Ajker Patrika

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি সন্তানের জন্য কাঁদছেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত বাবা

নাগরপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
জলদস্যুদের হাতে জিম্মি সন্তানের জন্য কাঁদছেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত বাবা

দুদিন আগে (সোমবার) বিকেলে ফেসবুক পোস্টে বিষুব রেখা অতিক্রম করার কথা জানিয়েছিলেন টাঙ্গাইলের সাব্বির হোসেন। মাথা ন্যাড়া করা ছবিও পোস্ট করেছিলেন। পরদিন মঙ্গলবার পরিবার জানতে পারে আরব সাগরে তাদের জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়েছে, তাদের জিম্মি করা হয়েছে। এর মধ্যে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারেনি সাব্বির। 

টাঙ্গাইলের নাগরপুরের সহবতপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গা ধলাপাড়া গ্রামের হারুন-অর রশিদের ছেলে সাব্বির হোসেন। ভারত মহাসাগরে ভাসমান এমভি আব্দুল্লাহ নামের জাহাজে ডেক ক্যাডেট হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন তিনি। যেটি এখন সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি। 

এ খবরে টাঙ্গাইলে সাব্বির হোসেনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পক্ষাঘাতগ্রস্ত বাবা হারুন-অর রশিদ ঘরে শুয়ে থেকে থেকে হাউমাউ করে কেঁদে উঠছেন। বুক চাপড়ে আহাজারি করছেন মা সালেহা বেগম। ভেঙে পড়েছেন একমাত্র বোন মিতু আক্তার। 

জানা গেছে, চট্টগ্রামের মেরিন একাডেমিতে পড়ালেখা শেষে ২০২২ সালের জুনে জাহাজে চাকরি যোগদান করেন সাব্বির হোসেন। কৃষক বাবা শ্রমের অর্থ দিয়ে পড়ালেখা শেষ করেছেন। বোনটির বিয়ে হয়ে গেছে। বাবা হারুন অর রশিদ এখন পক্ষাঘাতগ্রস্ত। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের এই পরিবারে এখন একমাত্র উপার্জনক্ষম সাব্বির। মঙ্গলবার ঘটনার বিষয়ে পরিবারকে কিছুই জানাননি তিনি, সকাল থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ পেয়েছে পরিবারের লোকজন। 

সাব্বিরের বোন মিতু আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভাই সোমবার বিকেলে ফেসবুক পোস্টে বিষুব রেখা অতিক্রম করার কথা জানায়। মাথা ন্যাড়া করে ছবি দিয়েছে। এক মাস আগে সে বাড়ি এসে পরদিনই চলে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ।’ 

জলদস্যুদের হাতে সন্তানের জিম্মি হওয়ার খবরে ডুকরে কাঁদছেন মা। ছবি: সংগৃহীততিনি আরও বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে জলদস্যুর কবলে পড়ার খবর পেয়ে আমরা সবাই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। মা-বাবা খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে সারাক্ষণ কাঁদছেন। ভাইয়ের কিছু হলে তাঁদের বাঁচানো যাবে না।’ 

সাব্বিরের চাচাতো ভাই আহম্মেদ হোসেন রানা আজকের পত্রিকাকে জানান, বাবা কৃষিকাজ করে সংসার চালাতেন। এখন পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে শয্যাশায়ী। অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছেন সাব্বির। বোনের বিয়ে হয়েছে। বাড়িতে এখন তার বাবা-মা থাকেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম সাব্বিরের কিছু হলে, পরিবারটির চলার কোনো উপায় থাকবে না। 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাব্বির আমাদের এলাকার গর্ব। সাব্বিরের পরিবারের জন্য সব সময় আমার পক্ষ থেকে সহযোগিতা থাকবে। সাব্বির আমাদের মাঝে ফিরে আসুক এরাই আমারদের প্রত্যাশা।’ 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজা মো. গোলাম মাসুম প্রধান আজকের পত্রিকা বলেন, ‘সরকারিভাবে তাদেরকে উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে। নাগরপুর উপজেলা প্রশাসন সাব্বিরের পরিবারের পাশে আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত