Ajker Patrika

ঈদের একটি জামাতও নিরাপত্তার বাইরে থাকবে না: ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৫, ১৪: ৩৮
জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানী ঢাকায় ঈদুল আজহার একটি জামাতও নিরাপত্তার বাইরে থাকবে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। আজ ‎শুক্রবার সকালে জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা জানান। ‎

‎রাজধানীবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৭টায়। এখানে একত্রে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারপতি, উপদেষ্টা, ঢাকাস্থ মুসলিম দেশের কূটনীতিক এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করবেন। ঈদগাহে চারটি পুরুষ ও একটি মহিলা গেটসহ মোট পাঁচটি গেট দিয়ে মুসল্লিরা ঈদের জামাতে প্রবেশ করতে পারবেন। ‎

‎জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের ঈদ জামাতের ব্যাপারে তিনি বলেন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মোট পাঁচটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তার মধ্যে প্রথম জামাত শুরু হবে সকাল ৭টায়। আবহাওয়া প্রতিকূল থাকলে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্রধান জামাত বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে।

‎‎শেখ মো. সাজ্জাত আলী আরও বলেন, এ বছর ঢাকা মহানগরীতে মোট ১১৮টি ঈদগাহ এবং ১৬২১টি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া মহানগরীতে শিয়া ও কাদিয়ানি সম্প্রদায় কর্তৃক আটটি এবং সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে তিনটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ‎

‎তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঈদগাহ, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এবং ঢাকার অন্যান্য স্থানে অনুষ্ঠিতব্য ঈদের জামাতের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটি সমন্বিত, সুদৃঢ় ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত উপলক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের এলাকায় ইতিমধ্যে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে এবং ঈদগাহ ময়দানে স্থাপিত অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোলরুম থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ‎

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ঈদগাহ ময়দানে আসার প্রধান তিনটি রাস্তার প্রবেশমুখে অর্থাৎ, মৎস্য ভবন ক্রসিং, প্রেসক্লাবের সামনে ও হাইকোর্ট ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড ও তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশপথগুলোতে আর্চওয়ের মাধ্যমে সব মুসল্লিকে প্রবেশ করতে হবে। এ ছাড়া মেটাল ডিটেক্টর দিয়েও ম্যানুয়াল তল্লাশির ব্যবস্থা থাকবে। নারীদের জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্থা, প্রবেশপথ ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে।

ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের এলাকা এসবির সুইপিং টিম এবং সিটিটিসির ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করা হবে। ডিএমপির সোয়াট ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। ডিবি ও সিটিটিসির পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য সাদা পোশাকে মোতায়েন থাকবেন এবং পুরো এলাকায় আলাদা নিরাপত্তাবলয় তৈরি করা হবে। নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য ইতিমধ্যে ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। নিরাপত্তা প্রদানে নিয়োজিত অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। ‎

‎তিনি আরও বলেন, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম কেন্দ্রিক একই ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অন্যান্য ঈদগাহের ক্ষেত্রে ডিএমপির প্রতিটি ক্রাইম বিভাগ আয়োজক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। মহানগরীর একটি ঈদ জামাতও নিরাপত্তা ব্যবস্থার বাইরে থাকবে না। ‎

‎নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশি কার্যক্রমে সহযোগিতা করার জন্য নগরবাসীকে অনুরোধ করছি। ঈদের জামাতে কোনো ধরনের ব্যাগ, ধারালো বস্তু বা দাহ্য পদার্থ সঙ্গে না আনার জন্য অনুরোধ করছি। ঈদের জামাত শেষে তাড়াহুড়ো না করে সুশৃঙ্খলভাবে বের হবেন। সন্দেহজনক কিছু মনে হলে অনতিবিলম্বে নিকটস্থ পুলিশ সদস্যকে জানাবেন। ‎

‎এ সময় তিনি নগরবাসীকে ঈদের ছুটির সময় মহানগরীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নগরবাসীর সহায়তা প্রত্যাশা করে ডিএমপির পক্ষ থেকে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেগুলো মেনে চলারও আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি কোরবানির পশুর বর্জ্য সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা এবং যেকোনো সহায়তায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ ও পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ‎

‎ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাতের নিরাপত্তায় ৫০০ এবং দিনে ২৫০টি পেট্রল টিম থাকবে। পাশাপাশি গাড়ি, ফুট পেট্রল ও মোবাইল পেট্রল থাকবে। আমরা সবাইকে সজাগ করছি। যে অফিসাররা অফিসে থাকেন, বাইরে কম বের হন, তাঁদেরও দায়িত্ব বণ্টন করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সুপারভিশন করার জন্য মাঠে থাকবেন। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না। এ ছাড়া সড়কে চেকপোস্ট তল্লাশি থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত