Ajker Patrika

যশোরে আত্মগোপনে থাকা আ.লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান

­যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ এপ্রিল ২০২৫, ২২: ০৮
রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে পুলিশের গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা
রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে পুলিশের গাড়ি। ছবি: আজকের পত্রিকা

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহীন চাকলাদারসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। আজ রোববার দুপুরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য অভিযান চালান। এসব অভিযানে কাউকে আটক বা কিছু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

তবে পুলিশ বলছে, দলীয় পরিচয়ে কোনো নেতার বাড়িতে অভিযানে যায়নি পুলিশ। বিভিন্ন মামলার আসামি ধরাসহ মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারের অংশ হিসেবে তারা এই অভিযানে যায়। এদিকে দিনদুপুরে পুলিশি বহর নিয়ে নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি অবস্থান ও অভিযানে প্রতিবেশীদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বিরাজ করে। উৎসুক জনতাও অভিযানের সময়ে নেতা-কর্মীদের বাড়ির সামনে ভিড় করে। যদিও এসব নেতা ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন।

পুলিশ সূত্রে ও সরেজমিন জানা গেছে, সাত গাড়ি নিয়ে পুলিশ প্রথমে যায় শহরের কাঁঠালতলার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের বাড়িতে। যদিও ওই বাড়ি ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের দিন বিক্ষুব্ধ জনতা পুড়িয়ে দেয়। শাহীন চাকলাদার ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে থাকেন না। পোড়া এই বাড়িতে সংস্কারের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশ অভিযানে কথা বলে চলে যান। এরপর পুলিশের টিমটি যশোর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও যুবলীগের প্রচার সম্পাদক জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলনের বাসায় যায়। সেখান থেকে শহরের কদমতলায় অবস্থিত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েলের বাড়িতে যায়। সেখানে পুলিশ সদস্যরা জুয়েলের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে চলে যান।

এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টিমটি কাজীপাড়ায় জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সাইফুজ্জামান পিকুল ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুলের বাড়িতে যায়। এসব বাড়িতে গিয়ে কাউকে আটক বা কিছু উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

যুবলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম জুয়েলের ভাবি জ্যোৎস্না বেগম বলেন, ‘আমাদের বাসায় পুলিশ আসে, এসে জুয়েলের খোঁজ নেয়। আমরা বলি, জুয়েল অনেক আগে থেকেই বাড়িতে নেই। তারপর পুলিশ চলে যায়। কাউকে হেনস্তা করেনি।’

তবে অভিযানে থাকা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বিভিন্ন মামলার আসামিরা অবস্থান করছে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালাই। তবে কাউকে পাওয়া যায়নি। এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত বলেন, ‘কোনো দলীয় পরিচয়ে কারও বাড়িতে অভিযান চালানো হয়নি। অস্ত্র ও মাদক অভিযানের অংশ হিসেবে অভিযানে যায় পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে আটক বা কিছু উদ্ধার করা যায়নি।’

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জানান, যশোরসহ সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঝটিকা মিছিল করছেন। গতকাল শনিবার ঝটিকা মিছিল বন্ধ করতে না পারলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা; তারই অংশ হিসেবে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পুলিশের এই অভিযান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত