মাহিদুল ইসলাম মাহি, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)
নাম তাঁর চপলা রানী দাস। নামের সঙ্গে রানী থাকলেও জীবনযুদ্ধে খেয়া ঘাটের মাঝি হয়ে জীবন চলছে তাঁর। মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ঝিটকা নতুন বাজার থেকে গোপীনাথপুর বটতলা (মনু পীরের মাজার) ইছামতী নদীতে মানুষ পারাপার করেন চপলা রাণী।
স্বামী মারা গেছেন ১৫ বছর আগে। তিন বছর অসুস্থ থেকে তাঁর স্বামী মারা যান। ১৮ বছর আগে ওই সময়ে চার সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। হয়ে যান খেয়া ঘাটের মাঝি। ছোট ছেলেকে কোলে নিয়ে নৌকার বইঠা ধরেছেন। এভাবে ১৮ বছর ধরে নৌকা চালিয়ে সংসার পরিচালনা করেছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, গোপীনাথপুর মজমপাড়া, উত্তরপাড়া, উজানপাড়া, কদমতলী, কুটির বাজার, মোহাম্মদপুর, কোটকান্দি, কুশিয়ারচরসহ অনেক এলাকার মানুষ এই ঘাট দিয়ে যাতায়াত করতেন। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও ঘাট পার হয়ে স্কুল কলেজে আসা যাওয়া করতেন। কয়েক বছর আগে ঝিটকা-গোপীনাথপুর-বাল্লা সড়কটি পাকা হলে এ ঘাটে পারাপারের চাহিদা কমে যায়। এখন পারাপারের চাহিদা নেই বললেই চলে। ৫ বছর আগে এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার লোকের যাতায়াত হলেও বর্তমানে ২শ থেকে তিন শ লোকের বেশি যাতায়াত হয় না।
গ্রামবাসী জানান, পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়স্ক চপলা রাণী দাস উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত সুবাস চন্দ্র দাসের স্ত্রী। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে তাঁর।
বড় মেয়ে সরস্বতী রাণী দাস বিয়ে হয়েছে অনেক আগেই। বড় ছেলে সঞ্জীব চন্দ্র দাস পেশায় কাঠমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করেন টাঙ্গাইলে। বউ নিয়ে সেখানে থাকেন। ছোট মেয়ে ও ছোট ছেলেকে নিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া চার শতাংশ জায়গার ওপর প্রায় ১৫ বছর আগে কারিতাসের দেওয়া একটি ঘরে বসবাস করেন চপলা রাণী। টাকার অভাবে ঘরটিও মেরামত করতে পারেননি। ফলে জরাজীর্ণ অবস্থায় নিয়ে ওই ঘরে বাস করতে হচ্ছে তাঁকে।
ঝিটকা নতুন বাজারের ব্যবসায়ী রাজিব জানান, "রাস্তাঘাট উন্নয়ন হওয়ায় এই ঘাটে এখন মানুষ পারাপারের চাপ নেই। ফলে খেয়া নৌকায়ও আগের মতো আয় রোজগার নেই। তারপরেও টুকটাক যা হয়, এই দিয়েই মহিলা খুব কষ্ট করে চলে। ছোট ছেলেটাকে কোলে নিয়ে খেয়া পারাপার করতেও দেখেছি আমরা। স্বামীর মৃত্যুর পর এই খেয়া নৌকায়ই ছিল তাঁর জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। নদীর পাড়ে টং ঘর তোলে সারা রাত নদীর পাড়েও কাটিয়েছেন মানুষ পারাপারের জন্য।
চপলা রানীর ছেলে আকাশ চন্দ্র দাস বলেন, `শিশুকালেই বাবাকে হারিয়েছি। আমার মা এই নৌকা চালিয়েই আমাকে বড় করেছে। আমি ও আমার ছোট বোন গোপীনাথপুর উত্তর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। টাকার অভাবে আর পড়াশোনা করতে পারিনি। ছোট বোনটির এখন অনেকটা বিয়ের বয়স হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের যে অর্থনৈতিক অবস্থা তাতে খুব চিন্তায় আছি। পড়াশোনা করতে না পারায় আমি ছোটবেলা থেকেই মাকে খেয়া ঘাটে সহযোগিতা করতাম। বর্তমানে নতুন বাজারের কাঁচামালের ব্যবসায়ী শফি ভাইয়ের মাধ্যমে কুটির বাজারে কাঁচা মালের ব্যবসা করি। বাজার ভাঙার পরে আমি বেলা ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই খেয়া ঘাটে নৌকা চালাই। আর সকাল ৬টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত আমার মা নৌকা চালায়। মূলত আমরা মা ছেলে মিলেই যে যখন পারি এই খেয়া চালাই।'
খেয়া ঘাটের আয়ের ব্যাপারে আকাশ চন্দ্র দাস বলেন, গোপীনাথপুর গ্রামের তিনটি পাড়া থেকে বছরে ১২ / ১৩ মন ধান পাই। এ ছাড়া প্রতিদিন পারাপারে ৫০ / ৬০ টাকার মতো আসে। আগে এর চেয়ে বেশি হতো। বর্তমানে রাস্তা ঘাট ভালো হওয়ায় এ পথে মানুষজন তেমন আসে না।
চপলা রাণী দাস বলেন, আমার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় ও খেয়া নৌকা চালিয়েছি। অসুস্থ হয়ে তিন বছর ঘরে পড়ে থাকার পর সে মারা যায়। শিশু সন্তান নিয়ে এই খেয়া চালিয়েই অনেক কষ্টে এ পর্যন্ত টিকে আছি। এখন পারাপারের লোকজন তেমন হয় না। সকালে বাজারের সময় কিছু লোক পার হয়। গোপীনাথপুর গ্রামের মানুষ প্রতিবছর ধান দেয়। ঈদের মাঠ থেকেও কিছু টাকা পয়সা তারা ওঠায় দেয়। তাঁদের সহযোগিতায় বেঁচে আছি। এ ছাড়া বিধবা ভাতার একটা কার্ড পাইছি। সব মিলিয়ে কোনো রকমে চলে। তবে আমার বড় সমস্যা হলো একটা মাত্র ঘর। অনেক আগে কারিতাসের একটা ঘর পাইছিলাম। তাও এখন টিন নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। তাই সরকারিভাবে একটা ঘর পাইলে দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে কোনো রকম থাকবার পারতাম।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিগগিরই চপলা রানীকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।
নাম তাঁর চপলা রানী দাস। নামের সঙ্গে রানী থাকলেও জীবনযুদ্ধে খেয়া ঘাটের মাঝি হয়ে জীবন চলছে তাঁর। মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ঝিটকা নতুন বাজার থেকে গোপীনাথপুর বটতলা (মনু পীরের মাজার) ইছামতী নদীতে মানুষ পারাপার করেন চপলা রাণী।
স্বামী মারা গেছেন ১৫ বছর আগে। তিন বছর অসুস্থ থেকে তাঁর স্বামী মারা যান। ১৮ বছর আগে ওই সময়ে চার সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। হয়ে যান খেয়া ঘাটের মাঝি। ছোট ছেলেকে কোলে নিয়ে নৌকার বইঠা ধরেছেন। এভাবে ১৮ বছর ধরে নৌকা চালিয়ে সংসার পরিচালনা করেছেন তিনি।
স্থানীয়রা জানান, গোপীনাথপুর মজমপাড়া, উত্তরপাড়া, উজানপাড়া, কদমতলী, কুটির বাজার, মোহাম্মদপুর, কোটকান্দি, কুশিয়ারচরসহ অনেক এলাকার মানুষ এই ঘাট দিয়ে যাতায়াত করতেন। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও ঘাট পার হয়ে স্কুল কলেজে আসা যাওয়া করতেন। কয়েক বছর আগে ঝিটকা-গোপীনাথপুর-বাল্লা সড়কটি পাকা হলে এ ঘাটে পারাপারের চাহিদা কমে যায়। এখন পারাপারের চাহিদা নেই বললেই চলে। ৫ বছর আগে এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন প্রায় এক হাজার লোকের যাতায়াত হলেও বর্তমানে ২শ থেকে তিন শ লোকের বেশি যাতায়াত হয় না।
গ্রামবাসী জানান, পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়স্ক চপলা রাণী দাস উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের গোপীনাথপুর উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত সুবাস চন্দ্র দাসের স্ত্রী। দুই ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে তাঁর।
বড় মেয়ে সরস্বতী রাণী দাস বিয়ে হয়েছে অনেক আগেই। বড় ছেলে সঞ্জীব চন্দ্র দাস পেশায় কাঠমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করেন টাঙ্গাইলে। বউ নিয়ে সেখানে থাকেন। ছোট মেয়ে ও ছোট ছেলেকে নিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া চার শতাংশ জায়গার ওপর প্রায় ১৫ বছর আগে কারিতাসের দেওয়া একটি ঘরে বসবাস করেন চপলা রাণী। টাকার অভাবে ঘরটিও মেরামত করতে পারেননি। ফলে জরাজীর্ণ অবস্থায় নিয়ে ওই ঘরে বাস করতে হচ্ছে তাঁকে।
ঝিটকা নতুন বাজারের ব্যবসায়ী রাজিব জানান, "রাস্তাঘাট উন্নয়ন হওয়ায় এই ঘাটে এখন মানুষ পারাপারের চাপ নেই। ফলে খেয়া নৌকায়ও আগের মতো আয় রোজগার নেই। তারপরেও টুকটাক যা হয়, এই দিয়েই মহিলা খুব কষ্ট করে চলে। ছোট ছেলেটাকে কোলে নিয়ে খেয়া পারাপার করতেও দেখেছি আমরা। স্বামীর মৃত্যুর পর এই খেয়া নৌকায়ই ছিল তাঁর জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। নদীর পাড়ে টং ঘর তোলে সারা রাত নদীর পাড়েও কাটিয়েছেন মানুষ পারাপারের জন্য।
চপলা রানীর ছেলে আকাশ চন্দ্র দাস বলেন, `শিশুকালেই বাবাকে হারিয়েছি। আমার মা এই নৌকা চালিয়েই আমাকে বড় করেছে। আমি ও আমার ছোট বোন গোপীনাথপুর উত্তর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। টাকার অভাবে আর পড়াশোনা করতে পারিনি। ছোট বোনটির এখন অনেকটা বিয়ের বয়স হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের যে অর্থনৈতিক অবস্থা তাতে খুব চিন্তায় আছি। পড়াশোনা করতে না পারায় আমি ছোটবেলা থেকেই মাকে খেয়া ঘাটে সহযোগিতা করতাম। বর্তমানে নতুন বাজারের কাঁচামালের ব্যবসায়ী শফি ভাইয়ের মাধ্যমে কুটির বাজারে কাঁচা মালের ব্যবসা করি। বাজার ভাঙার পরে আমি বেলা ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই খেয়া ঘাটে নৌকা চালাই। আর সকাল ৬টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত আমার মা নৌকা চালায়। মূলত আমরা মা ছেলে মিলেই যে যখন পারি এই খেয়া চালাই।'
খেয়া ঘাটের আয়ের ব্যাপারে আকাশ চন্দ্র দাস বলেন, গোপীনাথপুর গ্রামের তিনটি পাড়া থেকে বছরে ১২ / ১৩ মন ধান পাই। এ ছাড়া প্রতিদিন পারাপারে ৫০ / ৬০ টাকার মতো আসে। আগে এর চেয়ে বেশি হতো। বর্তমানে রাস্তা ঘাট ভালো হওয়ায় এ পথে মানুষজন তেমন আসে না।
চপলা রাণী দাস বলেন, আমার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় ও খেয়া নৌকা চালিয়েছি। অসুস্থ হয়ে তিন বছর ঘরে পড়ে থাকার পর সে মারা যায়। শিশু সন্তান নিয়ে এই খেয়া চালিয়েই অনেক কষ্টে এ পর্যন্ত টিকে আছি। এখন পারাপারের লোকজন তেমন হয় না। সকালে বাজারের সময় কিছু লোক পার হয়। গোপীনাথপুর গ্রামের মানুষ প্রতিবছর ধান দেয়। ঈদের মাঠ থেকেও কিছু টাকা পয়সা তারা ওঠায় দেয়। তাঁদের সহযোগিতায় বেঁচে আছি। এ ছাড়া বিধবা ভাতার একটা কার্ড পাইছি। সব মিলিয়ে কোনো রকমে চলে। তবে আমার বড় সমস্যা হলো একটা মাত্র ঘর। অনেক আগে কারিতাসের একটা ঘর পাইছিলাম। তাও এখন টিন নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। তাই সরকারিভাবে একটা ঘর পাইলে দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে কোনো রকম থাকবার পারতাম।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিগগিরই চপলা রানীকে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।
টানা বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন নিচু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক ডুবে যাওয়ার পাশাপাশি বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও পানি ঢুকে পড়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে নগরবাসী।
৪৩ মিনিট আগে১০০ শয্যার ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৮০০ রোগী সেবা নিয়ে থাকে। জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এখানে চিকিৎসার জন্য আসে। তবে প্রতিষ্ঠানটিতে দালাল চক্রের সক্রিয়তার কারণে তাদের ভোগান্তিতে পড়া নিত্যদিনের চিত্র হয়ে উঠেছে।
১ ঘণ্টা আগেগাইবান্ধা শহরে ৯৩টি বিদ্যুতের খুঁটির জন্য ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারী, যাত্রী ও যানবাহনের চালকেরা। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাঁদের। জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিভাগকে টাকা দেওয়ার পরও সড়কে থাকা ৪৪টি বৈদ্যুতিক খুঁটি এখনো সরানো হয়নি। জেলা শহরের পশ্চিমে পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে পূর্বে
১ ঘণ্টা আগেবুধবার (১৮ জুন) বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সহধর্মিণী ও চিকিৎসক জোবাইদা রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে খুলনার তেরখাদার ইখরিতে স্থানীয় আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া তারবিয়াতুল উম্মাহ কওমি মহিলা মাদ্রাসা এতিমখানায় কোরআন খতম ও খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগে