Ajker Patrika

পানিতে ডুবে ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর শোকে ছাদ থেকে লাফিয়ে বোনের আত্মহত্যা

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
পানিতে ডুবে ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর শোকে ছাদ থেকে লাফিয়ে বোনের আত্মহত্যা

কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের চণ্ডীবের মোল্লাবাড়ি এলাকায় পুকুরে ডুবে ছোট ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনার পর তিনতলা বাসার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বোন।

সোমবার (১২ জুন) বিকেল ৪টার দিকে পানিতে ডুবে মারা যায় কিশোর নীরব মোল্লার (১৩)। এরপর রাত ৯টার দিকে ছাদ থেকে লাফ দিলে মৃত্যু হয় বড় বোন নাজা বেগমের (১৮)। মাত্র পাঁচ ঘণ্টার ব্যবধানে ভাই-বোনের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের শোকের মাতম চলছে।

নীরব ও নাজা ভৈরব চণ্ডীবের মোল্লাবাড়ির বাছির মোল্লার সন্তান। বাছির মোল্লার তিন সন্তানের মধ্যে নাজা দ্বিতীয়, আর নীরব সবার ছোট। নীরব স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। নাজা স্থানীয় কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, নীরব স্কুল থেকে ফিরে বাড়ির পাশের একটি মাঠে ফুটবল খেলছিল। খেলা চলাকালীন মাঠ লাগোয়া খালের পানিতে ফুটবল পড়ে যায়। সে খাল থেকে বল আনতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে তলিয়ে যায়। সহপাঠীরা এ দৃশ্য দেখে চিৎকার-চেঁচামেচি করলে স্থানীয়রা ছুটে এসে নীরবকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক নীরবকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে হাসপাতালে ছুটে যান বড় বোন নাজা। এ সময় আদরের ছোট ভাইয়ের লাশ দেখে হসপিটালের মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে বিলাপ করেন নাজা। বলতে থাকেন, ‘আমার ভাই ছাড়া আমি বাঁচব না।’

এর কিছু সময় পর ভাইয়ের লাশের সঙ্গে নাজা বাড়িতে আসেন। বাড়িতে এসেই বাসার ছাদে উঠে যান। সবার অলক্ষ্যে ছাদ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়েন নাজা। মুমূর্ষু অবস্থায় প্রথমে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ৯টার দিকে নাজা মারা যান।

ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম দুই ভাই–বোনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে বলেন, ‘পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিশুর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। বড় বোনের মরদেহ বাড়িতে আনার পর আরও একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত