Ajker Patrika

অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ ৫ কর্মকর্তার কারাদণ্ড স্থগিত 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ ৫ কর্মকর্তার কারাদণ্ড স্থগিত 

অগ্রণী ব্যাংকের এমডিসহ ৫ কর্মকর্তাকে হাইকোর্টের দেওয়া কারাদণ্ড স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। সাজাপ্রাপ্ত ৫ জনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম আগামী ৮ মার্চ পর্যন্ত কারাদণ্ড স্থগিত করেন। একইসঙ্গে এই বিষয়ে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানো হয়েছে। 

৫ আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির। আবেদনকারীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী নুরুল আমীন। আর অগ্রনী ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন শামীম খালেদ আহমেদ।

এর আগে হাইকোর্টের আদেশ লঙ্ঘন করায় অগ্রণী ব্যাংকের ৫ কর্মকর্তাকে তিনমাসের দেওয়ানি কারাদণ্ড দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। মুন ইন্টারন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমানের করা আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামানের একক বেঞ্চ গত মঙ্গলবার এ সাজা দেন। 

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন– অগ্রণী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল কবির, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক-১ ওয়াহিদা বেগম, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক-২ শ্যামল কৃষ্ণ সাহা, জেনারেল ম্যানেজার ফজলুল করিম এবং প্রিন্সিপ্যাল শাখার বর্তমান ব্যবস্থাপক একেএম ফজলুল হক।

জানা গেছে, রাজধানীর বাণিজ্যিক এলাকা দিলকুশায় ২২তলা মুন টাওয়ার নামে একটি ভবন নির্মাণ করা হয় অগ্রণী ব্যাংক থেকে ২৩১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে। পরবর্তীতে ওই ভবনের ৯৮ হাজার ২৩৫ বর্গফুট (১২, ১৩ ও ১৪ তলা এবং ৬ষ্ট তলার ৫ হাজার বর্গফুট) কিনে নেয় অগ্রণী ব্যাংক। আর ঋণের বিপরীতে এই টাকা সমন্বয় করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তবে প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বদলি হলে নতুন কর্মকর্তা এসেই মুন টাওয়ারের মালিকের কাছে ঋণের বিপরীতে ১৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা দাবি করেন।  

টাকা পরিশোধ করতে ২০২১ সালে মিজানুর রহমানকে চিঠি দেওয়া হয়। পরে ওই চিঠির ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ঢাকার জেলা আদালতে মামলা করেন মিজান। আদালত ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজ করে দেন। 

নিষেধাজ্ঞার আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেন মিজানুর রহমান। ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর চিঠি কেন বাতিল করা হবে না এবং এ জন্য তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আর রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত চিঠির কার্যকারিতার ওপর স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেওয়া হয়।  

হাইকোর্টের আদেশের পরও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টাকার জন্য মিজানুর রহমানকে চিঠি দেন। ওই চিঠিতে তার কাছে দাবি করা টাকাকে খেলাপী ঋণ হিসেবে দেখানো হয়। এরপর মিজান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ব্যবস্থা নিতে আরজি জানান হাইকোর্টে। 

এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে বরগুনা-২ আসনে প্রার্থী হন মিজানুর রহমান। তবে অগ্রণী ব্যাংক থেকে বরগুনার জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়ে তাকে ঋণ খেলাপী হিসেবে উল্লেখ করেন। এতে মিজানুর রহমানের প্রার্থীতা বাতিল হয়ে যায়। অগ্রণী ব্যাংকের ওই চিঠির বিরুদ্ধেও হাইকোর্টে আবেদন করেন মিজানুর রহমান। পৃথক তিন আবেদনের ওপর একসঙ্গে শুনানি শেষে মঙ্গলবার রায়ে দেন হাইকোর্ট।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত