Ajker Patrika

সাগর-রুনি হত্যা: মামলা চালাবেন শিশির মনিরসহ ৯ আইনজীবী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় বাদীর ব্যক্তিগত খরচে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনিরসহ ৯ আইনজীবীকে মামলা পরিচালনা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার অতিরিক্ত প্রধান মহানগর হাকিম মাহবুবুল হক এই অনুমতি দেন। 

একই সঙ্গে আগামী ১৫ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। মামলার বাদী রুনির ভাই নওশের আলী রোমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেন। মামলার বাদী নওশের আলী রোমান আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

শিশির মনির ছাড়া অন্য আইনজীবীরা হলেন—অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম, মিজানুল হক, মোস্তফা জামাল, আবু রাসেল, মহিউদ্দিন, আব্দুল্লাহ আল ফারুক, ইকবাল হোসেন ও মোত্তাকিন হোসাইন। 

গতকাল সোমবার একই আদালতে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য ৯ আইনজীবীকে নিয়োগের আবেদন করেন বাদী। শুনানি শেষে আদালত বাদীর উপস্থিতিতে এ বিষয় শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য করেন। 

আবেদনে বলা হয়, মামলার ভুক্তভোগী সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোয়ার ও মেহেরুন রুনিকে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামিরা ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নিজ বাসায় নৃশংসভাবে হত্যা করে। মামলাটি দীর্ঘ ১২ বছর তদন্ত চলমান থাকলেও কোনো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি। 

আবেদনে আরও বলা হয়, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও মামলায় কোনো প্রকার অগ্রগতি নেই। মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌঁসুলিকে সহায়তার জন্য বাদীপক্ষে নিজ খরচে আইনজীবী নিয়োগ করা আবশ্যক। 

আলোচিত এ হত্যা মামলায় রুনির বন্ধু তানভীর রহমানসহ মোট ৮ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আসামিরা হলেন—বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুণ, পলাশ রুদ্র পাল ও আবু সাঈদ। আসামিদের প্রত্যেককে একাধিকবার রিমান্ডে নেওয়া হলেও তাদের কেউই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। 

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন নাহার ওরফে মেহেরুন রুনি দম্পতি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় খুন হন। চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের পর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। 

শেরেবাংলা নগর থানা-পুলিশ প্রথমে মামলাটি তদন্ত করে। চার দিনে কোনো রহস্য উদ্ঘাটন করতে না পারায় মামলার তদন্ত পরে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়। দুই মাসেরও বেশি সময় তদন্ত করে ডিবি পুলিশ। কিন্তু তারাও রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যর্থ হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল র‍্যাব তদন্তভার গ্রহণ করে। গত ৯ বছরেরও বেশি সময়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি কোনো সংস্থা। এমনকি এই হত্যাকাণ্ডের কোনো রহস্যই উদ্ঘাটন করতে পারেনি। 

হত্যাকাণ্ডস্থল থেকে উদ্ধার করা আলামত ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য বহু অর্থ ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু রহস্য উদ্ঘাটনের ফলাফল শূন্যই থাকে। তদন্ত সংস্থা মাঝে মাঝে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে জানায়, রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ চলছে। তদন্ত সংস্থার ওই ধরনের প্রতিবেদনের ভেতরেই মামলার তদন্ত সীমাবদ্ধ রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত