মেহেদী হাসান, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)

৮৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৬ কিলোমিটার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। চার বছর যেতে না যেতেই সড়কটির বিভিন্ন স্থান দেবে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে উঁচু-নিচু ঢেউ। যেন রীতিমতো জমির আলপথের মতো অবস্থা। এতে সড়কটি দিয়ে যাহনবাহনগুলোকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহাসড়কটির ঢাকা মোড় অংশ থেকে গোবিন্দগঞ্জ চারমাথার মোড় পর্যন্ত প্রায় ৬৬ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেশি খারাপ। এই মহাসড়ক নির্মাণের শুরুর দিকে এলাকার সাধারণ মানুষ ও পরিবহন ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তিরা অনেক খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু নির্মাণের দুই বছরের মাথায় সড়কের বিভিন্ন স্থান দেবে যাওয়া শুরু করে। কোথাও কোথাও সড়ক উঁচু-নিচু হয়ে যায়। আবার কোথাও কোথাও বড় বড় গর্ত তৈরি হয়। এসব কারণে মহাসড়কটি পথচারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের ফুলবাড়ী ঢাকা মোড় থেকে দক্ষিণে আম্রবাটি মাদ্রাসা মোড়, লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে জয়নগর বাজার, চণ্ডিপুর বাজার থেকে দুর্গাপুর ঢিবি, বিরামপুর পৌর শহরের ঢাকা মোড়, মির্জাপুরের ব্র্যাক চিলিং সেন্টার থেকে ঘোড়াঘাট রেলগুমটি পর্যন্ত কোথাও কোথাও সড়ক উঁচু-নিচু ঢেউ হয়ে আছে। পিচ ঢালাই উঠে কোথাও কোথাও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। একই অবস্থা ফুলবাড়ী ঢাকা মোড় থেকে পশ্চিম দিকে রাঙ্গামাটি হয়ে বারাইহাটের কিছু অংশ এবং আমবাড়ী যাওয়ার আগে একইভাবে দিনাজপুর পর্যন্ত। এতে মহাসড়কের এসব স্থান দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
ট্রাকচালক মমিনুল ইসলাম বলেন, নিচু স্থানে চাকা পড়লে যানবাহন সাইড দেওয়া-নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে।
দিনাজপুর কোতোয়ালি, ফুলবাড়ী, বিরামপুর ও ঘোড়াঘাট থানার সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে এই আঞ্চলিক মহাসড়কে ১১৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের। ২০২৪ সালে শুধু ফুলবাড়ীতে ২০টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৪ জন নিহত এবং আহত হয়েছে শতাধিক। এ ছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫টি দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছে।
দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে গোবিন্দগঞ্জ থেকে দিনাজপুর ১০৬ কিলোমিটার ৪২ ফুট প্রশস্তকরণে ৮৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। রাস্তাটি ৯টি গুচ্ছের মাধ্যমে ৮টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে নির্মাণকাজ শুরু করে সংস্কারসহ প্রশস্তকরণ কাজ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ করে।
দিনাজপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, কাজ শেষে সড়ক সংস্কারে জন্য প্রতিটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জন্য তিন বছর ডিপিএল (ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড) থাকে। এই সময়ে মহাসড়কে এ রকম কোনো সমস্যা থাকলে তা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংস্কার করবে। এই সড়কে ৮টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পৃথকভাবে কাজ করেছে। অনেকের চুক্তি শেষ হয়েছে এবং কিছু জায়গায় চুক্তির সময় আছে। সরেজমিনে দেখে ঠিকাদারেরে মাধ্যমে সেই জায়গাগুলোর সংস্কারকাজ করা হবে।

৮৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৬ কিলোমিটার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। চার বছর যেতে না যেতেই সড়কটির বিভিন্ন স্থান দেবে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে উঁচু-নিচু ঢেউ। যেন রীতিমতো জমির আলপথের মতো অবস্থা। এতে সড়কটি দিয়ে যাহনবাহনগুলোকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহাসড়কটির ঢাকা মোড় অংশ থেকে গোবিন্দগঞ্জ চারমাথার মোড় পর্যন্ত প্রায় ৬৬ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেশি খারাপ। এই মহাসড়ক নির্মাণের শুরুর দিকে এলাকার সাধারণ মানুষ ও পরিবহন ব্যবসায় যুক্ত ব্যক্তিরা অনেক খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু নির্মাণের দুই বছরের মাথায় সড়কের বিভিন্ন স্থান দেবে যাওয়া শুরু করে। কোথাও কোথাও সড়ক উঁচু-নিচু হয়ে যায়। আবার কোথাও কোথাও বড় বড় গর্ত তৈরি হয়। এসব কারণে মহাসড়কটি পথচারীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ মহাসড়কের ফুলবাড়ী ঢাকা মোড় থেকে দক্ষিণে আম্রবাটি মাদ্রাসা মোড়, লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে জয়নগর বাজার, চণ্ডিপুর বাজার থেকে দুর্গাপুর ঢিবি, বিরামপুর পৌর শহরের ঢাকা মোড়, মির্জাপুরের ব্র্যাক চিলিং সেন্টার থেকে ঘোড়াঘাট রেলগুমটি পর্যন্ত কোথাও কোথাও সড়ক উঁচু-নিচু ঢেউ হয়ে আছে। পিচ ঢালাই উঠে কোথাও কোথাও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। একই অবস্থা ফুলবাড়ী ঢাকা মোড় থেকে পশ্চিম দিকে রাঙ্গামাটি হয়ে বারাইহাটের কিছু অংশ এবং আমবাড়ী যাওয়ার আগে একইভাবে দিনাজপুর পর্যন্ত। এতে মহাসড়কের এসব স্থান দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহী পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
ট্রাকচালক মমিনুল ইসলাম বলেন, নিচু স্থানে চাকা পড়লে যানবাহন সাইড দেওয়া-নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে।
দিনাজপুর কোতোয়ালি, ফুলবাড়ী, বিরামপুর ও ঘোড়াঘাট থানার সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে এই আঞ্চলিক মহাসড়কে ১১৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের। ২০২৪ সালে শুধু ফুলবাড়ীতে ২০টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ১৪ জন নিহত এবং আহত হয়েছে শতাধিক। এ ছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫টি দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছে।
দিনাজপুর সড়ক ও জনপথ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে গোবিন্দগঞ্জ থেকে দিনাজপুর ১০৬ কিলোমিটার ৪২ ফুট প্রশস্তকরণে ৮৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। রাস্তাটি ৯টি গুচ্ছের মাধ্যমে ৮টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে নির্মাণকাজ শুরু করে সংস্কারসহ প্রশস্তকরণ কাজ ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে শেষ করে।
দিনাজপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান বলেন, কাজ শেষে সড়ক সংস্কারে জন্য প্রতিটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জন্য তিন বছর ডিপিএল (ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড) থাকে। এই সময়ে মহাসড়কে এ রকম কোনো সমস্যা থাকলে তা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংস্কার করবে। এই সড়কে ৮টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পৃথকভাবে কাজ করেছে। অনেকের চুক্তি শেষ হয়েছে এবং কিছু জায়গায় চুক্তির সময় আছে। সরেজমিনে দেখে ঠিকাদারেরে মাধ্যমে সেই জায়গাগুলোর সংস্কারকাজ করা হবে।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল বিভাগের আসনগুলোর অন্যতম বরিশাল-৫ (সদর ও নগর)। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে চলছে গুরু-শিষ্যের মনস্তাত্ত্বিক লড়াই। অন্যবারের মতো এবারও এখানে আলোচনায় রয়েছেন একাধিকবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার।
৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরে খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জমি-ফ্ল্যাট দখল, মাদক কারবার, অস্ত্রের মহড়া, মারধরসহ বিভিন্ন অপরাধের পেছনে রয়েছে ১৭টি গ্রুপের সন্ত্রাসী-অপরাধীরা। এই গ্রুপগুলোর নেতৃত্বে আছেন ১৭ জন।
৫ ঘণ্টা আগে
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা সদর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে পাকা সড়কে দাঁড়িয়ে তাকালে ফসলি মাঠ পেরিয়ে ছোট ছোট রঙিন ঘর চোখে পড়ে। আশ্রয়ণের এসব ঘর দেখে যে কারও মন জুড়িয়ে যাবে। তবে দুঃখের বিষয়, গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত এসব ঘরের অধিকাংশই এখন ফাঁকা।
৫ ঘণ্টা আগে
খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপর দীর্ঘ সারিতে আটকে থাকা গাড়ির ফাঁক গলে পড়িমরি করে ছুটছিলেন এক তরুণ। সঙ্গে থাকা লাগেজ থেকে মনে হচ্ছিল, বিদেশগামী যাত্রী। জিজ্ঞেস করতেই তাঁর সঙ্গে থাকা একজন তা নিশ্চিত করলেন। জানালেন, ফ্লাইট ধরা নিয়ে তাঁরা চরম উৎকণ্ঠায় আছেন।
৫ ঘণ্টা আগেখান রফিক, বরিশাল

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল বিভাগের আসনগুলোর অন্যতম বরিশাল-৫ (সদর ও নগর)। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে চলছে গুরু-শিষ্যের মনস্তাত্ত্বিক লড়াই। অন্যবারের মতো এবারও এখানে আলোচনায় রয়েছেন একাধিকবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার। তবে দলের মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে তাঁর পথ বন্ধুর করে তুলেছেন তাঁরই কয়েকজন শিষ্য। এ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন সরোয়ার।
তার ওপর সদর উপজেলা কমিটি ভেঙে দেওয়া এবং নগর বিএনপি নিয়ে সরোয়ার অনুসারীদের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ নেতারা। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে গত বৃহস্পতিবার সরোয়ারসহ চার নেতাকে ডেকে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সরোয়ারের সঙ্গে এবার দলের মনোনয়নপ্রাপ্তির দৌড়ে রয়েছেন জেলা দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব আবুল কালাম শাহিন, নগর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন এবং নগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার। এই তিনজনই একসময় মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারী ছিলেন। অবশ্য জিয়া উদ্দিন জাতীয় নির্বাচনে এখন পর্যন্ত মনোনয়ন চাননি। তবে তিনি তাঁর পরিবারের কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
এই তিনজন ছাড়াও এবারের নির্বাচনে সদর আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকও। তাঁকেও বিএনপিতে যুক্ত করেছিলেন সরোয়ার। এখান থেকে মনোনয়ন চান বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহও।
এদিকে সম্প্রতি বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি গঠন এবং নগর বিএনপি নিয়ে সরোয়ার অনুসারীদের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ অনেকে।
সম্প্রতি নগর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক আফরোজা খানম নাসরিন এক কর্মিসভায় মজিবর রহমান সরোয়ারকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘মহানগর বিএনপির দিকে চোখ তুলে তাকালে আমরা রাজপথে জবাব দেব। আপনি উড়ে এসে জুড়ে বসে আমাদের কমিটি ভাঙার পাঁয়তারা করছেন।’
এ বিষয়ে আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, বৃহস্পতিবার কেন্দ্র থেকে ডেকে তাঁদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে কেউ যাতে কথা না বলে, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি জানতে চেয়েছি, সরোয়ার ভাইকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কি না। ডা. জাহিদ বলেছেন, না। তাহলে সরোয়ারের লোকজন কেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহানগর বিএনপি ভাঙার কথা বলছেন? কেনই-বা নির্বাচনের সময় প্রশ্নবিদ্ধ সদর উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি করা হলো?’
নগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে নিজেদের মধ্যে ঐক্য বিনষ্ট না করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি, যারা আন্দোলন-সংগ্রামে ঘরে বসে ছিলেন, দল তাঁদের স্থান দেয়নি। এখন মহানগর বিএনপি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলবে না।’
এদিকে সদ্য গঠিত সদর উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি প্রসঙ্গে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম সাবু বলেন, ‘সদরের আহ্বায়ক নুরুল আমিন জামায়াত নেতা ছিলেন। তিনি এখনো জামায়াতের বিভিন্ন মাদ্রাসা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক। বরিশাল বিএনপিকে চূর্ণবিচূর্ণ করতেই জামায়াত নুরুল আমিনকে বিএনপিতে ঢুকিয়ে দিয়েছে। আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক সালাম রাঢ়ী একসময় আওয়ামী লীগে সক্রিয় ছিলেন। সরোয়ার ভাই এ কমিটি করিয়ে এনেছেন।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নগর বিএনপির একাধিক সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, যুবদল নেতা চুন্নু মৃধা সদর উপজেলার মতো মহানগর বিএনপি ভাঙার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন। সরোয়ারের লোক চুন্নু। মনোনয়ন পাওয়ার আগেই সরোয়ারের অনেক অনুসারী মারামারি, দখলবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। তিনি মিছিল-সমাবেশে দলীয় নেতাদের পাশে ডাকেন না; বরং আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করা অনেককে সরোয়ারের পথসভা, গণসংযোগে দেখা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, কেন্দ্র থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ডেকেছিল। তাঁরা আগামী নির্বাচনে একসঙ্গে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন। তা ছাড়া নির্বাচনী মৌসুমে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ যেন কোনো মন্তব্য না করে, সে বিষয়েও সংযত হতে বলা হয়েছে। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছে, একাধিক মিছিল হচ্ছে। এটা বন্ধ করার জন্য বলা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, সদর উপজেলা কমিটি করার জন্য তাঁর কাছে কেন্দ্র থেকে নাম চেয়েছিল, তিনি প্রস্তাব করেছেন মাত্র। সভায় মহানগরের বিষয়েও কথা হয়েছে। নগর কমিটি না ভাঙলেও যাঁরা বাইরে আছেন, তাঁদের নিয়ে ইউনিটি গড়া যেতে পারে।
এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সভায় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বলা হয়েছে, কারও বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে কথা বলা যাবে না। অভ্যন্তরীণ কলহ রাখা যাবে না। সদর উপজেলা নিয়ে সমালোচনা কতটা যৌক্তিক, তা দেখতে হবে। তবে নির্বাচনের আগে মহানগর বিএনপিতে হাত দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আকন কুদ্দুস বলেন, আগামীকাল সোমবার বরিশাল বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ৬০-৭০ জনকে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভার্চুয়ালি সভা করবেন। ওই সভায় তিনি নেতাদের নির্বাচনী গাইডলাইন দেবেন।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল বিভাগের আসনগুলোর অন্যতম বরিশাল-৫ (সদর ও নগর)। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে চলছে গুরু-শিষ্যের মনস্তাত্ত্বিক লড়াই। অন্যবারের মতো এবারও এখানে আলোচনায় রয়েছেন একাধিকবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার। তবে দলের মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে তাঁর পথ বন্ধুর করে তুলেছেন তাঁরই কয়েকজন শিষ্য। এ নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন সরোয়ার।
তার ওপর সদর উপজেলা কমিটি ভেঙে দেওয়া এবং নগর বিএনপি নিয়ে সরোয়ার অনুসারীদের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ নেতারা। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে গত বৃহস্পতিবার সরোয়ারসহ চার নেতাকে ডেকে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
সরোয়ারের সঙ্গে এবার দলের মনোনয়নপ্রাপ্তির দৌড়ে রয়েছেন জেলা দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব আবুল কালাম শাহিন, নগর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক আফরোজা খানম নাসরিন এবং নগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার। এই তিনজনই একসময় মজিবর রহমান সরোয়ারের অনুসারী ছিলেন। অবশ্য জিয়া উদ্দিন জাতীয় নির্বাচনে এখন পর্যন্ত মনোনয়ন চাননি। তবে তিনি তাঁর পরিবারের কাউকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
এই তিনজন ছাড়াও এবারের নির্বাচনে সদর আসন থেকে মনোনয়ন পাওয়ার প্রত্যাশা করছেন নগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুকও। তাঁকেও বিএনপিতে যুক্ত করেছিলেন সরোয়ার। এখান থেকে মনোনয়ন চান বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহও।
এদিকে সম্প্রতি বরিশাল সদর উপজেলা বিএনপির কমিটি ভেঙে আহ্বায়ক কমিটি গঠন এবং নগর বিএনপি নিয়ে সরোয়ার অনুসারীদের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ অনেকে।
সম্প্রতি নগর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক আফরোজা খানম নাসরিন এক কর্মিসভায় মজিবর রহমান সরোয়ারকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘মহানগর বিএনপির দিকে চোখ তুলে তাকালে আমরা রাজপথে জবাব দেব। আপনি উড়ে এসে জুড়ে বসে আমাদের কমিটি ভাঙার পাঁয়তারা করছেন।’
এ বিষয়ে আফরোজা খানম নাসরিন বলেন, বৃহস্পতিবার কেন্দ্র থেকে ডেকে তাঁদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে কেউ যাতে কথা না বলে, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি জানতে চেয়েছি, সরোয়ার ভাইকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কি না। ডা. জাহিদ বলেছেন, না। তাহলে সরোয়ারের লোকজন কেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মহানগর বিএনপি ভাঙার কথা বলছেন? কেনই-বা নির্বাচনের সময় প্রশ্নবিদ্ধ সদর উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি করা হলো?’
নগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদার বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে নিজেদের মধ্যে ঐক্য বিনষ্ট না করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। আমরা বলেছি, যারা আন্দোলন-সংগ্রামে ঘরে বসে ছিলেন, দল তাঁদের স্থান দেয়নি। এখন মহানগর বিএনপি নিয়ে ষড়যন্ত্র চলবে না।’
এদিকে সদ্য গঠিত সদর উপজেলা আহ্বায়ক কমিটি প্রসঙ্গে উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়াউল ইসলাম সাবু বলেন, ‘সদরের আহ্বায়ক নুরুল আমিন জামায়াত নেতা ছিলেন। তিনি এখনো জামায়াতের বিভিন্ন মাদ্রাসা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালক। বরিশাল বিএনপিকে চূর্ণবিচূর্ণ করতেই জামায়াত নুরুল আমিনকে বিএনপিতে ঢুকিয়ে দিয়েছে। আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক সালাম রাঢ়ী একসময় আওয়ামী লীগে সক্রিয় ছিলেন। সরোয়ার ভাই এ কমিটি করিয়ে এনেছেন।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নগর বিএনপির একাধিক সদস্য আজকের পত্রিকাকে বলেন, যুবদল নেতা চুন্নু মৃধা সদর উপজেলার মতো মহানগর বিএনপি ভাঙার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন। সরোয়ারের লোক চুন্নু। মনোনয়ন পাওয়ার আগেই সরোয়ারের অনেক অনুসারী মারামারি, দখলবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। তিনি মিছিল-সমাবেশে দলীয় নেতাদের পাশে ডাকেন না; বরং আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করা অনেককে সরোয়ারের পথসভা, গণসংযোগে দেখা যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার আজকের পত্রিকাকে বলেন, কেন্দ্র থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের ডেকেছিল। তাঁরা আগামী নির্বাচনে একসঙ্গে কাজ করার তাগিদ দিয়েছেন। তা ছাড়া নির্বাচনী মৌসুমে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ যেন কোনো মন্তব্য না করে, সে বিষয়েও সংযত হতে বলা হয়েছে। একজন আরেকজনের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছে, একাধিক মিছিল হচ্ছে। এটা বন্ধ করার জন্য বলা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, সদর উপজেলা কমিটি করার জন্য তাঁর কাছে কেন্দ্র থেকে নাম চেয়েছিল, তিনি প্রস্তাব করেছেন মাত্র। সভায় মহানগরের বিষয়েও কথা হয়েছে। নগর কমিটি না ভাঙলেও যাঁরা বাইরে আছেন, তাঁদের নিয়ে ইউনিটি গড়া যেতে পারে।
এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, সভায় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের বলা হয়েছে, কারও বিরুদ্ধে কটাক্ষ করে কথা বলা যাবে না। অভ্যন্তরীণ কলহ রাখা যাবে না। সদর উপজেলা নিয়ে সমালোচনা কতটা যৌক্তিক, তা দেখতে হবে। তবে নির্বাচনের আগে মহানগর বিএনপিতে হাত দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আকন কুদ্দুস বলেন, আগামীকাল সোমবার বরিশাল বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ৬০-৭০ জনকে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ভার্চুয়ালি সভা করবেন। ওই সভায় তিনি নেতাদের নির্বাচনী গাইডলাইন দেবেন।

৮৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৬ কিলোমিটার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। চার বছর যেতে না যেতেই সড়কটির বিভিন্ন স্থান দেবে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে উঁচু-নিচু ঢেউ। যেন রীতিমতো জমির আলপথের মতো অবস্থা। এতে সড়কটি দিয়ে যাহনবাহনগুলোকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
১৩ মার্চ ২০২৫
রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরে খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জমি-ফ্ল্যাট দখল, মাদক কারবার, অস্ত্রের মহড়া, মারধরসহ বিভিন্ন অপরাধের পেছনে রয়েছে ১৭টি গ্রুপের সন্ত্রাসী-অপরাধীরা। এই গ্রুপগুলোর নেতৃত্বে আছেন ১৭ জন।
৫ ঘণ্টা আগে
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা সদর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে পাকা সড়কে দাঁড়িয়ে তাকালে ফসলি মাঠ পেরিয়ে ছোট ছোট রঙিন ঘর চোখে পড়ে। আশ্রয়ণের এসব ঘর দেখে যে কারও মন জুড়িয়ে যাবে। তবে দুঃখের বিষয়, গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত এসব ঘরের অধিকাংশই এখন ফাঁকা।
৫ ঘণ্টা আগে
খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপর দীর্ঘ সারিতে আটকে থাকা গাড়ির ফাঁক গলে পড়িমরি করে ছুটছিলেন এক তরুণ। সঙ্গে থাকা লাগেজ থেকে মনে হচ্ছিল, বিদেশগামী যাত্রী। জিজ্ঞেস করতেই তাঁর সঙ্গে থাকা একজন তা নিশ্চিত করলেন। জানালেন, ফ্লাইট ধরা নিয়ে তাঁরা চরম উৎকণ্ঠায় আছেন।
৫ ঘণ্টা আগেআমানুর রহমান রনি, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরে খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জমি-ফ্ল্যাট দখল, মাদক কারবার, অস্ত্রের মহড়া, মারধরসহ বিভিন্ন অপরাধের পেছনে রয়েছে ১৭টি গ্রুপের সন্ত্রাসী-অপরাধীরা। এই গ্রুপগুলোর নেতৃত্বে আছেন ১৭ জন। রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এই ১৭ জন চলেন দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর নির্দেশনায়। পুলিশ, র্যাব ও যৌথ বাহিনীর কর্মকর্তাদের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অপরাধীদের দৌরাত্ম্যে নিরাপত্তা- হীনতায় ভুগছেন বাসিন্দারা। কয়েকটি এলাকায় নিরাপত্তার জন্য গঠিত টহল দলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। অবশ্য পুলিশের দাবি, মোহাম্মদপুর ও আদাবরে অপরাধ আগের চেয়ে কমেছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হলেও কিছুদিন পর জামিনে বেরিয়ে এসে আবার অপরাধে জড়াচ্ছে।
মোহাম্মদপুর ও আদাবরে অপরাধ এখন যেন স্বাভাবিক ঘটনা। এ দুই থানায় দিনে ৮-৯টি ছিনতাইয়ের অভিযোগ আসছে। অবশ্য ঝামেলার ভয়ে বেশির ভাগ ভুক্তভোগীই মামলা করেন না। ছিনতাই হচ্ছে দিনে-রাতে, বিভিন্ন স্পটে। পূর্বশত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ১৩ মাসে খুন হয়েছে ১৮ জন। মাদক কারবারিদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে জেনেভা ক্যাম্পে ৯ মাসে নিহত হয়েছেন আটজন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, মোহাম্মদপুর ও আদাবরে ‘কিশোর গ্যাং’ ও ছিনতাইকারীরা মাঠপর্যায়ে অপরাধ ঘটায়। মাঠের চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করেন ১৭ জন। তাঁরা অপরাধের পুরো নেটওয়ার্ক চালান। তাঁদের চারজন একটি রাজনৈতিক দল ও এর অঙ্গ সংগঠনের পদে ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে তাঁদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাঁরা মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান ওরফে পিচ্চি হেলাল ও ইমনের অনুসারী। তবে তাঁদের মধ্যে পিচ্চি হেলালের অনুসারী বেশি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র জানায়, এই ১৭ জনের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ৫ থেকে ৩০টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। তাঁদের দুজন বর্তমানে কারাগারে, বাকিরা আত্মগোপনে।
দেড় মিনিটে ছিনতাই
বছিলার স্বপ্নধারা হাউজিংয়ের বাসিন্দা শিরিন বেগম জানান, ১ অক্টোবর বিকেলে তিনি একটি সমিতি থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ তুলে মাকে নিয়ে রায়েরবাজার বেড়িবাঁধ হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী ২ নম্বর গেটে কয়েকজন তরুণ তাঁদের কোপ দিয়ে ওই টাকা ও গয়না ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে মাত্র দেড় মিনিটে। আশপাশে পথচারী ও যানবাহন চলাচল করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
শিরিন বেগম আরও বলেন, ওই তরুণেরা পথ আটকে প্রথমে নিজেদের মধ্যে পাতানো মারামারি করে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনি সেদিনই মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। তবে আসামিরা কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই ছিনতাইয়ে জড়িত চক্রটি বর্তমানে কারাগারে থাকা এজাজ ওরফে হেজাজের অনুসারী। তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। এজাজের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও অপহরণের অভিযোগে ১২ থেকে ১৫টি মামলা রয়েছে।
গাবতলী স্লুইসগেট থেকে হাজারীবাগ পর্যন্ত চলে ছিনতাই
গাবতলী স্লুইসগেট থেকে হাজারীবাগ পর্যন্ত বেড়িবাঁধের উভয় পাশে ৮টি নতুন হাউজিং ঘিরে ছিনতাইয়ের বিস্তৃতি ঘটেছে। এই হাউজিংগুলো হলো সুনিবিড় হাউজিং, তুরাগ হাউজিং, নবীনগর হাউজিং, ঢাকা উদ্যান (ওয়াকওয়ে), চন্দ্রিমা মডেল টাউন, চাঁদ উদ্যান, নবোদয় হাউজিং, স্বপ্নধারা ও বছিলা গার্ডেন সিটি। এসব এলাকা থেকে থানা অনেক দূরে। অপরাধীরা ঘটনা ঘটিয়ে কয়েক মিনিটেই পালিয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব হাউজিংয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস। আছে ছোট ছোট বস্তি। অপরাধীরা কয়েক দিন পরপর বাসা বদল করে। রয়েছে কয়েক শ ব্যাটারিচালিত রিকশার গ্যারেজ। এসব এলাকায় মাদক কারবার, ছিনতাই, জমি ও ফ্ল্যাট দখল নৈমিত্তিক ঘটনা।
সবচেয়ে বেশি ছিনতাই হয় ১১টি স্থানে। এগুলো হলো রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী এলাকা, সোনা মিয়ার টেক, বছিলা ফুটপাত, সুনিবিড় হাউজিংয়ের বেড়িবাঁধ ও বালুর মাঠ, তুরাগ হাউজিংয়ের মসজিদ এলাকা, নবীনগর হাউজিংয়ের ১ থেকে ৪ নম্বর সড়ক, ঢাকা উদ্যান ওয়াকওয়ে, চন্দ্রিমা মডেল টাউনের নদীর তীর, চাঁদ উদ্যানের ভাঙা মসজিদ এলাকা, নবোদয় হাউজিংয়ের বাজারসংলগ্ন এলাকা ও জেনেভা ক্যাম্প।
আদাবর ও মোহাম্মদপুর থানার তথ্যে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ৮-৯টি ছিনতাইয়ের অভিযোগ আসে। তবে অনেক ভুক্তভোগী মামলা করেন না।
১৩ মাসে ১৮ খুন
পুলিশ জানায়, মোহাম্মদপুর, আদাবর ও দারুসসালাম এলাকায় গত ৯ মাসে মাদক কারবারের আধিপত্য, গণপিটুনির নামে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ১৮ জন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু আদাবর ও মোহাম্মদপুরে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণের বিরোধে পাঁচজন এবং তথাকথিত ‘গণপিটুনিতে’ ছয়জন নিহত হন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভোরে আদাবরে রিপন সরদার (৪২) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। সেনাবাহিনীর অভিযানে ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনির’ বাহিনীর নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক কারবার চলে। এই দুই দলের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধে রাজুর চাচাতো ভাই রিপন খুন হন।
নিহত রিপনের ছেলে ইমন সরদার দাবি করেন, তাঁর বাবা পেশায় চা-দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জেরে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শুধু জেনেভা ক্যাম্পে বুনিয়া সোহেল ও চুয়া সেলিমের গ্রুপের মধ্যে গত ৯ মাসে ১৯ বার সংঘর্ষ হয়েছে। নিহত হয়েছেন আটজন। এদের মধ্যে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণে একজন নিহত হন। মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ ও ডিবি একাধিকবার অভিযান চালিয়ে দুই শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করলেও মাদক কারবার এবং সংঘর্ষ বন্ধ হয়নি।
এ ছাড়া গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বেড়িবাঁধে সাদেক খান আড়তের সামনে পিচ্চি হেলালের অনুসারীরা নাসির ও মুন্না নামে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় পিচ্চি হেলালসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর মামলা হয়।
‘গণপিটুনির’ নামে হত্যার অভিযোগ
চলতি বছরের ১৫ মে থেকে দারুসসালাম, আদাবর ও মোহাম্মদপুরে গণপিটুনিতে ছয়জন নিহত হয়েছেন। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব ছিল হত্যা।
১৫ মে ভোরে মোহাম্মদপুরের রাকিব ও মিলন নামে দুই তরুণকে ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে ৭-৮ জন মিলে পিটুনি দেয়। রাকিব মারা যান, মিলনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেখানে তখন কোনো ছিনতাই হয়নি।
৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে চন্দ্রিমা মডেল টাউন এলাকায় ফাহিম ও ইয়ামিন নামে দুই তরুণকে পেটানো হয়। মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের ছাত্র ইয়ামিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। ভিডিও ফুটেজ দেখে একটি কারখানার এক শ্রমিক বলেন, তাঁদের কারখানার কয়েকজন শ্রমিক ওই পিটুনিতে জড়িত ছিলেন। ঘটনার পর তাঁরা আত্মগোপনে চলে যান।
ইয়ামিনের বাবা মাহবুব মিয়া বলেন, তাঁর ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে নদীর পাড়ে ঘুরতে গিয়েছিল। হঠাৎ তাদের ধরে পেটানো হয়।
১০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে নবীনগর হাউজিংয়ের সাঁকোরপাড় এলাকায় চার তরুণকে গণপিটুনির ঘটনায় সুজন ওরফে বাবুল ও হানিফ নামের দুজন নিহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুজন ও শরীফকে খামার থেকে তুলে এনে এবং হানিফ ও ফয়সালকে হোটেলের সামনে থেকে এনে স্থানীয় টহল দল পেটায়। নিহত দুজন ও মারধরকারীরা একই এলাকার।
নবীনগর হাউজিং, চন্দ্রিমা মডেল টাউন, ঢাকা উদ্যান ও সুনিবিড় হাউজিংয়ে নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় টহল দল করা হয়েছে। এই দলের সদস্যরা রাতে মোটরসাইকেলে টহল দেন। টহল দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে মারধর ও আটকের অভিযোগ উঠেছে।
নবীনগর হাউজিংয়ের ১২ থেকে ১৬ নম্বর সড়ক পর্যন্ত স্থানীয় বিএনপির সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আক্তার হোসেনের নেতৃত্বে অন্তত ১০ জনের একটি টহল দল কাজ করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এদের মধ্যে কেউ কেউ ছিনতাই ও মাদক কারবারে জড়িত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আক্তার হোসেনের বাসায় গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বাড়িমালিকেরা এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়েছেন। তাই কয়েকজনকে নিয়ে তাঁর স্বামী টহলের ব্যবস্থা করেছেন।
চাঁদা না দিলে গুলি
গত ২৪ মার্চ রাতে মোহাম্মদপুরের শের শাহ সুরি রোডে আবাসন ব্যবসায়ী মনির আহমেদের অফিসে গুলি চালায় সন্ত্রাসীরা। এর আগে বিদেশি নম্বর থেকে ‘ক্যাপ্টেন’ পরিচয়ে তাঁর কাছে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
ডিবি পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জাবেদ ও হাসান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে। জাবেদের মোবাইলে চাঁদা দাবি করা নম্বরটি ‘দ্য কাউন্ট ডাউন’ নামে সেভ করা ছিল। পুলিশ বলেছে, জাবেদ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন এই ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ হোসেন মোড়ল। তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের নাম ব্যবহার করে চাঁদা দাবি করেছিলেন। তবে তদন্তে দেখা গেছে, জাহিদ মোড়ল মূলত পিচ্চি হেলালের অনুসারী। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার দুজনের একাধিক ছবি পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে জাহিদ মোড়লের বক্তব্য জানতে মোবাইলে ফোন করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
পুলিশ যা বলছে
পুলিশ বলছে, মোহাম্মদপুর ও আদাবরে আগের চেয়ে অপরাধ কমেছে। আগে প্রতি মাসে ২৫০টি মামলা হতো, এখন কমে ১৫০-এ নেমেছে। অপরাধীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে। তবে জামিনে বের হয়ে আবার একই অপরাধে জড়াচ্ছে।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান বলেন, ‘মোহাম্মদপুর অনেক বড় এলাকা। এখানে জেনেভা ক্যাম্প এবং বেশ কিছু বস্তি রয়েছে। এ জন্য কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন অপরাধের গ্রাফ নিচের দিকে। এটা আরও কমে আসবে।’

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরে খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জমি-ফ্ল্যাট দখল, মাদক কারবার, অস্ত্রের মহড়া, মারধরসহ বিভিন্ন অপরাধের পেছনে রয়েছে ১৭টি গ্রুপের সন্ত্রাসী-অপরাধীরা। এই গ্রুপগুলোর নেতৃত্বে আছেন ১৭ জন। রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এই ১৭ জন চলেন দুই শীর্ষ সন্ত্রাসীর নির্দেশনায়। পুলিশ, র্যাব ও যৌথ বাহিনীর কর্মকর্তাদের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অপরাধীদের দৌরাত্ম্যে নিরাপত্তা- হীনতায় ভুগছেন বাসিন্দারা। কয়েকটি এলাকায় নিরাপত্তার জন্য গঠিত টহল দলের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। অবশ্য পুলিশের দাবি, মোহাম্মদপুর ও আদাবরে অপরাধ আগের চেয়ে কমেছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হলেও কিছুদিন পর জামিনে বেরিয়ে এসে আবার অপরাধে জড়াচ্ছে।
মোহাম্মদপুর ও আদাবরে অপরাধ এখন যেন স্বাভাবিক ঘটনা। এ দুই থানায় দিনে ৮-৯টি ছিনতাইয়ের অভিযোগ আসছে। অবশ্য ঝামেলার ভয়ে বেশির ভাগ ভুক্তভোগীই মামলা করেন না। ছিনতাই হচ্ছে দিনে-রাতে, বিভিন্ন স্পটে। পূর্বশত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ১৩ মাসে খুন হয়েছে ১৮ জন। মাদক কারবারিদের দুই পক্ষের সংঘর্ষে জেনেভা ক্যাম্পে ৯ মাসে নিহত হয়েছেন আটজন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, মোহাম্মদপুর ও আদাবরে ‘কিশোর গ্যাং’ ও ছিনতাইকারীরা মাঠপর্যায়ে অপরাধ ঘটায়। মাঠের চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করেন ১৭ জন। তাঁরা অপরাধের পুরো নেটওয়ার্ক চালান। তাঁদের চারজন একটি রাজনৈতিক দল ও এর অঙ্গ সংগঠনের পদে ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে তাঁদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাঁরা মোহাম্মদপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমামুল হাসান ওরফে পিচ্চি হেলাল ও ইমনের অনুসারী। তবে তাঁদের মধ্যে পিচ্চি হেলালের অনুসারী বেশি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র জানায়, এই ১৭ জনের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ৫ থেকে ৩০টি পর্যন্ত মামলা রয়েছে। তাঁদের দুজন বর্তমানে কারাগারে, বাকিরা আত্মগোপনে।
দেড় মিনিটে ছিনতাই
বছিলার স্বপ্নধারা হাউজিংয়ের বাসিন্দা শিরিন বেগম জানান, ১ অক্টোবর বিকেলে তিনি একটি সমিতি থেকে ১ লাখ টাকা ঋণ তুলে মাকে নিয়ে রায়েরবাজার বেড়িবাঁধ হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। শহীদ বুদ্ধিজীবী ২ নম্বর গেটে কয়েকজন তরুণ তাঁদের কোপ দিয়ে ওই টাকা ও গয়না ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটে মাত্র দেড় মিনিটে। আশপাশে পথচারী ও যানবাহন চলাচল করলেও কেউ এগিয়ে আসেনি।
শিরিন বেগম আরও বলেন, ওই তরুণেরা পথ আটকে প্রথমে নিজেদের মধ্যে পাতানো মারামারি করে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনি সেদিনই মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। তবে আসামিরা কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই ছিনতাইয়ে জড়িত চক্রটি বর্তমানে কারাগারে থাকা এজাজ ওরফে হেজাজের অনুসারী। তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। এজাজের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি ও অপহরণের অভিযোগে ১২ থেকে ১৫টি মামলা রয়েছে।
গাবতলী স্লুইসগেট থেকে হাজারীবাগ পর্যন্ত চলে ছিনতাই
গাবতলী স্লুইসগেট থেকে হাজারীবাগ পর্যন্ত বেড়িবাঁধের উভয় পাশে ৮টি নতুন হাউজিং ঘিরে ছিনতাইয়ের বিস্তৃতি ঘটেছে। এই হাউজিংগুলো হলো সুনিবিড় হাউজিং, তুরাগ হাউজিং, নবীনগর হাউজিং, ঢাকা উদ্যান (ওয়াকওয়ে), চন্দ্রিমা মডেল টাউন, চাঁদ উদ্যান, নবোদয় হাউজিং, স্বপ্নধারা ও বছিলা গার্ডেন সিটি। এসব এলাকা থেকে থানা অনেক দূরে। অপরাধীরা ঘটনা ঘটিয়ে কয়েক মিনিটেই পালিয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব হাউজিংয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাস। আছে ছোট ছোট বস্তি। অপরাধীরা কয়েক দিন পরপর বাসা বদল করে। রয়েছে কয়েক শ ব্যাটারিচালিত রিকশার গ্যারেজ। এসব এলাকায় মাদক কারবার, ছিনতাই, জমি ও ফ্ল্যাট দখল নৈমিত্তিক ঘটনা।
সবচেয়ে বেশি ছিনতাই হয় ১১টি স্থানে। এগুলো হলো রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী এলাকা, সোনা মিয়ার টেক, বছিলা ফুটপাত, সুনিবিড় হাউজিংয়ের বেড়িবাঁধ ও বালুর মাঠ, তুরাগ হাউজিংয়ের মসজিদ এলাকা, নবীনগর হাউজিংয়ের ১ থেকে ৪ নম্বর সড়ক, ঢাকা উদ্যান ওয়াকওয়ে, চন্দ্রিমা মডেল টাউনের নদীর তীর, চাঁদ উদ্যানের ভাঙা মসজিদ এলাকা, নবোদয় হাউজিংয়ের বাজারসংলগ্ন এলাকা ও জেনেভা ক্যাম্প।
আদাবর ও মোহাম্মদপুর থানার তথ্যে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে ৮-৯টি ছিনতাইয়ের অভিযোগ আসে। তবে অনেক ভুক্তভোগী মামলা করেন না।
১৩ মাসে ১৮ খুন
পুলিশ জানায়, মোহাম্মদপুর, আদাবর ও দারুসসালাম এলাকায় গত ৯ মাসে মাদক কারবারের আধিপত্য, গণপিটুনির নামে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন ঘটনায় অন্তত ১৮ জন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু আদাবর ও মোহাম্মদপুরে মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণের বিরোধে পাঁচজন এবং তথাকথিত ‘গণপিটুনিতে’ ছয়জন নিহত হন।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর ভোরে আদাবরে রিপন সরদার (৪২) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। সেনাবাহিনীর অভিযানে ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনির’ বাহিনীর নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক কারবার চলে। এই দুই দলের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধে রাজুর চাচাতো ভাই রিপন খুন হন।
নিহত রিপনের ছেলে ইমন সরদার দাবি করেন, তাঁর বাবা পেশায় চা-দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জেরে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে শুধু জেনেভা ক্যাম্পে বুনিয়া সোহেল ও চুয়া সেলিমের গ্রুপের মধ্যে গত ৯ মাসে ১৯ বার সংঘর্ষ হয়েছে। নিহত হয়েছেন আটজন। এদের মধ্যে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ভোররাতে সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণে একজন নিহত হন। মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ ও ডিবি একাধিকবার অভিযান চালিয়ে দুই শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করলেও মাদক কারবার এবং সংঘর্ষ বন্ধ হয়নি।
এ ছাড়া গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বেড়িবাঁধে সাদেক খান আড়তের সামনে পিচ্চি হেলালের অনুসারীরা নাসির ও মুন্না নামে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় পিচ্চি হেলালসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর মামলা হয়।
‘গণপিটুনির’ নামে হত্যার অভিযোগ
চলতি বছরের ১৫ মে থেকে দারুসসালাম, আদাবর ও মোহাম্মদপুরে গণপিটুনিতে ছয়জন নিহত হয়েছেন। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব ছিল হত্যা।
১৫ মে ভোরে মোহাম্মদপুরের রাকিব ও মিলন নামে দুই তরুণকে ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে ৭-৮ জন মিলে পিটুনি দেয়। রাকিব মারা যান, মিলনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সেখানে তখন কোনো ছিনতাই হয়নি।
৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে চন্দ্রিমা মডেল টাউন এলাকায় ফাহিম ও ইয়ামিন নামে দুই তরুণকে পেটানো হয়। মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের ছাত্র ইয়ামিন ঘটনাস্থলেই মারা যান। ভিডিও ফুটেজ দেখে একটি কারখানার এক শ্রমিক বলেন, তাঁদের কারখানার কয়েকজন শ্রমিক ওই পিটুনিতে জড়িত ছিলেন। ঘটনার পর তাঁরা আত্মগোপনে চলে যান।
ইয়ামিনের বাবা মাহবুব মিয়া বলেন, তাঁর ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে নদীর পাড়ে ঘুরতে গিয়েছিল। হঠাৎ তাদের ধরে পেটানো হয়।
১০ সেপ্টেম্বর ভোররাতে নবীনগর হাউজিংয়ের সাঁকোরপাড় এলাকায় চার তরুণকে গণপিটুনির ঘটনায় সুজন ওরফে বাবুল ও হানিফ নামের দুজন নিহত হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুজন ও শরীফকে খামার থেকে তুলে এনে এবং হানিফ ও ফয়সালকে হোটেলের সামনে থেকে এনে স্থানীয় টহল দল পেটায়। নিহত দুজন ও মারধরকারীরা একই এলাকার।
নবীনগর হাউজিং, চন্দ্রিমা মডেল টাউন, ঢাকা উদ্যান ও সুনিবিড় হাউজিংয়ে নিরাপত্তার জন্য স্থানীয় টহল দল করা হয়েছে। এই দলের সদস্যরা রাতে মোটরসাইকেলে টহল দেন। টহল দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে মারধর ও আটকের অভিযোগ উঠেছে।
নবীনগর হাউজিংয়ের ১২ থেকে ১৬ নম্বর সড়ক পর্যন্ত স্থানীয় বিএনপির সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক আক্তার হোসেনের নেতৃত্বে অন্তত ১০ জনের একটি টহল দল কাজ করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এদের মধ্যে কেউ কেউ ছিনতাই ও মাদক কারবারে জড়িত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আক্তার হোসেনের বাসায় গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, বাড়িমালিকেরা এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়েছেন। তাই কয়েকজনকে নিয়ে তাঁর স্বামী টহলের ব্যবস্থা করেছেন।
চাঁদা না দিলে গুলি
গত ২৪ মার্চ রাতে মোহাম্মদপুরের শের শাহ সুরি রোডে আবাসন ব্যবসায়ী মনির আহমেদের অফিসে গুলি চালায় সন্ত্রাসীরা। এর আগে বিদেশি নম্বর থেকে ‘ক্যাপ্টেন’ পরিচয়ে তাঁর কাছে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
ডিবি পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জাবেদ ও হাসান নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করে। জাবেদের মোবাইলে চাঁদা দাবি করা নম্বরটি ‘দ্য কাউন্ট ডাউন’ নামে সেভ করা ছিল। পুলিশ বলেছে, জাবেদ জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন এই ঘটনার নেপথ্যে ছিলেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ হোসেন মোড়ল। তিনি শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের নাম ব্যবহার করে চাঁদা দাবি করেছিলেন। তবে তদন্তে দেখা গেছে, জাহিদ মোড়ল মূলত পিচ্চি হেলালের অনুসারী। তাঁর সঙ্গে গ্রেপ্তার দুজনের একাধিক ছবি পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে জাহিদ মোড়লের বক্তব্য জানতে মোবাইলে ফোন করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়।
পুলিশ যা বলছে
পুলিশ বলছে, মোহাম্মদপুর ও আদাবরে আগের চেয়ে অপরাধ কমেছে। আগে প্রতি মাসে ২৫০টি মামলা হতো, এখন কমে ১৫০-এ নেমেছে। অপরাধীরা গ্রেপ্তার হচ্ছে। তবে জামিনে বের হয়ে আবার একই অপরাধে জড়াচ্ছে।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান বলেন, ‘মোহাম্মদপুর অনেক বড় এলাকা। এখানে জেনেভা ক্যাম্প এবং বেশ কিছু বস্তি রয়েছে। এ জন্য কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। এখন অপরাধের গ্রাফ নিচের দিকে। এটা আরও কমে আসবে।’

৮৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৬ কিলোমিটার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। চার বছর যেতে না যেতেই সড়কটির বিভিন্ন স্থান দেবে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে উঁচু-নিচু ঢেউ। যেন রীতিমতো জমির আলপথের মতো অবস্থা। এতে সড়কটি দিয়ে যাহনবাহনগুলোকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
১৩ মার্চ ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল বিভাগের আসনগুলোর অন্যতম বরিশাল-৫ (সদর ও নগর)। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে চলছে গুরু-শিষ্যের মনস্তাত্ত্বিক লড়াই। অন্যবারের মতো এবারও এখানে আলোচনায় রয়েছেন একাধিকবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার।
৩ মিনিট আগে
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা সদর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে পাকা সড়কে দাঁড়িয়ে তাকালে ফসলি মাঠ পেরিয়ে ছোট ছোট রঙিন ঘর চোখে পড়ে। আশ্রয়ণের এসব ঘর দেখে যে কারও মন জুড়িয়ে যাবে। তবে দুঃখের বিষয়, গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত এসব ঘরের অধিকাংশই এখন ফাঁকা।
৫ ঘণ্টা আগে
খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপর দীর্ঘ সারিতে আটকে থাকা গাড়ির ফাঁক গলে পড়িমরি করে ছুটছিলেন এক তরুণ। সঙ্গে থাকা লাগেজ থেকে মনে হচ্ছিল, বিদেশগামী যাত্রী। জিজ্ঞেস করতেই তাঁর সঙ্গে থাকা একজন তা নিশ্চিত করলেন। জানালেন, ফ্লাইট ধরা নিয়ে তাঁরা চরম উৎকণ্ঠায় আছেন।
৫ ঘণ্টা আগেফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা সদর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে পাকা সড়কে দাঁড়িয়ে তাকালে ফসলি মাঠ পেরিয়ে ছোট ছোট রঙিন ঘর চোখে পড়ে। আশ্রয়ণের এসব ঘর দেখে যে কারও মন জুড়িয়ে যাবে। তবে দুঃখের বিষয়, গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত এসব ঘরের অধিকাংশই এখন ফাঁকা। সুবিধাভোগীরা না থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আশ্রয়ণ থেকে মূল সড়কে যাওয়ার রাস্তা নেই। নেই মসজিদ বা প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। তাই অনেকেই বরাদ্দ পেয়েও থাকছেন না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘর বরাদ্দে স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক প্রভাব ও অনিয়ম হয়েছে। অনেকে ঘর বরাদ্দ নিয়েও অন্যত্র বসবাস করছেন; কেউ কেউ ঘর অন্যের কাছে দেখাশোনার জন্য দিয়ে গেছেন। কিছু ঘরে হাঁস-মুরগি বা গরু-ছাগল পালন ছাড়া আর কোনো ব্যবহার নেই। বরাদ্দ পাওয়া বেশির ভাগ পরিবার সেখানে থাকে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত সরকারের আমলে ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের’ আওতায় ফুলবাড়ী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে চার ধাপে নির্মিত হয় ১ হাজার ২৭০টি বাড়ি। এতে ব্যয় হয় ২৫ কোটি ৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ভূমিহীন পরিবারকে দুই শতক জমির ওপর দুই কক্ষবিশিষ্ট আধপাকা ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি ঘরের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ লাখ ৯০ হাজার, তৃতীয় পর্যায়ে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৫০০ এবং চতুর্থ পর্যায়ে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এভাবে চার ধাপে নির্মিত ঘরগুলো এখন অযত্নে পড়ে আছে।
আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামে ১৬৫টি বাড়ি নির্মিত হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৫০টি পরিবার বসবাস করছে, বাকিগুলোতে ঝুলছে তালা। সেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আশ্রয়ণ গ্রাম থেকে মূল সড়কে যাওয়ার রাস্তা নেই। যা আছে, তা কাঁচা ও কাদাময়, বিশেষ করে বর্ষায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। নেই মসজিদ বা প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। তাই অনেকেই বরাদ্দ পেলেও এখানে থাকতে আগ্রহী নয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ আশ্রয়ণে ঘর বরাদ্দ দেওয়ার সময় সঠিক যাচাই-বাছাই করা হয়নি। নির্মাণের পর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের স্থানগুলোতে যাতায়াত ও জীবিকার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাও নেই। নেই মসজিদ। সুপেয় পানির সমস্যাও প্রকট। এসব সমস্যা বাসিন্দাদের জীবনযাপন কঠিন করে তুলেছে।
বাসুদেবপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘিরে গড়ে তোলা সমবায় সমিতির সদস্য হানিফ শেখ, হাফিজুল ইসলাম ও জাকির হোসেন বলেন, ‘১৬৫টি ঘরের মধ্যে প্রায় ১১৫টি খালি। মালিক আছেন, কিন্তু তাঁরা আসেন না।’
আশ্রয়ণের বাসিন্দা মানিক মিয়া বলেন, ‘এখানে বিভিন্ন এলাকার মানুষ বাড়ি পেয়েছেন। তবে অনেকে স্থায়ীভাবে থাকতে চান না। রাস্তা ও মসজিদ নেই। এ ছাড়া এখানে কোনো কাজকর্ম নেই। আমাদের অনেক কষ্ট হয়।’
উপজেলার খয়েরবাড়ি ইউনিয়নের বালুপাড়া আবাসনে ২৪৪টি বাড়ি রয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ১০০টি ঘরে মানুষ বসবাস করছে। বাকিগুলো খালি। ওই আশ্রয়ণের বাসিন্দা মহসিনা ও আমজাদ বলেন, ‘অনেকেই ফুলবাড়ী পৌর এলাকার মানুষ। এখানে কোনো কাজ না থাকায় তাঁরা থাকেন না। মাঝে মাঝে এসে ঘর দেখে যান।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বালুপাড়া আবাসনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘১০০টিতে বাসিন্দা থাকলেও এর মধ্যে অনেক বাড়ির মূল মালিক নেই। কিছু বাড়ি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায় গোপনে বিক্রি বা হস্তান্তর হয়েছে। আবার কেউ কেউ বছরে একবার এসে দখল নিশ্চিত করে চলে যান।’
অন্যান্য আশ্রয়ণেও একই চিত্র। উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের পুকুরি মোড় আবাসনে ৮টি বাড়ির মধ্যে মাত্র ৩টিতে পরিবার থাকছে। এলুয়াড়ী ইউনিয়নের শিবপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩৪টি ঘরের মধ্যে ৫টি বাদে সব ফাঁকা। বাসিন্দারা জানান, কেউ কেউ মৌসুমভিত্তিক কাজের জন্য ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকায় চলে যান, আবার ফিরে আসেন।
এ বিষয়ে উপজেলার খয়েরবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শামীম হোসেন বলেন, ‘আমার জানামতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতে অনেকেই বসবাস করেন না। কেউ অন্যত্র কাজ করেন, অন্যকে থাকার জন্য দিয়ে চলে গেছেন। তদন্ত করে এসব ঘর প্রকৃত ভূমিহীনদের কাছে হস্তান্তর করা গেলে তারা উপকৃত হবে।’
সার্বিক বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসাহাক আলী বলেন, ‘অতীতে যাঁরা ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন, তাঁরা যাচাই-বাছাই করেই দিয়েছেন। তবে কিছু লোক হয়তো গার্মেন্টসে কাজ করে বা কাজের জন্য অন্যত্র গেছে, তাই ফাঁকা আছে। কেউ জমি থাকার পরেও ঘর বরাদ্দ নিয়ে থাকার তথ্য পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা সদর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে পাকা সড়কে দাঁড়িয়ে তাকালে ফসলি মাঠ পেরিয়ে ছোট ছোট রঙিন ঘর চোখে পড়ে। আশ্রয়ণের এসব ঘর দেখে যে কারও মন জুড়িয়ে যাবে। তবে দুঃখের বিষয়, গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত এসব ঘরের অধিকাংশই এখন ফাঁকা। সুবিধাভোগীরা না থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, আশ্রয়ণ থেকে মূল সড়কে যাওয়ার রাস্তা নেই। নেই মসজিদ বা প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। তাই অনেকেই বরাদ্দ পেয়েও থাকছেন না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘর বরাদ্দে স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক প্রভাব ও অনিয়ম হয়েছে। অনেকে ঘর বরাদ্দ নিয়েও অন্যত্র বসবাস করছেন; কেউ কেউ ঘর অন্যের কাছে দেখাশোনার জন্য দিয়ে গেছেন। কিছু ঘরে হাঁস-মুরগি বা গরু-ছাগল পালন ছাড়া আর কোনো ব্যবহার নেই। বরাদ্দ পাওয়া বেশির ভাগ পরিবার সেখানে থাকে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত সরকারের আমলে ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের’ আওতায় ফুলবাড়ী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে চার ধাপে নির্মিত হয় ১ হাজার ২৭০টি বাড়ি। এতে ব্যয় হয় ২৫ কোটি ৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। প্রকল্পের আওতায় প্রতিটি ভূমিহীন পরিবারকে দুই শতক জমির ওপর দুই কক্ষবিশিষ্ট আধপাকা ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি ঘরের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ লাখ ৯০ হাজার, তৃতীয় পর্যায়ে ২ লাখ ৬৪ হাজার ৫০০ এবং চতুর্থ পর্যায়ে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এভাবে চার ধাপে নির্মিত ঘরগুলো এখন অযত্নে পড়ে আছে।
আলাদীপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামে ১৬৫টি বাড়ি নির্মিত হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৫০টি পরিবার বসবাস করছে, বাকিগুলোতে ঝুলছে তালা। সেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আশ্রয়ণ গ্রাম থেকে মূল সড়কে যাওয়ার রাস্তা নেই। যা আছে, তা কাঁচা ও কাদাময়, বিশেষ করে বর্ষায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। নেই মসজিদ বা প্রয়োজনীয় অবকাঠামো। তাই অনেকেই বরাদ্দ পেলেও এখানে থাকতে আগ্রহী নয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধিকাংশ আশ্রয়ণে ঘর বরাদ্দ দেওয়ার সময় সঠিক যাচাই-বাছাই করা হয়নি। নির্মাণের পর নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাব রয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের স্থানগুলোতে যাতায়াত ও জীবিকার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাও নেই। নেই মসজিদ। সুপেয় পানির সমস্যাও প্রকট। এসব সমস্যা বাসিন্দাদের জীবনযাপন কঠিন করে তুলেছে।
বাসুদেবপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প ঘিরে গড়ে তোলা সমবায় সমিতির সদস্য হানিফ শেখ, হাফিজুল ইসলাম ও জাকির হোসেন বলেন, ‘১৬৫টি ঘরের মধ্যে প্রায় ১১৫টি খালি। মালিক আছেন, কিন্তু তাঁরা আসেন না।’
আশ্রয়ণের বাসিন্দা মানিক মিয়া বলেন, ‘এখানে বিভিন্ন এলাকার মানুষ বাড়ি পেয়েছেন। তবে অনেকে স্থায়ীভাবে থাকতে চান না। রাস্তা ও মসজিদ নেই। এ ছাড়া এখানে কোনো কাজকর্ম নেই। আমাদের অনেক কষ্ট হয়।’
উপজেলার খয়েরবাড়ি ইউনিয়নের বালুপাড়া আবাসনে ২৪৪টি বাড়ি রয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, ১০০টি ঘরে মানুষ বসবাস করছে। বাকিগুলো খালি। ওই আশ্রয়ণের বাসিন্দা মহসিনা ও আমজাদ বলেন, ‘অনেকেই ফুলবাড়ী পৌর এলাকার মানুষ। এখানে কোনো কাজ না থাকায় তাঁরা থাকেন না। মাঝে মাঝে এসে ঘর দেখে যান।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বালুপাড়া আবাসনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘১০০টিতে বাসিন্দা থাকলেও এর মধ্যে অনেক বাড়ির মূল মালিক নেই। কিছু বাড়ি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায় গোপনে বিক্রি বা হস্তান্তর হয়েছে। আবার কেউ কেউ বছরে একবার এসে দখল নিশ্চিত করে চলে যান।’
অন্যান্য আশ্রয়ণেও একই চিত্র। উপজেলার কাজিহাল ইউনিয়নের পুকুরি মোড় আবাসনে ৮টি বাড়ির মধ্যে মাত্র ৩টিতে পরিবার থাকছে। এলুয়াড়ী ইউনিয়নের শিবপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৩৪টি ঘরের মধ্যে ৫টি বাদে সব ফাঁকা। বাসিন্দারা জানান, কেউ কেউ মৌসুমভিত্তিক কাজের জন্য ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকায় চলে যান, আবার ফিরে আসেন।
এ বিষয়ে উপজেলার খয়েরবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শামীম হোসেন বলেন, ‘আমার জানামতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলোতে অনেকেই বসবাস করেন না। কেউ অন্যত্র কাজ করেন, অন্যকে থাকার জন্য দিয়ে চলে গেছেন। তদন্ত করে এসব ঘর প্রকৃত ভূমিহীনদের কাছে হস্তান্তর করা গেলে তারা উপকৃত হবে।’
সার্বিক বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসাহাক আলী বলেন, ‘অতীতে যাঁরা ঘর বরাদ্দ দিয়েছেন, তাঁরা যাচাই-বাছাই করেই দিয়েছেন। তবে কিছু লোক হয়তো গার্মেন্টসে কাজ করে বা কাজের জন্য অন্যত্র গেছে, তাই ফাঁকা আছে। কেউ জমি থাকার পরেও ঘর বরাদ্দ নিয়ে থাকার তথ্য পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

৮৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৬ কিলোমিটার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। চার বছর যেতে না যেতেই সড়কটির বিভিন্ন স্থান দেবে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে উঁচু-নিচু ঢেউ। যেন রীতিমতো জমির আলপথের মতো অবস্থা। এতে সড়কটি দিয়ে যাহনবাহনগুলোকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
১৩ মার্চ ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল বিভাগের আসনগুলোর অন্যতম বরিশাল-৫ (সদর ও নগর)। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে চলছে গুরু-শিষ্যের মনস্তাত্ত্বিক লড়াই। অন্যবারের মতো এবারও এখানে আলোচনায় রয়েছেন একাধিকবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার।
৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরে খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জমি-ফ্ল্যাট দখল, মাদক কারবার, অস্ত্রের মহড়া, মারধরসহ বিভিন্ন অপরাধের পেছনে রয়েছে ১৭টি গ্রুপের সন্ত্রাসী-অপরাধীরা। এই গ্রুপগুলোর নেতৃত্বে আছেন ১৭ জন।
৫ ঘণ্টা আগে
খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপর দীর্ঘ সারিতে আটকে থাকা গাড়ির ফাঁক গলে পড়িমরি করে ছুটছিলেন এক তরুণ। সঙ্গে থাকা লাগেজ থেকে মনে হচ্ছিল, বিদেশগামী যাত্রী। জিজ্ঞেস করতেই তাঁর সঙ্গে থাকা একজন তা নিশ্চিত করলেন। জানালেন, ফ্লাইট ধরা নিয়ে তাঁরা চরম উৎকণ্ঠায় আছেন।
৫ ঘণ্টা আগেসৈয়দ ঋয়াদ ও জয়নাল আবেদীন, ঢাকা

খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপর দীর্ঘ সারিতে আটকে থাকা গাড়ির ফাঁক গলে পড়িমরি করে ছুটছিলেন এক তরুণ। সঙ্গে থাকা লাগেজ থেকে মনে হচ্ছিল, বিদেশগামী যাত্রী। জিজ্ঞেস করতেই তাঁর সঙ্গে থাকা একজন তা নিশ্চিত করলেন। জানালেন, ফ্লাইট ধরা নিয়ে তাঁরা চরম উৎকণ্ঠায় আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখেই সড়কে পানি থাকা এক গর্তে পিকআপের চাকা ফেঁসে গিয়ে এই পরিস্থিতি। রাজধানীজুড়ে নানা কারণে সড়কে এমন জনভোগান্তি নৈমিত্তিক বিষয়। এতে লাখো নাগরিকের মানসিক দুর্ভোগের পাশাপাশি অসংখ্য কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়ে জাতীয় অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে বিস্তর।
খানাখন্দ, পরিষেবার জন্য সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়ি, যত্রতত্র পার্কিং, হকার-দোকানিদের দখল ইত্যাদি কারণে ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়কে চলাচল করা দুর্ভোগের আরেক নাম হয়ে উঠেছে। যাত্রাবাড়ী থেকে উত্তরা ছাড়িয়ে অনেক দূর পর্যন্ত সড়কপথের স্থানে স্থানে এই চিত্র দেখা যাবে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতায় থাকা ডেমরা, মাতুয়াইল, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, মানিকনগর, মুগদা, কমলাপুর, মালিবাগ, রামপুরা, বাসাবো, মান্ডা এবং উত্তর সিটির (ডিএনসিসি) খিলখেত, উত্তরা, আবদুল্লাহপুর, আশকোনা, উত্তরখান, দক্ষিণখান, কাওলাসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
আশপাশের বড় সড়কগুলো ছাড়াও ডিএসসিসির ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাতুয়াইল মুসলিম নগর বাদশা মিয়া সড়ক, ডেমরা বালুরঘাট থেকে ডেমরা বাজার লতিফ বাওয়ানী জুট মিলের পেছনের সড়ক, ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ডেমরা থানা হয়ে ৪ নম্বর গেট, ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়ক, পাইটি ওয়াসা রোড খানাখন্দে ভরা। যানজট ও দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। সংস্কারকাজ চলছে ঢিমেতালে। ডেমরার ডগাইর শাপলা চত্বর থেকে পশ্চিম সানারপাড় পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তার সংস্কারকাজের মন্থর গতিতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে এলাকাবাসী।
লতিফ বাওয়ানী জুট মিলের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বললেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি ভাঙাচোরা। সামান্য বৃষ্টিতেও দুর্ভোগ কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
মানিক নগর-মুগদা ওয়াসা রোড, বাসাবো, নন্দীপাড়া এবং গোড়ানের অনেক সড়কের অবস্থাও একই রকম। দীর্ঘ সময় পার হলেও ড্রেনেজ ও সড়ক মেরামতের কাজ শেষ হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, সিটি করপোরেশন ও ঠিকাদারদের অবহেলায় দক্ষিণের ৬, ৭১, ৭২—এই তিনটি ওয়ার্ডের লক্ষাধিক মানুষ রয়েছে চরম বিপাকে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় থাকা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে রামপুরা সড়কটির অবস্থাও খুব খারাপ।
ঢাকা মহানগর উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতায় থাকা ৫৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে গুলশান, বনানী, বারিধারার মতো অভিজাত আবাসিক ও ডিপ্লোমেটিক এলাকা ছাড়া অনেক সড়ক নাজুক। ওয়ার্ডভিত্তিক ছোট ছোট সড়কের পাশাপাশি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরা থেকে আবদুল্লাহপুর হয়ে ধউর বেড়িবাঁধ পর্যন্ত রাস্তাও ভালো নয়।
দক্ষিণখানের কসাইবাড়ী রেলগেট থেকে উত্তরখানের কাঁচকুড়া বাজার পর্যন্ত, দোবাদিয়া ব্রিজ থেকে কাঁচকুড়া বাজার পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য খুঁড়ে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন।
কাঁচকুড়ার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রাজধানীতে বাস করি। এটা ছবি দেখিয়ে কাউকে বললে বিশ্বাসই করবে না।’
এ ছাড়া দক্ষিণখানের গণকবর স্থান সড়ক, আশকোনা থেকে কাওলা সংযোগ সড়ক, খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ-২ এর সরকারবাড়ী থেকে নাগরিক টিভি-সংলগ্ন সড়ক হয় ভাঙাচোরা কিংবা ধীরগতিতে সংস্কারকাজ চলছে।
ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফারুক হাসান মো. আল মাসুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইউটিলিটি লাইন, অবৈধ দখলের কারণে কাজের ধীরগতি থাকতে পারে। গড়ে ৩০ শতাংশ জনবল নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়। ঠিকাদারের গাফিলতি থাকলে চুক্তি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেসব সড়কে পানি জমে থাকে, সেগুলোর কাজ করছি। গুলশান লেক এলাকায় হাঁটা যেত না, আমরা সেই কাজটা করেছি। তেজগাঁও, উত্তরখান, দক্ষিণখানেও কাজ চলছে।’
এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জোন-৮-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহেব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টেন্ডার হয়ে যাওয়া সড়কের কাজ চলছে। অন্যান্য রাস্তার বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজেটের স্বল্পতায় আমরা অনেক কাজ করতে পারছি না। নির্বাচিত সরকার না থাকার কারণেও কিছুটা প্রভাব পড়েছে। চেষ্টা করছি, সংস্কারকাজগুলো যেন আটকে না থাকে।’
ঢাকা জেলা সড়ক ও জনপথ দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘ঢাকা নগরে আমাদের অল্প কিছু সড়ক আছে। ডেমরার রাস্তাটি কিছুটা খারাপ আছে। ইটের সোলিং করা আছে। শিগগির মেরামতের কাজে হাত দেব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি ও নগর-পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘নগরের সড়কে বর্তমানে যে সংকট, তা মূলত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি না থাকার কারণে হচ্ছে। আন্তদপ্তর সমন্বয়হীনতার সমাধানও করতে হবে।’

খিলগাঁও ফ্লাইওভারের ওপর দীর্ঘ সারিতে আটকে থাকা গাড়ির ফাঁক গলে পড়িমরি করে ছুটছিলেন এক তরুণ। সঙ্গে থাকা লাগেজ থেকে মনে হচ্ছিল, বিদেশগামী যাত্রী। জিজ্ঞেস করতেই তাঁর সঙ্গে থাকা একজন তা নিশ্চিত করলেন। জানালেন, ফ্লাইট ধরা নিয়ে তাঁরা চরম উৎকণ্ঠায় আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখেই সড়কে পানি থাকা এক গর্তে পিকআপের চাকা ফেঁসে গিয়ে এই পরিস্থিতি। রাজধানীজুড়ে নানা কারণে সড়কে এমন জনভোগান্তি নৈমিত্তিক বিষয়। এতে লাখো নাগরিকের মানসিক দুর্ভোগের পাশাপাশি অসংখ্য কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়ে জাতীয় অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে বিস্তর।
খানাখন্দ, পরিষেবার জন্য সমন্বয়হীন খোঁড়াখুঁড়ি, যত্রতত্র পার্কিং, হকার-দোকানিদের দখল ইত্যাদি কারণে ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়কে চলাচল করা দুর্ভোগের আরেক নাম হয়ে উঠেছে। যাত্রাবাড়ী থেকে উত্তরা ছাড়িয়ে অনেক দূর পর্যন্ত সড়কপথের স্থানে স্থানে এই চিত্র দেখা যাবে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতায় থাকা ডেমরা, মাতুয়াইল, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, মানিকনগর, মুগদা, কমলাপুর, মালিবাগ, রামপুরা, বাসাবো, মান্ডা এবং উত্তর সিটির (ডিএনসিসি) খিলখেত, উত্তরা, আবদুল্লাহপুর, আশকোনা, উত্তরখান, দক্ষিণখান, কাওলাসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
আশপাশের বড় সড়কগুলো ছাড়াও ডিএসসিসির ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাতুয়াইল মুসলিম নগর বাদশা মিয়া সড়ক, ডেমরা বালুরঘাট থেকে ডেমরা বাজার লতিফ বাওয়ানী জুট মিলের পেছনের সড়ক, ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে ডেমরা থানা হয়ে ৪ নম্বর গেট, ডেমরা-কালীগঞ্জ সড়ক, পাইটি ওয়াসা রোড খানাখন্দে ভরা। যানজট ও দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। সংস্কারকাজ চলছে ঢিমেতালে। ডেমরার ডগাইর শাপলা চত্বর থেকে পশ্চিম সানারপাড় পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তার সংস্কারকাজের মন্থর গতিতে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে এলাকাবাসী।
লতিফ বাওয়ানী জুট মিলের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বললেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি ভাঙাচোরা। সামান্য বৃষ্টিতেও দুর্ভোগ কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
মানিক নগর-মুগদা ওয়াসা রোড, বাসাবো, নন্দীপাড়া এবং গোড়ানের অনেক সড়কের অবস্থাও একই রকম। দীর্ঘ সময় পার হলেও ড্রেনেজ ও সড়ক মেরামতের কাজ শেষ হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, সিটি করপোরেশন ও ঠিকাদারদের অবহেলায় দক্ষিণের ৬, ৭১, ৭২—এই তিনটি ওয়ার্ডের লক্ষাধিক মানুষ রয়েছে চরম বিপাকে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের আওতায় থাকা স্টাফ কোয়ার্টার থেকে রামপুরা সড়কটির অবস্থাও খুব খারাপ।
ঢাকা মহানগর উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতায় থাকা ৫৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে গুলশান, বনানী, বারিধারার মতো অভিজাত আবাসিক ও ডিপ্লোমেটিক এলাকা ছাড়া অনেক সড়ক নাজুক। ওয়ার্ডভিত্তিক ছোট ছোট সড়কের পাশাপাশি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরা থেকে আবদুল্লাহপুর হয়ে ধউর বেড়িবাঁধ পর্যন্ত রাস্তাও ভালো নয়।
দক্ষিণখানের কসাইবাড়ী রেলগেট থেকে উত্তরখানের কাঁচকুড়া বাজার পর্যন্ত, দোবাদিয়া ব্রিজ থেকে কাঁচকুড়া বাজার পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য খুঁড়ে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন।
কাঁচকুড়ার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা রাজধানীতে বাস করি। এটা ছবি দেখিয়ে কাউকে বললে বিশ্বাসই করবে না।’
এ ছাড়া দক্ষিণখানের গণকবর স্থান সড়ক, আশকোনা থেকে কাওলা সংযোগ সড়ক, খিলক্ষেতের নিকুঞ্জ-২ এর সরকারবাড়ী থেকে নাগরিক টিভি-সংলগ্ন সড়ক হয় ভাঙাচোরা কিংবা ধীরগতিতে সংস্কারকাজ চলছে।
ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ফারুক হাসান মো. আল মাসুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইউটিলিটি লাইন, অবৈধ দখলের কারণে কাজের ধীরগতি থাকতে পারে। গড়ে ৩০ শতাংশ জনবল নিয়ে আমাদের কাজ করতে হয়। ঠিকাদারের গাফিলতি থাকলে চুক্তি অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।’
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেসব সড়কে পানি জমে থাকে, সেগুলোর কাজ করছি। গুলশান লেক এলাকায় হাঁটা যেত না, আমরা সেই কাজটা করেছি। তেজগাঁও, উত্তরখান, দক্ষিণখানেও কাজ চলছে।’
এ ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জোন-৮-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহেব হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টেন্ডার হয়ে যাওয়া সড়কের কাজ চলছে। অন্যান্য রাস্তার বিষয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাজেটের স্বল্পতায় আমরা অনেক কাজ করতে পারছি না। নির্বাচিত সরকার না থাকার কারণেও কিছুটা প্রভাব পড়েছে। চেষ্টা করছি, সংস্কারকাজগুলো যেন আটকে না থাকে।’
ঢাকা জেলা সড়ক ও জনপথ দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘ঢাকা নগরে আমাদের অল্প কিছু সড়ক আছে। ডেমরার রাস্তাটি কিছুটা খারাপ আছে। ইটের সোলিং করা আছে। শিগগির মেরামতের কাজে হাত দেব।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সভাপতি ও নগর-পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘নগরের সড়কে বর্তমানে যে সংকট, তা মূলত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি না থাকার কারণে হচ্ছে। আন্তদপ্তর সমন্বয়হীনতার সমাধানও করতে হবে।’

৮৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০৬ কিলোমিটার দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। চার বছর যেতে না যেতেই সড়কটির বিভিন্ন স্থান দেবে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে উঁচু-নিচু ঢেউ। যেন রীতিমতো জমির আলপথের মতো অবস্থা। এতে সড়কটি দিয়ে যাহনবাহনগুলোকে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
১৩ মার্চ ২০২৫
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরিশাল বিভাগের আসনগুলোর অন্যতম বরিশাল-৫ (সদর ও নগর)। এই আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে চলছে গুরু-শিষ্যের মনস্তাত্ত্বিক লড়াই। অন্যবারের মতো এবারও এখানে আলোচনায় রয়েছেন একাধিকবারের সংসদ সদস্য (এমপি) ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবর রহমান সরোয়ার।
৩ মিনিট আগে
রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরে খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জমি-ফ্ল্যাট দখল, মাদক কারবার, অস্ত্রের মহড়া, মারধরসহ বিভিন্ন অপরাধের পেছনে রয়েছে ১৭টি গ্রুপের সন্ত্রাসী-অপরাধীরা। এই গ্রুপগুলোর নেতৃত্বে আছেন ১৭ জন।
৫ ঘণ্টা আগে
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা সদর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে পাকা সড়কে দাঁড়িয়ে তাকালে ফসলি মাঠ পেরিয়ে ছোট ছোট রঙিন ঘর চোখে পড়ে। আশ্রয়ণের এসব ঘর দেখে যে কারও মন জুড়িয়ে যাবে। তবে দুঃখের বিষয়, গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত এসব ঘরের অধিকাংশই এখন ফাঁকা।
৫ ঘণ্টা আগে