Ajker Patrika

ইউক্রেনের ক্যাম্পে বন্দী অবস্থায় ৫ বাংলাদেশি: রুশ দূতাবাস

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২২, ১৫: ৫৫
ইউক্রেনের ক্যাম্পে বন্দী অবস্থায় ৫ বাংলাদেশি: রুশ দূতাবাস

ইউক্রেনের ক্যাম্পে পাঁচ বাংলাদেশিকে বন্দী অবস্থায় রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাকার রাশিয়া দূতাবাস। রাশিয়া দূতাবাসের বাংলাদেশের টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এসংক্রান্ত একটি টুইট করা হয়। টুইটে রাশিয়া দূতাবাস জার্মানির গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলে বাংলার ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। 
 
ভিডিওটিতে জানানো হয়, ইউক্রেনের কিভারতিসি শহরের একটি অভিবাসী ক্যাম্পে আটকে আছেন পাঁচ বাংলাদেশিসহ শতাধিক বিদেশি নাগরিক। রিয়াদুল মালিক নামে এক বাংলাদেশির ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ইউক্রেনের অভিবাসী শিবিরটিতে সবার কাছ থেকে মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশিরা একটি মোবাইল লুকিয়ে নিজেদের কাছে রাখতে পেড়েছেন। রিয়াদুল মালিকের করা ভিডিওতে তাঁকেসহ চার বাংলাদেশিকে দেখা যায়। অপর বাংলাদেশিকে দরজার কাছে পাহারায় রাখেন, যাতে মোবাইল ব্যবহার করতে কেউ দেখে না ফেলে। যুদ্ধের বেশ আগে থেকেই প্রায় ১৫ মাস ধরে ক্যাম্পটিতে বন্দী অবস্থায় রয়েছেন রিয়াদুল মালিক। অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়ার চেষ্টায় তিনিসহ অন্য বাংলাদেশিদের আটক করা হয় বলে ভিডিওতে জানান তিনি।
 
ভিডিওতে রিয়াদুল মালিক বলেন, রাশিয়া বোমা ফেলছে শুধু আর্মি বেজ দেখে দেখে। আমরা অনেক ভয়ের মাঝে ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। আমাদের আটকে রেখেছে ক্যাম্পে। রাত হলে বোমা ও গুলির শব্দ শুনতে পাই। রাতে লাইট নিভিয়ে দেয়। যেখানে চারজনের থাকার কথা, সেখানে একত্রে ১০ জনকে রাখা হচ্ছে। অভিবাসী ক্যাম্পে থাকা আটকদের নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন রিয়াদুল মালিক। 
 
ভিডিওতে জীবনের নিশ্চয়তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তিনি বলেন, ইউক্রেনের সব আর্মি ক্যাম্প বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু এই ক্যাম্পটি এখনো রয়েছে। আমরা আকুল আবেদন করছি, আমাদের এখান থেকে উদ্ধার করার জন্য। আমাদের জীবনের এক মিনিটের নিশ্চয়তা নেই। 
 
১৫ মাসের ওপরে ক্যাম্পটিতে আটক অবস্থায় রয়েছেন জানিয়ে রিয়াদুল মালিক বলেন, ‘আমাদের অপরাধ ছিল, আমরা সীমান্ত পার হতে গিয়েছিলাম। অন্যান্য ক্যাম্প থেকে মানুষ ছেড়ে দিয়েছে। তবে আমাদের ছাড়ছে না। আমরা বেলারুশের অনেক কাছে রয়েছি, ৬০ কিলোমিটারের মধ্যে। 

বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে আনলে নাম না প্রকাশ করার শর্তে ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সংকটের শুরু থেকেই ইউক্রেন বিদেশি নাগরিকসহ নিজ নাগরিকদের সীমান্ত পার করতে বেশ তালবাহানা করেছে। বাংলাদেশিসহ বহু দেশের নাগরিক সীমান্ত এলাকায় গিয়েছে, পরে পার না হতে পেরে সেখান থেকে আবারও ফেরত এসেছে। সীমান্তে ইমিগ্রেশনের বিশাল লাইন সৃষ্টি করে রেখেছে, আর পুরো প্রক্রিয়াটিকে ধীর গতির করে রেখেছে। এটাকে একপ্রকার ‘মানব ঢাল’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।’ 

সীমান্ত এলাকায় গিয়ে পরে ফেরত আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেখানকার সীমান্ত এলাকা অনেক ঠান্ডা। এমনও বাংলাদেশি রয়েছেন, সকালে গিয়ে ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সন্ধ্যায় ইমিগ্রেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নেওয়ার কোনো জায়গা নেই। ঠান্ডায় রাতে বাইরে থাকলে মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে বাধ্য হয়েই তাঁদের আবার সীমান্ত এলাকা থেকে দূূরে আশ্রয় খুঁজতে যেতে হয়।’ 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শুধু এই পাঁচ বাংলাদেশি নন, ইউক্রেনের বিভিন্ন স্থানে এ রকম বেশ কিছু বাংলাদেশি রয়েছেন। তাঁদের সেখান থেকে বের করে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে। এ ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা নিচ্ছে বাংলাদেশ। আর সেই সঙ্গে রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমাগত যোগাযোগ রাখছে। এ ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশও সমন্বয় করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত