Ajker Patrika

শীতলক্ষ্যার ওয়াকওয়েতে বেড়ে চলেছে কিশোর গ্যাংয়ের আতঙ্ক

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ মে ২০২২, ২৩: ৫৯
শীতলক্ষ্যার ওয়াকওয়েতে বেড়ে চলেছে কিশোর গ্যাংয়ের আতঙ্ক

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদী দখল ও অবৈধ বালু-পাথর ব্যবসা বন্ধে নির্মিত ওয়াকওয়েকে ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে কিশোর গ্যাংয়ের আতঙ্ক। ২০১৪ সালে নির্মিত ওয়াকওয়েতে বিকেল হলেই সব বয়সী মানুষের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে। দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে আসেন লোকজন। কিন্তু কিশোর গ্যাংয়ের আতঙ্কে সেই উৎসাহে ভাটা পড়েছে। চুরি-ছিনতাইয়ের স্বীকার হচ্ছেন ঘুরতে আসা মানুষেরা। 

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানের পরও থামছে না কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা। ছোট বিষয় নিয়েও এরা জড়িয়ে পড়ছে সহিংসতায়। ওয়াকওয়েতে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া, তরুণীদের উত্ত্যক্ত করা, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। 

স্থানীয়রা জানান, এই ওয়াকওয়েতে অন্তত ৮টি কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। সিদ্ধিরগঞ্জের সাইলো ও সিদ্ধিরগঞ্জ আমতলা ও ওমরপুরে আছে তিনটি গ্যাং, সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার এলাকায় একটি, সর্দার পাড়ায় দুইটি ও সিদ্ধিরগঞ্জ রেললাইন এলাকায় রয়েছে একটি গ্যাং। এসব গ্রুপের আধিপত্য বিস্তার, সিনিয়র-জুনিয়র সংঘর্ষ, নারীঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঘটছে সহিংসতা। অস্ত্র হিসেবে তারা ব্যবহার করছে ছুরি বা চাকু বা চাপাতির মতো ধারালো বস্তু। 

সিদ্ধিরগঞ্জের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক বলেন, ‘সমাজের এক শ্রেণির লোক এই কিশোরদের বিভিন্ন ধরনের অপরাধে সম্পৃক্ত করছেন। প্রভাবশালী মহল তাঁদের দিয়ে মাদক বিক্রয় করছে।’ 

ঘুরতে আসা আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘ওয়াকওয়ে আমাদের বাড়ির পাশে হওয়ায় প্রায় আমার যাতায়াত ছিলো। আগে প্রতি শুক্রবার বিকেলে আমাদের পরিবারের সবাইকে নিয়ে এখানে হাটতে আসতাম। এখন ওয়াকওয়েতে প্রচুর বাইক চলে ও বখাটে ছেলেদের আড্ডায় পরিণত হওয়ায় আর আগের মতো আসা হয় না।’ 

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মসিউর রহমান বলেন, ‘কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা আবারও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাদের প্রতিরোধ করতে আমরা তৎপর আছি। পুলিশের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের পাশাপাশি পরিবার ও সমাজকে দায়িত্ব নিতে হবে। তাহলেই কিশোর অপরাধ দমন করা সম্ভব।’ 

সর্বশেষ, গত ১৪ মে সিদ্ধিরগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর ওয়াকওয়ের শ্মশানঘাটে আরাফাত হোসেন রিয়াদ (১৭) নামে এক কিশোরকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করা হয়। এ সময় তার চিৎকার শুনে তার বন্ধু এগিয়ে আসলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে এলাকাবাসীরা তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে আহতরা চিকিৎসাধীন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত