Ajker Patrika

নারায়ণগঞ্জে বিএনপির ১৩ দিনে আট বহিষ্কার, তবুও লাগাম নেই

  • গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
  • বহিষ্কারের আদেশের পেছনে রয়েছে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, খুন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ।
সাবিত আল হোসেন, নারায়ণগঞ্জ
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির ১৩ দিনে আট বহিষ্কার, তবুও লাগাম নেই

নারায়ণগঞ্জে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে জেলা বিএনপির আওতাধীন আট নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এসব আদেশের পেছনে রয়েছে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, খুন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ। কিন্তু এভাবে একের পর এক বহিষ্কার করেও বিএনপির নেতা-কর্মীদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। উল্টো তাঁরা নতুন নতুন অভিযোগে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছেন।

স্থানীয় রাজনীতি সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ থেকে শুরু করে চাঁদাবাজি, খুন, সংঘাত, সহিংসতাসহ নানা বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ বৃদ্ধি পেতে থাকে। সে সঙ্গে বাড়তে থাকে দল থেকে বহিষ্কার হওয়ার সংখ্যাও। কিন্তু এরপরও নেতা-কর্মীদের নেতিবাচক সংবাদের শিরোনাম হওয়া থামেনি।

জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর রহমান খোকা দল থেকে বহিষ্কৃত হন গত ২৯ জুলাই। এর আগে এক সভায় তিনি তাঁর নেতা শাহ আলমের পক্ষে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, ‘শাহ আলমের জন্য আমরা নমিনেশন আনব। প্রয়োজনে আমরা আত্মাহুতি দেব কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে। তারেক রহমান, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও বিএনপির মহাসচিবকে ঘেরাও করব। বিএনপির সর্বোচ্চ মহলকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, ফতুল্লাকে নিয়ে যদি কোনো ষড়যন্ত্র করা হয়, তাহলে কাউকে ছাড়া হবে না। এখানে কোনো জোট চলবে না। এই খেলা আর খেলবেন না। ধানের শীষ ছাড়া ফতুল্লায় কিছু চলবে না। ফতুল্লার জনগণের আবেগ, আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। ফতুল্লার মানুষদের প্রিয় নেতা শাহ আলমকে বাদ দিয়ে এখানে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া মানেই জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা।’

এ ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কৃত হন লুৎফর। যদিও পরবর্তী সময়ে তিনি ক্ষমা চেয়ে বলেন, ‘বিগত সময়ে এই আসনে বিএনপি থেকে অচেনা এক ব্যক্তিকে দলীয় প্রতীক তুলে দেওয়ায় আমরা মর্মাহত হয়েছিলাম। ফের যেন এ কাজ না করা হয় সে জন্য বক্তব্য দিতে গিয়ে ‘স্লিপ অব টাং’ হয়েছে। আমি এ জন্য দুঃখিত।’

পরদিন ৩০ জুলাই দল থেকে বহিষ্কার করা হয় আড়াইহাজার উপজেলা ও মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির পাঁচ নেতাকে। এর আগে তাঁদের বিরুদ্ধে মাহমুদপুর ইউনিয়ন মৎস্যজীবী দলের সহসাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনকে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে। জাহাঙ্গীরের দোকান ভাড়া নিয়ে দলীয় কার্যালয় বানিয়ে আসামিরা ভাড়া দিচ্ছিলেন না। সেই ভাড়া না পেয়ে নিজের দোকান ফেরত নিতে গেলে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

ঘটনার জেরে বহিষ্কার করা হয় মাহমুদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক তোতা প্রধান, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক খোকন প্রধান, উপজেলা বিএনপির সদস্য রাসেল প্রধান, আলম মিয়া ও সাদ্দাম হোসেনকে।

সবশেষ ১০ আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহসভাপতি এস এম আসলাম ও সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক টি এইচ তোফাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় চাঁদাবাজির অভিযোগে। এর আগে ৬ আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জের জ্বালানি ডিপো থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি দল বিএনপির ওই দুই নেতাকে আটক করে। পরবর্তী সময়ে তাঁদের আদালত ৩০ দিনের আটকাদেশ দেন।

এসব বহিষ্কারাদেশ নিয়ে কথা হলে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ বলেন, ‘দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে বা দলের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। এরই অংশ হিসেবে দলের বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাকিদের প্রতি সতর্কবার্তা যাবে যে, দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে কেউই ছাড় পাবেন না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জোরপূর্বক অপুর স্বীকারোক্তি নিয়েছেন বিএনপির ইশরাক, এনসিপির ব্যবস্থা করা সংবাদ সম্মেলনে দাবি স্ত্রীর

‘মিরপুরের উইকেটের পাশে পুঁইশাক বের হচ্ছে, এত বছর হয়নি কেন’

ভোররাতে হাঁসের মাংস খেতে ৩০০ ফুটে যান আসিফ মাহমুদ, না পেয়ে যান ওয়েস্টিনে

উপদেষ্টা ফরিদা আখতার ভুলভাবে কথা বলেছেন: প্রেস সচিব

নীলা মার্কেটের হাঁসের মাংস নাকি ওয়েস্টিনের—কোনটি সেরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত