ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন
মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, গাজীপুর
দেশের রাজনীতিতে রাজধানী-লাগোয়া শিল্পনগরী গাজীপুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যে পুরো জেলায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। তফসিল ঘোষণার আগেই গাজীপুরের মাঠে নেমে পড়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা।
শহর থেকে গ্রাম—সবখানে দেখা যাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার আর মিছিলের প্রতিযোগিতা। চলছে প্রচারপত্র বিতরণ, উঠান বৈঠক, সমাবেশ-পথসভা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক প্রচারও জমজমাট।
সীমানা পুর্নির্ধারণের পর জেলায় সংসদীয় আসন বেড়ে হয়েছে ছয়টি। আসন বাড়ানোয় সম্ভাব্য প্রার্থী ও ভোটারদেরও আগ্রহ বেড়েছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বিএনপি চারটি আসনে প্রার্থী ঠিক করেছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ছয়টি আসনেই একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সেসব সম্ভাব্য প্রার্থী দাঁড়িপাল্লা নিয়ে এলাকায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পাঁচটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে হাতপাখা প্রতীকে প্রচার শুরু করেছে। আর পাঁচ আসনে এনসিপির সম্ভাব্য একক প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছেন। মাঠে রয়েছেন গণঅধিকারের মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও।
গাজীপুর-১ আসন
কালিয়াকৈর উপজেলা এবং মহানগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড (কোনাবাড়ী থানা) এলাকা নিয়ে গঠিত। আসনটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো পুনর্গঠন করা হয়েছে। আসনটি শ্রীপুরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। প্রথমবার এটিকে শ্রীপুর থেকে আলাদা করে মহানগরীর কোনাবাড়ী ও কাশিমপুর থানার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এবার এখান থেকে কোনাবাড়ী থানা কেটে নিয়ে গাজীপুর-২-এ যুক্ত করা হয়েছে।
এই আসনে বিএনপি থেকে চারজন নতুন মুখ মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁদের কেউই আগে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেননি। তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, কেন্দ্রীয় নেতা হুমায়ুন কবির খান, কালিয়াকৈর পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মুজিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে ব্যারিস্টার ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী।
এখানে জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত প্রার্থী মানারাত ট্রাস্টি বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সচিব মু. শাহ আলম বকশী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জি এম রুহুল আমিন নিজ প্রতীক নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করেছেন।
সাইয়্যেদুল আলম বাবুল বলেন, ‘দলের দুঃসময়ে সংগঠন ধরে রেখেছি। এবার মনোনয়ন পেলে কালিয়াকৈরের উন্নয়নে নিজেকে নিবেদন করব।’
শাহ আলম বকশী বলেন, ‘আমি এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ, চাঁদাবাজি বন্ধ করব এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করব।’
গাজীপুর-২ আসন
এই আসনটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। আসনটি বর্তমানে মহানগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৬ নম্বর এবং ১৩ নম্বর থেকে ৩১ নম্বর ওয়ার্ড (মহানগরীর সদর মেট্রো থানা, বাসন, গাছা ও কাশিমপুর থানা) ও গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
এই আসন শ্রমিক-অধ্যুষিত ও সবচেয়ে আলোচিত। এখানে বিএনপি থেকে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা সবাই জাতীয় নির্বাচনে নতুন মুখ। তবে ভোটারদের কাছে সুপরিচিত। তাঁরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাজহারুল আলম, মহানগর বিএনপির সভাপতি মো. শওকত হোসেন সরকার, এই আসনের সাবেক এমপি, প্রতিমন্ত্রী ও গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের সন্তান ও গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম রনি।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য মুহাম্মদ হোসেন আলী। ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা এম এ হানিফ সরকার। এখানে গণঅধিকার পরিষদ থেকে লড়বেন দলের জেলা আহ্বায়ক পাঠান আজহার।
এম মঞ্জুরুল করিম রনি বলেন, ‘আমি পাড়ায় পাড়ায় মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। দলের ৩১ দফার প্রচার, সভা-সমাবেশ করছি। বিএনপি ও আমার বাবার ভালোবাসায় মানুষ উজ্জীবিত। আশা করি, সবাই আমার পাশে থাকবেন।’
ডা. মাজহারুল বলেন, ‘চাঁদাবাজি-দখলবাজিমুক্ত সমাজ গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে মাঠে নেমেছি।’
গাজীপুর-৩ আসন
আসনটি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা, গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাওয়াল গড় ও পিরুজালী ইউনিয়ন এবং গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত। আসনটি কালিয়াকৈর থেকে আলাদা হওয়ার পর শ্রীপুর থেকে জাতীয় নির্বাচনে কেউ বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাননি।
এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সবুজ।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারে অংশ নিচ্ছেন জেলা আমির ড. জাহাঙ্গীর আলম। এখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হতে পারেন হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন। এনসিপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন মেজর (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুন।
ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। দল মনোনয়ন দিলে এবং নির্বাচিত হলে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত এলাকা গড়বেন।
গাজীপুর-৪ আসন
আসনটি কাপাসিয়া উপজেলা এলাকা নিয়ে গঠিত। এই আসন এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত। কারণ এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহের ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ। গত ১১ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাপাসিয়ায় এক স্মরণসভায় রিয়াজুল হান্নানকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন।
এখানে জামায়াতের ঘোষিত প্রার্থী হিসেবে এলাকায় ব্যাপক প্রচার ও গণসংযোগ করছেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী। এখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হতে পারেন মাওলানা কাজীম উদ্দীন এবং এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আলী নাছের খান।
রিয়াজুল হান্নান বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকারের পতন ও মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য অনেকবার মিথ্যা মামলা-হামলার শিকার হয়েছি, গ্রেপ্তার হয়েছি। আমি বাবার আদর্শ নিয়ে কাজ করছি।’
সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন, ‘মানুষ আর দুঃশাসন-অনিয়ম দেখতে চায় না। বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছি। কাপাসিয়ার মানুষ জামায়াতকেই বেছে নেবে বলে আশা করছি।’
গাজীপুর-৫ আসন
আসনটি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪০, ৪১ এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা নিয়ে গঠিত। এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম ফজলুল হক মিলন। তিনি এর আগেও এখান থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এই আসনে জামায়াতের ঘোষিত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর শাখার নায়েবে আমির ও কালীগঞ্জ ফোরামের সভাপতি খায়রুল হাসান। তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরার সদস্য। তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এলাকায় ব্যাপক প্রচার ও গণসংযোগ করছেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। এ ছাড়া এনসিপির পক্ষ থেকে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন এম এম শোয়াইব।
ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘আমি উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। কালীগঞ্জবাসী আমাকে আগেও যেভাবে ভালোবেসেছেন, এবারও তেমন সাড়া দিচ্ছেন।’
গাজীপুর-৬ আসন
আসনটি নতুন। জনসংখ্যার অনুপাত বিবেচনায় সম্প্রতি এটি বাড়ানো হয়েছে। আসনটি গাজীপুর মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩৯ নম্বর এবং ৪৩ নম্বর থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড (টঙ্গী পূর্ব ও টঙ্গী পশ্চিম থানা এবং পুবাইল থানা) এলাকা নিয়ে গঠিত।
এখানে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, শ্রমিকনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং টঙ্গী পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এখানে বিএনপির অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন জাতীয় শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাউদ্দিন সরকার, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহাম্মেদ সুমন ও সাধারণ সম্পাদক গাজী সালাউদ্দিন।
জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী দলের তুরস্ক শাখার সভাপতি ড. হাফিজুর রহমান। এখানে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হতে পারেন আব্দুর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী এম এ হানিফ সরকার। এনসিপির একক প্রার্থী হতে পারেন নাবীল ইউসুফ।
হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, ‘গাজীপুর-৬ বিএনপির দুর্গ হবে। ৩১ দফার বাস্তবায়ন ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষাই আমার লক্ষ্য।’
নাবীল ইউসুফ বলেন, ‘গাজীপুর-৬-কে আমি একটি মডেল আসন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই—যেখানে থাকবে আধুনিক অবকাঠামো, মাদকমুক্ত সমাজ ও নিরাপদ শহর।’
দেশের রাজনীতিতে রাজধানী-লাগোয়া শিল্পনগরী গাজীপুর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যে পুরো জেলায় বইছে নির্বাচনী হাওয়া। তফসিল ঘোষণার আগেই গাজীপুরের মাঠে নেমে পড়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা।
শহর থেকে গ্রাম—সবখানে দেখা যাচ্ছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার আর মিছিলের প্রতিযোগিতা। চলছে প্রচারপত্র বিতরণ, উঠান বৈঠক, সমাবেশ-পথসভা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমভিত্তিক প্রচারও জমজমাট।
সীমানা পুর্নির্ধারণের পর জেলায় সংসদীয় আসন বেড়ে হয়েছে ছয়টি। আসন বাড়ানোয় সম্ভাব্য প্রার্থী ও ভোটারদেরও আগ্রহ বেড়েছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, বিএনপি চারটি আসনে প্রার্থী ঠিক করেছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ছয়টি আসনেই একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। সেসব সম্ভাব্য প্রার্থী দাঁড়িপাল্লা নিয়ে এলাকায় ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পাঁচটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে হাতপাখা প্রতীকে প্রচার শুরু করেছে। আর পাঁচ আসনে এনসিপির সম্ভাব্য একক প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছেন। মাঠে রয়েছেন গণঅধিকারের মনোনয়নপ্রত্যাশীরাও।
গাজীপুর-১ আসন
কালিয়াকৈর উপজেলা এবং মহানগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড (কোনাবাড়ী থানা) এলাকা নিয়ে গঠিত। আসনটি এবার দ্বিতীয়বারের মতো পুনর্গঠন করা হয়েছে। আসনটি শ্রীপুরের সঙ্গে যুক্ত ছিল। প্রথমবার এটিকে শ্রীপুর থেকে আলাদা করে মহানগরীর কোনাবাড়ী ও কাশিমপুর থানার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। এবার এখান থেকে কোনাবাড়ী থানা কেটে নিয়ে গাজীপুর-২-এ যুক্ত করা হয়েছে।
এই আসনে বিএনপি থেকে চারজন নতুন মুখ মনোনয়নপ্রত্যাশী। তাঁদের কেউই আগে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেননি। তাঁরা হলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, কেন্দ্রীয় নেতা হুমায়ুন কবির খান, কালিয়াকৈর পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মুজিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে ব্যারিস্টার ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী।
এখানে জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত প্রার্থী মানারাত ট্রাস্টি বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক, সাবেক সচিব মু. শাহ আলম বকশী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জি এম রুহুল আমিন নিজ প্রতীক নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করেছেন।
সাইয়্যেদুল আলম বাবুল বলেন, ‘দলের দুঃসময়ে সংগঠন ধরে রেখেছি। এবার মনোনয়ন পেলে কালিয়াকৈরের উন্নয়নে নিজেকে নিবেদন করব।’
শাহ আলম বকশী বলেন, ‘আমি এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি অনিয়ম, দুর্নীতি, ঘুষ, চাঁদাবাজি বন্ধ করব এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে কাজ করব।’
গাজীপুর-২ আসন
এই আসনটি পুনর্গঠন করা হয়েছে। আসনটি বর্তমানে মহানগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৬ নম্বর এবং ১৩ নম্বর থেকে ৩১ নম্বর ওয়ার্ড (মহানগরীর সদর মেট্রো থানা, বাসন, গাছা ও কাশিমপুর থানা) ও গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
এই আসন শ্রমিক-অধ্যুষিত ও সবচেয়ে আলোচিত। এখানে বিএনপি থেকে প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা সবাই জাতীয় নির্বাচনে নতুন মুখ। তবে ভোটারদের কাছে সুপরিচিত। তাঁরা হলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাজহারুল আলম, মহানগর বিএনপির সভাপতি মো. শওকত হোসেন সরকার, এই আসনের সাবেক এমপি, প্রতিমন্ত্রী ও গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নানের সন্তান ও গাজীপুর মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মঞ্জুরুল করিম রনি।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর ঘোষিত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য মুহাম্মদ হোসেন আলী। ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা এম এ হানিফ সরকার। এখানে গণঅধিকার পরিষদ থেকে লড়বেন দলের জেলা আহ্বায়ক পাঠান আজহার।
এম মঞ্জুরুল করিম রনি বলেন, ‘আমি পাড়ায় পাড়ায় মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। দলের ৩১ দফার প্রচার, সভা-সমাবেশ করছি। বিএনপি ও আমার বাবার ভালোবাসায় মানুষ উজ্জীবিত। আশা করি, সবাই আমার পাশে থাকবেন।’
ডা. মাজহারুল বলেন, ‘চাঁদাবাজি-দখলবাজিমুক্ত সমাজ গঠনের অঙ্গীকার নিয়ে মাঠে নেমেছি।’
গাজীপুর-৩ আসন
আসনটি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা, গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাওয়াল গড় ও পিরুজালী ইউনিয়ন এবং গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত। আসনটি কালিয়াকৈর থেকে আলাদা হওয়ার পর শ্রীপুর থেকে জাতীয় নির্বাচনে কেউ বিএনপির প্রার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাননি।
এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহস্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন সবুজ।
এই আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রচারে অংশ নিচ্ছেন জেলা আমির ড. জাহাঙ্গীর আলম। এখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হতে পারেন হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন। এনসিপি থেকে মনোনয়ন চাইবেন মেজর (অব.) আবদুল্লাহ আল মামুন।
ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, স্বৈরাচার-ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। দল মনোনয়ন দিলে এবং নির্বাচিত হলে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত এলাকা গড়বেন।
গাজীপুর-৪ আসন
আসনটি কাপাসিয়া উপজেলা এলাকা নিয়ে গঠিত। এই আসন এখন সবচেয়ে বেশি আলোচিত। কারণ এখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন প্রয়াত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহের ছেলে শাহ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ। গত ১১ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাপাসিয়ায় এক স্মরণসভায় রিয়াজুল হান্নানকে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন।
এখানে জামায়াতের ঘোষিত প্রার্থী হিসেবে এলাকায় ব্যাপক প্রচার ও গণসংযোগ করছেন ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী। এখানে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হতে পারেন মাওলানা কাজীম উদ্দীন এবং এনসিপির সম্ভাব্য প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ও নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আলী নাছের খান।
রিয়াজুল হান্নান বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকারের পতন ও মানুষের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য অনেকবার মিথ্যা মামলা-হামলার শিকার হয়েছি, গ্রেপ্তার হয়েছি। আমি বাবার আদর্শ নিয়ে কাজ করছি।’
সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন, ‘মানুষ আর দুঃশাসন-অনিয়ম দেখতে চায় না। বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছি। কাপাসিয়ার মানুষ জামায়াতকেই বেছে নেবে বলে আশা করছি।’
গাজীপুর-৫ আসন
আসনটি গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪০, ৪১ এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকা নিয়ে গঠিত। এখানে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম ফজলুল হক মিলন। তিনি এর আগেও এখান থেকে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এই আসনে জামায়াতের ঘোষিত প্রার্থী গাজীপুর মহানগর শাখার নায়েবে আমির ও কালীগঞ্জ ফোরামের সভাপতি খায়রুল হাসান। তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরার সদস্য। তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এলাকায় ব্যাপক প্রচার ও গণসংযোগ করছেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রার্থী মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। এ ছাড়া এনসিপির পক্ষ থেকে নির্বাচনী প্রচার চালাচ্ছেন এম এম শোয়াইব।
ফজলুল হক মিলন বলেন, ‘আমি উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি। কালীগঞ্জবাসী আমাকে আগেও যেভাবে ভালোবেসেছেন, এবারও তেমন সাড়া দিচ্ছেন।’
গাজীপুর-৬ আসন
আসনটি নতুন। জনসংখ্যার অনুপাত বিবেচনায় সম্প্রতি এটি বাড়ানো হয়েছে। আসনটি গাজীপুর মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩৯ নম্বর এবং ৪৩ নম্বর থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড (টঙ্গী পূর্ব ও টঙ্গী পশ্চিম থানা এবং পুবাইল থানা) এলাকা নিয়ে গঠিত।
এখানে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, শ্রমিকনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং টঙ্গী পৌরসভার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এখানে বিএনপির অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন জাতীয় শ্রমিক দলের কার্যকরী সভাপতি সালাউদ্দিন সরকার, টঙ্গী পূর্ব থানা বিএনপির সভাপতি সরকার জাবেদ আহাম্মেদ সুমন ও সাধারণ সম্পাদক গাজী সালাউদ্দিন।
জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী দলের তুরস্ক শাখার সভাপতি ড. হাফিজুর রহমান। এখানে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হতে পারেন আব্দুর রহমান ও ইসলামী আন্দোলনের সম্ভাব্য প্রার্থী এম এ হানিফ সরকার। এনসিপির একক প্রার্থী হতে পারেন নাবীল ইউসুফ।
হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, ‘গাজীপুর-৬ বিএনপির দুর্গ হবে। ৩১ দফার বাস্তবায়ন ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষাই আমার লক্ষ্য।’
নাবীল ইউসুফ বলেন, ‘গাজীপুর-৬-কে আমি একটি মডেল আসন হিসেবে গড়ে তুলতে চাই—যেখানে থাকবে আধুনিক অবকাঠামো, মাদকমুক্ত সমাজ ও নিরাপদ শহর।’
বরিশালে সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠনে কাউন্সিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রায় ২ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থীকে সদস্যপদ দিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে।
৩ ঘণ্টা আগেসিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলীতে গড়ে উঠছে অন্যতম বৃহৎ বিসিক শিল্পপার্ক। উত্তরবঙ্গকে দেশের অন্যতম শিল্পাঞ্চলে রূপ দেওয়ার স্বপ্ন ছিল এ প্রকল্প ঘিরে। তবে ৭১৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই উদ্যোক্তাদের কাছে প্লট হস্তান্তর করায় ক্ষোভে ফুঁসছেন শিল্পোদ্যোক্তারা।
৩ ঘণ্টা আগেহযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের কার্গো ভিলেজের আমদানি কার্গো (পণ্য) কমপ্লেক্সে বিভিন্ন আমদানি পণ্যের পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক দ্রব্যও মজুত ছিল। স্তূপাকারে ছিল দীর্ঘ দিন ধরে বাজেয়াপ্ত পুরোনো ও নষ্ট মালামাল। ঢাকা কাস্টমস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
৩ ঘণ্টা আগেরাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় একটি কারখানার ফটকে দায়িত্ব পালন করেন পঞ্চাশোর্ধ্ব ফোরকান মোল্লা। ছয় দিন আগে পাশের রাস্তায় রাসায়নিক গুদাম ও পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ঘটনার পরদিন তাঁর চোখে জ্বালাপোড়া, শ্বাসকষ্ট ও বমিভাব দেখা দেয়। চিকিৎসার পর কিছুটা সুস্থ হয়েছেন।
৩ ঘণ্টা আগে