Ajker Patrika

উপকূলে সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিতে খালি কলস নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৪, ১৫: ২৫
উপকূলে সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিতে খালি কলস নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি

উপকূলীয় অঞ্চলে লবণাক্ত পানি নিয়ন্ত্রণ ও সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ ও নাগরিক আন্দোলনের নেতারা। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ আয়োজিত খালি কলস হাতে নারীদের অবস্থান কর্মসূচিতে এ দাবি জানান তাঁরা। 

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের পাশাপাশি মনুষ্যসৃষ্ট কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে সুপেয় পানির সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। লবণাক্ততার আগ্রাসনে এই সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ফলে উপকূলের মানুষের জীবন-জীবিকা ও প্রাণ-প্রকৃতি হুমকির মুখে। এই হুমকি মোকাবিলায় লবণপানি নিয়ন্ত্রণ ও সুপেয় পানি নিশ্চিত জরুরি। 

কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী নারীরা জানান, উপকূলের নারীদের অনেক দূর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়। ভারী কলসে দূর থেকে পানি সংগ্রহ করার ফলে তাদের সারা বছর কোমর ব্যথা, কোমরের হাড় ক্ষয়ে যাওয়া, কিডনির সমস্যাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হয়। 

তাঁরা আরও জানান, এ ছাড়া অনেক সময় মেয়েদের উত্ত্যক্তসহ নানা ধরনের লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়। পানি নিয়ে উপকূলবাসীর দুর্ভোগের সীমা নেই। চারদিক লবণপানিবেষ্টিত। পানের উপযোগী না হলেও অনেকটা বাধ্য হয়ে এলাকার অনেকে লবণপানি পান করে। ফলে তাদের নানা ধরনের পানিবাহিত রোগে ভুগতে হয়। এর মধ্যে নারী ও শিশুরা বেশি সমস্যায় ভোগে। 

পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, ‘একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উপকূলে পানির আধারগুলো নষ্ট হচ্ছে। লবণাক্ত পানিতে চিংড়ি চাষের কারণে মিঠাপানির পুকুরগুলোর অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সময়ে-অসময়ে লবণাক্ত পানি ফসলি জমিতে প্রবেশ করায় ফসল হচ্ছে না। তাই জীবন-জীবিকা রক্ষায় উপকূলের বসতি ও ফসলি এলাকায় লবণপানি বন্ধ করতে হবে।’ 

রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘অতিরিক্ত লবণাক্ত পানি গ্রহণের ফলে নারীদের জরায়ুতে বিভিন্ন রোগ, উচ্চরক্তচাপ, গর্ভকালীন খিঁচুনি, গর্ভপাত, এমনকি অপরিণত শিশু জন্ম দেওয়ার হার বেড়েছে। উপকূলীয় এলাকায় বাল্যবিবাহ বাড়ছে। আবার রোগে আক্রান্ত হয়ে জরায়ু কেটে ফেলার কারণে বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনাও ঘটছে। তাই টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে উপকূলে লবণপানির আগ্রাসন বন্ধ ও সুপেয় পানির সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি।’ 

কর্মসূচিতে উত্থাপিত দাবিতে বলা হয়, পানি আইনের ধারা,১৭ অনুযায়ী উপকূলীয় অঞ্চলকে ‘পানি সংকটাপন্ন’ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। মিঠাপানির উৎস ভরাট ও দূষিত করে এমন যেকোনো ব্যক্তিগত বা শিল্প উদ্যোগ বন্ধ করতে হবে। নিরাপদ পানির সর্বজনীন, ন্যায্য ও সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। জলবায়ু ঝুঁকি, দারিদ্র্য ও বিপদাপন্নতার মাত্রা বিবেচনায় নিয়ে উপকূল সংশ্লিষ্ট উপজেলায় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির (বিশেষ করে নগদ ও খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি) আওতা ও পরিধি বাড়াতে হবে। আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয় সাধনে উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে। 

সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তৃতা করেন সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক আহমদ তারেক উদ্দিন, নৌ-সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, সচেতন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সাকিলা পারভীন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের ব্যবস্থাপক মো. হেলাল উদ্দিন, ব্যাংক কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন, ঢাকাস্থ পাইকগাছা সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ইঞ্জিনিয়ার তুহীন পারভেজ, সাবেক ছাত্রনেতা মৃত্যুঞ্জয় দাশ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত