Ajker Patrika

টাঙ্গাইলে ঈদের আগেই মহাসড়কে ডাকাতি বাড়ছে

  • রাত বাড়ার সঙ্গে এই জেলার মহাসড়কে নেমে আসছে আতঙ্ক।
  • ডাকাতিকালে নারীদের শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটছে।
  • তৎপরতা বাড়িয়েছে পুলিশ, আরও নিরাপত্তা চান বাসমালিকেরা।
আনোয়ার সাদাৎ ইমরান, টাঙ্গাইল 
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে ঝুঁকি বাড়তে শুরু করেছে। প্রশাসনের তৎপরতায় ক্ষণিকের জন্য গা ঢাকা দিলেও ডাকাতেরা সুযোগ বুঝেই চলন্ত বাসে ডাকাতি, লুটপাট ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিয়ে সটকে পড়ে। ফলে রাত বাড়ার সঙ্গে এই জেলার মহাসড়কে নেমে আসছে আতঙ্ক।

সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন ২৬টি জেলার ৩০-৩৫ হাজার পরিবহন আসা-যাওয়া করে। অপর দিকে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়েও প্রতিদিন শত শত যাত্রীবাহী বাস যাতায়াত করে। এই মহাসড়ক ও আঞ্চলিক মহাসড়কগুলোর সীমানা গাজীপুরের কালিয়াকৈর, ময়মনসিংহের রসুলপুর ও জামালপুরের সরিষাবাড়ী পর্যন্ত বিস্তৃত। বাসমালিকেরা বলছেন, এলেঙ্গা থেকে গোলচত্বর পর্যন্ত, মির্জাপুরের পাকুল্যা থেকে টাঙ্গাইল শহরের রাবনা বাইপাস পর্যন্ত এবং টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর বনাঞ্চল এলাকা ও পাকুটিয়া বাজার থেকে নরকোনা পর্যন্ত এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

২০ মে দিবাগত রাতেও ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে রংপুরগামী আল-ইমরান পরিবহনের বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাতেরা দেশীয় অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে লুটপাট করে। ঘটে শ্লীলতাহানির ঘটনাও। এ ঘটনায় টাঙ্গাইল মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন ওই বাসের যাত্রী রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মিনু মিয়া। এর আগে ১৫ মে বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশবেশে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দুজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়ে মির্জাপুর থানা-পুলিশ।

চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ইউনিক রয়েল আমির ট্রাভেলসের একটি বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারকে আটক করে। ২১ ফেব্রুয়ারি মির্জাপুর থানায় মামলা হয়। দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় মির্জাপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক আতিকুজ্জামান এবং নাটোরের বড়াইগ্রাম থানার ওসি সিরাজুল ইসলামকে। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ বলছে তারা মহাসড়কে তৎপরতা বাড়িয়েছে। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন জানান, সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য চারটি টহল টিম রাতভর দায়িত্ব পালন করে।

আর মধুপুর-এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শরীফুর ইসলাম জানান, টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের নিরাপত্তা দেখভাল করে পাঁচটি টহল টিম। মধুপুরের নিকটবর্তী আশুরাতে পুলিশ চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। নিরাপত্তার প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাতে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালিয়ে থাকেন।

তবে টাঙ্গাইল জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. ইকবাল হোসেন বলেন, সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মহাসড়কগুলোর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে প্রতিদিন চেকপোস্ট স্থাপন করতে হবে। সড়কে তল্লাশির বিষয়টি জানাজানি হলে বাসে ডাকাতি কমে আসবে। এ ছাড়া প্রতিটি বাসের সুপারভাইজার বা কন্ডাক্টর যদি তাঁদের হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে বাসের যাত্রীর ছবি তুলে রাখেন, তা হলে ডাকাতি কমে আসবে। ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও ওই ভিডিও বা ছবিগুলো ডাকাত ধরার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত