Ajker Patrika

নওগাঁর ইমো হ্যাকারদের প্রশিক্ষণ দেয় মাদারীপুরের চক্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

হুট করেই প্রবাসী কোনো ব্যক্তির ইমো নম্বর থেকে দেশে তাঁর কোনো ঘনিষ্ঠজনের কাছে বার্তা আসে। নানা সমস্যার কথা জানিয়ে তাদের কাছে চাওয়া হয় টাকা। দেশে থাকা ঘনিষ্ঠজন বা পরিবারের সদস্যরা চিন্তা না করেই মেসেজে পাওয়া বিকাশ নম্বর বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেয়। পরে দেখা যায় যে, ইমো নম্বরটি হ্যাক করে প্রতারকেরা প্রবাসী ব্যক্তির অসুস্থতা বা সমস্যার কথা বলে হ্যাকারেরা টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। 

সম্প্রতি এক ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইমো হ্যাকার চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ওয়ারী) বিভাগ। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের অধিকাংশের বাড়ি রাজশাহী ও নওগাঁ জেলায়। 

আজ সোমবার রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুণ অর রশীদ। গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা অল্প শিক্ষিত হলেও ইমো হ্যাক করায় তাঁরা ছিল দক্ষ। সর্বোচ্চ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করা এই হ্যাকাররা ইমো হ্যাক করার প্রশিক্ষণ নিত মাদারীপুরের একটি চক্রের কাছ থেকে। বিনিময়ে তাদের দিতে হতো মোটা অঙ্কের টাকা। 

গত ৯ অক্টোবর রাতে নুরুল ইসলামের বড় ভাই কাতার প্রবাসী কাশেমের ইমো আইডি থেকে একটি মেসেজ আসে। যেখানে বলা হয়, ‘আমার টাকার প্রয়োজন, আমি বিকাশ নম্বর পাঠাইলে টাকা দিও।’ পরে গত ১০ অক্টোবর দুপুরে নুরুল ইসলামের ইমোতে আরও একটি মেসেজ আসে, ‘আজকে বিকাশের রেট কত? ২৫ হাজার টাকা পাঠানো যাবে।’ এরপর আরও কয়েকটি মেসেজ ও ভয়েস মেসেজ আসে। ভিকটিম নুরুল ইসলাম সেই মেসেজের ওপর ভিত্তি করে হ্যাকারদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে তিনবারে (২৫০০০ + ২৫০০০+ ১৫০০০) ৬৫ হাজার টাকা পাঠান। পরে নুরুল তাঁর ভাই আবুল কাশেমকে ৬৫ হাজার টাকা পাঠানোর কথা জানান। জবাবে কাশেম জানান, তাঁর ইমো আইডি হ্যাক হয়েছে। একই কৌশল অবলম্বন করে চক্রটি গত তিন মাসে ৫০ লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা প্রবাসীদের স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনদের কাছে থেকে। 

ভুক্তভোগী নুরুলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মো. আব্দুল মমিন (১৮), মো. রবিউল ইসলাম ওরফে রবি (১৮), মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে শহিদ (১৯), মো. সাব্বির (১৮), মো. চাঁন মোল্লা (৩৫) ও মো. আরিফুল ইসলাম (২৬)। তাদের কাছে থেকে ১২টি মোবাইল ফোন, হ্যাকিংয়ের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের ১৯টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়। 

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান বলেন, ‘ইমো হ্যাক করার জন্য যারা প্রশিক্ষণ দেয় তাদের কয়েকজনকে আমরা চিহ্নিত করতে পেরেছি। তাদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমাদের টিম মাঠে কাজ করছে। আশা করছি খুব দ্রুতই তাদের আটক করা হবে।’ গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপির ওয়ারী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত