Ajker Patrika

কুষ্টিয়ায় ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা, সন্দেহের তির জামাতার দিকে

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুন ২০২৫, ২১: ১৫
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ায় টুটুল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় চরমপন্থীদের সম্পৃক্ততার তথ্য পেয়েছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার মধুপুর পশুর হাটসংলগ্ন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে টুটুলের গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি শটগান, মোটরসাইকেল ও কয়েক রাউন্ড গুলিও উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত টুটুল হোসেন মধুপুর গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা তুরাব হোসেনের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন প্রবাসে থেকে দেশে ফিরে স্থানীয় বাজারে একটি দোকান চালাতেন।

কুষ্টিয়া পুলিশের বিশেষ শাখার একটি সূত্র জানায়, টুটুল হোসেনের সাবেক জামাতা ইমরান হোসেন চরমপন্থীদের সহযোগিতায় হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে।

সূত্র বলছে, ইমরান হোসেনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল টুটুল হোসেনের মেয়ে টুম্পার। তবে সেই সংসার বেশি দিন টেকেনি। ইমরান তাঁর স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতেন—এমন অভিযোগে টুম্পা তাঁকে তালাক দেন। এরপর থেকে ইমরান নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন।

ওই বিচ্ছেদের ক্ষোভ থেকে ইমরান স্থানীয় চরমপন্থী সংগঠনের সদস্যদের যোগসাজশে সাবেক শ্বশুর টুটুল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করেছেন বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

তবে অপর একটি সূত্র বলছে, স্থানীয় মধুপুর কলার হাটের ইজারাসংক্রান্ত বিরোধের কারণেও টুটুল হোসেনকে খুন করা হতে পারে।

ওই সূত্র বলছে, সম্প্রতি দরপত্রে অংশ নিয়ে ওই হাটের ইজারা পান সদর উপজেলার পিয়ারপুর গ্রামের বিএনপির কর্মী শরিফুল ইসলাম। তবে পরে ঝিনাইদহের হরিনাকুণ্ডু উপজেলার বাগআঁচড়া গ্রামের চরমপন্থী যোগাযোগ থাকা ইউনুস আলী চাপ প্রয়োগ করে শরিফুলের কাছ থেকে হাটের ইজারার স্বত্ব নিজের নামে লিখে নেন। এ ছাড়া হাট ইজারার দরপত্র কেনার অপরাধে শরিফুলের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ইউনুস। তবে হাটের ইজারা স্বত্ব ইউনুসের নামে লিখে দিলেও চাঁদার ১০ লাখ টাকা দিতে গড়িমসি করছিলেন শরিফুল। এ কারণে শরিফুলকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন ইউনুস।

এদিকে চাঁদার ১০ লাখ টাকা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ইউনুস হোসেন। অন্যদিকে সাবেক শ্বশুরের ওপর প্রতিশোধ নিতে চরমপন্থীদের সঙ্গে যোগ দেন ইমরান হোসেন।

সূত্র জানায়, গতকাল রাতে শরিফুল স্থানীয় বিএনপি নেতা ইউনুস হোসেনের অফিসে বসে ছিলেন। এই ইউনুস হোসেনের সঙ্গে সখ্য ছিল নিহত টুটুল হোসেনের। টুটুল বিএনপি নেতা ইউনুসের অনেকটা বডিগার্ড হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনার সময় টুটুলও ওই অফিসে ছিলেন। সে সময় সেখানে হানা দেয় চরমপন্থী সন্ত্রাসীরা।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এ দলে চরমপন্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা ইউনুস আলী ও ইমরান হোসেন ছিলেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে গুলিতে নিহত হন টুটুল হোসেন। এ ছাড়া বিএনপি নেতা ইউনুস সামান্য আহত হন বলে সূত্র বলছে।

এ দুটি সূত্র ধরেই তদন্ত চলছে বলে জানায় কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার সূত্রটি। পরে চরমপন্থীরা একটি ভ্যানে করে টুটুলের মরদেহ নিয়ে এসে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে।

এ ঘটনায় গতকাল রাতেই বিএনপি নেতা ইউনুসকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। এ ছাড়া ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করা মোটরসাইকেলের মালিক পাটিকাবাড়ির গ্রামের সোবাহানকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, টুটুল হত্যার ঘটনায় কেউ এখনো থানায় মামলা করতে আসেনি। মামলা হলে জানা যাবে নিহত ব্যক্তির পরিবার হত্যাকাণ্ডের জন্য কাউকে সন্দেহ করছে কি না। তবে কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে এরই মধ্যে তাঁরা হত্যাকাণ্ডের তদন্তে নেমেছেন বলে জানান ওসি। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি বলে তিনি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘মে ডে’ কল দিয়ে নীরব হয়ে যান আহমেদাবাদে বিধ্বস্ত ফ্লাইটের পাইলট

বিধ্বস্ত উড়োজাহাজের পাইলটের করা ‘মে ডে কল’ আসলে কী

উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় সবাই মরেনি, একমাত্র জীবিত ১১ নম্বর সিটের যাত্রী

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এখন বৈঠকে রাজি নন

আজীবনের জন্য বহিষ্কার দুপুরে, বিকেলে দলীয় সভায় প্রধান বক্তা!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত