Ajker Patrika

পাইকগাছায় ৪ হাজার পুকুর-ঘের প্লাবিত, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

খুলনা প্রতিনিধি
খুলনার পাইকগাছায় ভারী বৃষ্টিতে ডুবে গেছে মাছের ঘের। ছবি: আজকের পত্রিকা
খুলনার পাইকগাছায় ভারী বৃষ্টিতে ডুবে গেছে মাছের ঘের। ছবি: আজকের পত্রিকা

খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় অন্তত এক হাজার পুকুর ও তিন হাজার ছোট-বড় ঘের তলিয়ে গেছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের। বসতবাড়িতে পানিবন্দী হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ।

আজ বুধবার পানিবন্দী মানুষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বৃষ্টির পানি নামতে না পারায় উপজেলা কৃষি কার্যালয়, আদালত চত্বরসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এ বছর আষাঢ়ের শুরু থেকে একটানা গুঁড়ি গুঁড়ি, কখনো হালকা ও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে কয়রায়। এতে আমন ধানের বীজতলা, সবজিখেত, ঘের, নার্সারি, পুকুর, বাগান, রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকগাছার গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলী ইউনিয়ন উঁচু এলাকা হলেও অন্য ছয়টি ইউনিয়ন নিচু এলাকা। সামান্য বৃষ্টি হলে এসব এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। তবে গত দুই দিনের ভারী বৃষ্টিতে উঁচু এলাকাতেও পানি উঠে যায়। পৌরসভা বাজারের সোনাপট্টি, মাছের বাজারসহ বিভিন্ন রাস্তা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার বেশির ভাগ গ্রামীণ রাস্তা তলিয়ে থাকায় সাধারণ মানুষ চলাচলে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। বাড়ির উঠান পর্যন্ত পনি উঠে গেছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে শ্রমজীবী মানুষেরা কাজে যেতে না পারায় কর্মহীন হয়ে পড়ে আর্থিক অনটনের মধ্যে পড়েছেন।

উপজেলার সদর ইউনিয়ন গদাইপুরের কয়েক শ নার্সারি, খেত পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া সবজিখেত ও আমন ধান ঝোড়ো হাওয়ায় পড়ে পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে এবার আমন চাষে বড় ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গদাইপুর ইউনিয়নের কৃষক সামাদ গাজী জানান, ভারী বৃষ্টিতে নার্সারি, সবজি ও ধানের খেত তলিয়ে গেছে। তাঁর কুল, পেয়ারা ও লেবুর প্রায় তিন হাজার ছোট চারা তলিয়ে আছে। বাড়ির উঠান পর্যন্ত পানি উঠেছে। দ্রুত পানি সরে না গেলে তিনি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানান।

উপজেলার অনেকেই অভিযোগ করে বলেছেন, পৌরসভা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশনের নালা ভরাট হয়ে যাওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া ব্যক্তিস্বার্থে অনেকে বাড়ির সামনের বা পাশের নালা বন্ধ করে রাখায় পানি ঠিকমতো নামতে পারছে না।

পাইকগাছা পৌরসভার প্রধান সড়কের গোলাবাটি, সলুয়া, নতুন বাজার ও জিরো পয়েন্ট এলাকার ভাঙা সড়কে পানি জমে ছোট ছোট ডোবায় পরিণত হয়েছে। যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. একরামুল হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে আমন ধানের বীজতলা ও সবজিখেতের ক্ষতি হয়েছে। আমাদের উপসহকারী কর্মকর্তারা ইউনিয়নগুলোতে খোঁজখবর নিচ্ছেন। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্লাবিত এলাকার পানি সরে গেলে আমন ধানের চারার তেমন ক্ষতি হবে না।’

পাইকগাছার উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক আজকের পত্রিকাকে জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় এক হাজার পুকুর ও প্রায় তিন হাজার ছোট-বড় ঘের তলিয়ে গেছে। মাছচাষিদের অন্তত কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অফিসার মাহেরা নাজনীন জানান, ভারী বর্ষণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য নদীর স্লুইসগেট উন্মুক্ত রাখা ও নালা পরিষ্কারের জন্য কাজ চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২১ বছর বয়সেই ব্যবসায় বাজিমাত, দুই বছরে বিক্রি আড়াই কোটির বেশি

নিহতের ফোনের ভিডিওতে মিলল ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ীতে হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ চিত্র: বিবিসির অনুসন্ধান

ইন্টারনেট ছাড়াই চলবে হোয়াটসঅ্যাপের নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী

জুলাইয়ে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন হাসিনা, ফাঁস হওয়া অডিও বিশ্লেষণ করে জানাল বিবিসি

চীন-পাকিস্তান-বাংলাদেশের স্বার্থ মিলে গেলে ভারতের নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি হতে পারে: জেনারেল অনিল চৌহান

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত