Ajker Patrika

জগন্নাথপুরে প্রাণহানির শোক নিয়ে ১৮ ঘণ্টা পর ফের ছুটল এগারসিন্দুর 

নাজমুল হাসান সাগর, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) থেকে
আপডেট : ২৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২: ৩২
জগন্নাথপুরে প্রাণহানির শোক নিয়ে ১৮ ঘণ্টা পর ফের ছুটল এগারসিন্দুর 

ভয়াবহ দুর্ঘটনার প্রায় ১৮ ঘণ্টা পর জগন্নাথপুর আউটার স্টেশনের শোক ও বিষাদ মাড়িয়ে আবারও যাত্রী বোঝাই করে ভৈরব স্টেশন ছাড়ল দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন এগারসিন্দুর। 

আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা থেকে ভৈরব স্টেশনে প্রবেশ করে এই ট্রেন। কিছু সময় স্টেশনে থেমে আবারও কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা করে। 

সকাল ৭টা ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে জানিয়ে ভৈরব স্টেশনের মাস্টার ইউসুফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এগারসিন্দুর নতুন তিনটি বগি যুক্ত করে ঢাকা থেকে ফিরেছে। ১৫টি বগি নিয়ে ঢাকায় যায়। পরে ১৮টি বগি নিয়ে কিশোরগঞ্জে ফিরেছে।’

ঘটনাস্থলে থাকা স্থানীয় উৎসুক জনতা এই এগারসিন্দুরকে যেন আবার নতুন করে চিনল, দেখল ৷ দুর্ঘটনার পর প্রথম চলতে দেখা এই ট্রেনের ছবি তুলে রাখলেন কয়েকজন। 

এর আগে গতকাল সোমবার বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে কিশোরগঞ্জ থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ভৈরব ত্যাগ করার সময়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন ১৮ জন, আহত হন শতাধিক যাত্রী। আহতদের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। 

এ ছাড়া গুরুত্ব আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল ও পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে রাত সাড়ে ৩টার দিকে উদ্ধারকাজ সমাপ্ত ঘোষণা করে ফায়ার সার্ভিস। 

মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দিনের আলো ফুটতেই আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ট্রেনের ধ্বংসাবশেষ দেখতে ছুটে এসেছে অনেকেই। তারা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে রেললাইনে পড়ে থাকা দুর্ঘটনার শিকার যাত্রীদের ছিন্নভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, রক্তের ছাপ, পরিধেয় কাপড়সহ নানা কিছু।

যাত্রী বোঝাই করে ভৈরব স্টেশন অতিক্রম করল দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন এগারোসিন্ধু। ছবি: আজকের পত্রিকা

অনেকেই এসব চিত্র দেখে ভয়ার্ত কণ্ঠে আঁতকে উঠছে। কেউ বা তুলছেন ছবি। রেললাইনের সঙ্গে লেগে থাকা মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের অংশ দেখে ভয় পাচ্ছে কেউ কেউ। সময়ের সঙ্গে বাড়ছে উৎসুক জনতার ভিড়। তবে এখানে নেই কোনো নিরাপত্তাকর্মী বা পুলিশের সদস্য। 

ঘটনাস্থলেই পাওয়া গেল এগারসিন্দুর ট্রেনের এক যাত্রীকে। নাম মনোয়ার হোসেন, স্থানীয় আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। পেশায় হকার মনোয়ার কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর স্টেশন থেকে এগারসিন্দুর ট্রেনে ওঠেন।

নিয়মিত এই ট্রেনে যাতায়াত করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি বাজারে ব্রাশ বিক্রি করি। নিয়মিত এগারসিন্দুর ট্রেনে করে বাড়ি ফিরি। গতকালও ট্রেনটির মাঝামাঝি একটি বগিতে করে ভৈরবে এসেছি। স্টেশনে নেমে বাড়িতে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে খেতে বসেছি। এরই মধ্যে শুনি দুর্ঘটনা হয়েছে। এসে দেখি, আমি যে ট্রেনে ছিলাম সেই ট্রেনই দুর্ঘটনার শিকার।’ 

মনোয়ার আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনা দেখে নিজেকে ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। কারণ দুর্ঘটনার ১৫ মিনিট আগে ট্রেন থেকে নেমে গেছি। মানুষের কান্না আর আহাজারি সহ্য করার মতো ছিল না। অনেক মানুষ মৃত অবস্থায় পড়ে ছিল।’ 

রেলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ট্রেনটির শেষের বগিটি ছিল গার্ড বগি। এই বগিতে বসতেন ট্রেনের গার্ড বা পরিচালক। আলাউদ্দিন নামের সেই গার্ডও গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের বিপক্ষে সেমির আগেই ধাক্কা খেল অস্ট্রেলিয়া

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত