Ajker Patrika

‘পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন বাতিলের জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন বাতিলের জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। আজ বুধবার রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আসাদ অ্যাভিনিউ সিবিসিবি সেন্টারে কাপেং ফাউন্ডেশনের আয়োজিত ‘বাংলাদেশের আদিবাসীদের মানবাধিকার পরিস্থিতি শীর্ষক জাতীয় পর্যায়ের মতবিনিময় সভা’ তিনি এসব কথা বলেন। 

দেবাশীষ রায় বলেন, ১৯০০ সালের রেগুলেশন অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রামে দেশের অন্য অঞ্চলে যে আইন প্রযোজ্য হয় এখানে তা হয় না। ১৯০০ সালের রেগুলেশন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। একটি পক্ষ চায় না পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীরা তাদের প্রথা-রীতি অনুসারে তাদের অধিকার ভোগ করুক। ১৯০০ সালের রেগুলেশন অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে বিশেষ শাসন ব্যবস্থা এটা বলবৎ রাখার জন্য আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। 

চাকমা সার্কেল চিফ বলেন, সাধারণ আইন বানায় রাষ্ট্র, প্রথাগত আইন বা প্রথা-রীতি বানায় সাধারণ মানুষ। বিগত দুটো মামলা রায় দিয়ে সরকার আমাদের প্রথা-রীতিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হয় এমন কাজে অবস্থান নেওয়া মানে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া যেহেতু এ চুক্তি সরকার স্বাক্ষর করেছে। পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়নের সঙ্গে বাংলাদেশের বহুত্ববাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, অসাম্প্রদায়িকতা ইত্যাদি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। 

অনুষ্ঠানে মনজুনি চাকমা তাঁর উপস্থাপনায় ২০২৩ সালে বাংলাদেশে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি জানান-২০২৩ সালে ভূমি সংক্রান্ত মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে ৩৫টি। এর মধ্যে ১৭টি সমতল অঞ্চলে ও অপর ১৮টি ঘটনা ঘটেছে পার্বত্য চট্টগ্রামে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারীদের প্রতি সহিংসতার ২৩টি ঘটনায় ২৪ জন নারী সরাসরি ভুক্তভোগী হয়েছে। 

আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক পার্লামেন্টারি ককাসের সমন্বয়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মেসবাহ কামাল বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আদিবাসীদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। এত নিপীড়ন-নির্যাতন হওয়া সত্ত্বেও আদিবাসীরা টিকে রয়েছে। রাষ্ট্রের একাংশ পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ তুলে দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র করছে তা খুব লজ্জাজনক। আমি এটার বিরোধিতা করি। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অতি দ্রুত পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।’ 

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সচিব সেবাস্তিন রেমা বলেন, রাষ্ট্র জনগণের মানবাধিকার রক্ষা করে ও প্রতিষ্ঠিত করে। বিভিন্ন কারণে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়। বিভিন্ন সময় মানবাধিকার প্রতিবেদন হয় কিন্তু আলোর মুখ দেখে না। অনেক সময় বিচারের বানী নিভৃতে কাঁদে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করার চেষ্টা করছে। আমরা রাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গের সঙ্গে কাজ করছি, কথা বলছি। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য আমরা একটা প্রতিবেদন তৈরি করেছি। 

অনুষ্ঠানে কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমার সভাপতিত্বে আরও আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সহসাধারণ সম্পাদক ডা. গজেন্দ্রনাথ মাহাতো, গবেষক পাভেল পার্থ প্রমুখ। সভায় সঞ্চালনা করেন ফাল্গুনী ত্রিপুরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত