মাথার প্রতারক ও মামলাবাজ। তাঁর প্রতারণার শিকার গ্রামের অধিকাংশ মানুষ। সম্প্রতি সরকারি রাস্তার জায়গায় অবৈধভাবে ঘর করে লোক চলাচলের অসুবিধা সৃষ্টি করেছেন। এরই মধ্যে গ্রামবাসী মিলে বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানানো হয়েছে। 

আশরাফুল অভিযোগ করে বলেন, শামছুর রহমানের বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না, তারপরও তাঁরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে পরিচয় দেন। ভুয়া তথ্য দিয়ে গ্রামের মানুষদের যেমন হয়রানি করছেন, তেমনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন করছেন। 

ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা রুবেল হোসেন বলেন, আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করি। দিন আনি দিন খাই। আমার বাবা অভাবে পড়ে তাঁদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। এই টাকার সুদ দেওয়ার পরও আমাদের একমাত্র সম্বল ভিটাবাড়িসহ ১৬ শতক জমি লিখে নেয় শামছুর রহমানের পরিবার। 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মামলার শিকার ওই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বিশ্বাস, হযরত মন্ডল, তাঁর চাচাতো ভাই নজরুল বিশ্বাস, ইকবাল মন্ডল, নজরুল মন্ডলসহ আরও অনেক ভুক্তভোগী। 

এ ব্যাপারে জানতে শামছুর রহমানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ভাই মোস্তফা কামাল সুমন বলেন, আমাদের গ্রামে অনেক জমি আছে, কিন্তু গ্রামের মানুষ তা দখল করে রাখে। যে কারণে কিছু মানুষের নামে মামলা দিতে বাধ্য হয়েছি। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত