Ajker Patrika

নড়াইলে আ.লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে বিএনপি কর্মী নিহত

নড়াইল প্রতিনিধি 
নড়াইলের কালিয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত কয়েকজনকে সদর হাসপাতালে আনা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নড়াইলের কালিয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত কয়েকজনকে সদর হাসপাতালে আনা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নড়াইলের কালিয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষে ফরিদ মোল্যা (৫৮) নামের এক বিএনপি কর্মী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৭ জন। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের নড়াইল সদর হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

বাবরা-হাচলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের নেতা মোজাম্মেল হোসেন পিকুল ও তাঁর অনুসারী মিলন মোল্যার সঙ্গে স্থানীয় বিএনপি নেতা আতাউর রহমান আফতাব মোল্যার সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার জের ধরে আজ শনিবার সকালে চেয়ারম্যান পিকুল ও মিলনের সমর্থক সাহেব আলীর বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ছাড়া ভাঙচুর করা হয়েছে তাঁদের অপর দুই সমর্থক বাদশা শেখ ও কাক্কা শেখের বাড়ি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঞ্চনপুর গ্রামের বাসিন্দা পিকুল চেয়ারম্যান ও মিলন মোল্যার সঙ্গে আতাউর রহমান আফতাব মোল্যার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। দুই পক্ষের মধ্যে এর আগে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। একাধিক মামলাও চলমান। গত বৃহস্পতিবার বিকালে মিলন মোল্যা পক্ষের সানোয়ার নামের এক ব্যক্তি নড়াইলে আদালতে হাজিরা দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁকে মারধর করেন। এর জের ধরে গতকাল সন্ধ্যায় কাঞ্চনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে চেয়ারম্যান পিকুল ও মিলন মোল্যা পক্ষের লোকেরা আতাউর রহমান আফতাব মোল্যার বাড়িতে হামলা করেন। পরে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২৮ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে আফতাব মোল্যা পক্ষের ফরিদ মোল্লাকে (৫৮) গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাত ৯টার দিকে তিনি মারা যান। এ পক্ষের অন্য আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক ইউপি সদস্য চম্পা বেগম (৪৫), স্থানীয় করিম মুন্সি (৪৯), হুসাইন শেখ (১৮), আশরাফুল মোল্যা (৫০), বশির মুন্সি (৪৫), করিম মুন্সি (৩৭), জালাল মুন্সি (৪৭)। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত বশির মুন্সিকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের অনেকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।

মিলন মোল্যা পক্ষের আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন তৌহিদ মোল্লা (৫০), আলমিস শেখ (৩৫), নিরব মোল্লা (১২), হাসিব মোল্লা (১৫), কিবরিয়া শেখ (২৮), ওসমান মোল্লা (১৫), কামাল কাজী (৪০), তরিক শেখ (২৪), জাকারিয়া শেখ (২৫) ও দিদার শেখ (১৮)।

আফতাব মোল্যা বলেন, ‘চেয়ারম্যান পিকুলের যোগসাজশে মিলন মোল্যা ও তার দলীয় লোকজন একের পর এক আমার লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। এর আগে জাহিদ ও ফায়েককে কুপিয়ে আহত করে মিলনের লোকজন। চেয়ারম্যান পিকুল ও তার দলীয় লোকজন এর আগে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়িভাবে কোপায়। আমি প্রাণে বেঁচে গেলেও চিরতরে পঙ্গুত্ববরণ করেছি।’

অভিযোগের বিষয়ে চেয়ারম্যান পিকুলের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন শান্ত। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আটকে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে বিএনপি কর্মী ফরিদ মোল্যাকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি নেতা আহমেদ শফিকুল হায়দার পারভেজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত