Ajker Patrika

যুগলকে মারধর করে স্বর্ণ লুট, ঢাবির ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

ঢাবি প্রতিনিধি
যুগলকে মারধর করে স্বর্ণ লুট, ঢাবির ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক যুগলকে হেনস্তা ও মারধর করে স্বর্ণ লুটের ঘটনায় করা মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দিন হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানজির আরাফাত তুষারকে গ্রেপ্তার করেছে শাহবাগ থানা-পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

শাহবাগ থানা সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক নারীকে হেনস্তা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ সময় তাঁর স্বামীকেও মারধর করা হয়। এ ঘটনায় বাদী হয়ে পরদিন দুজনের নামউল্লেখসহ ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। সেই মামলা আমলে নিয়ে তানজির আরাফাত তুষারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ মামলায় অন্য আসামি হলেন—ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য রাহুল রায়। তিনি ঢাবি জগন্নাথ হল এবং আইন বিভাগের শিক্ষার্থী। রাহুল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের এবং গ্রেপ্তার তুষার ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

এজাহার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মামলার বাদী এবং তাঁর স্বামী রমনার কালি মন্দির থেকে পূর্ব পাশের শিখা চিরন্তনের গেট দিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বের হওয়ার পথে তাঁদের গতিরোধ করা হয়। এ সময় বাদীকে হেনস্তা করে আসামিরা। পরবর্তীতে মোটরসাইকেল থেকে বাদীর স্বামীকে নামিয়ে পাশে থাকা চেয়ার দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয় এবং ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দামের স্বর্ণ হাতিয়ে নেওয়া হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মামলার বাদী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে লজ্জিত। আমি তাঁদের বড় বোন। কিন্তু আমার সামনে আমার স্বামীকে মারধর করা হয়েছে। তাঁর সামনে আমাকেও হেনস্তা ও মারধর করা হয়েছে।’

বাকি অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

বাদীর স্বামী পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় প্রক্টর অফিস টু শাহবাগ থানা, শাহবাগ থানা টু প্রক্টর অফিস অনেক ঘোরাঘুরি করেছি কিন্তু প্রক্টরের তেমন সহযোগিতা পাইনি। ডিসি স্যার আমাদের অনেক সহযোগিতা করেছেন, তখন এক আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে আশা রাখছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এটি আইনের বিষয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিষয়টি বিবেচনা রাখবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী অন্যায়ভাবে যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়টিও তাঁরা বিবেচনায় রাখবেন।’

অসহযোগিতার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর বলেন, ‘কোনো ধরনের অসহযোগিতামূলক আচরণ করিনি। যদি অসহযোগিতার বিষয় বলা হয় তাহলে এটি অসত্য তথ্য এবং তাঁরা অকৃতজ্ঞ।’

ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘কেউ যদি অপরাধ করে সেটি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী দেখবে। আমরা সব সময় সহযোগিতা করব। পাশাপাশি অন্যায়ভাবে যেন কাউকে হয়রানি করা না হয় সে বিষয়টিও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী বিবেচনায় রাখবে বলে আশা রাখি।’

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. শহিদুল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে চালান করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত