Ajker Patrika

দৌলতদিয়া ঘাটে ঘরমুখী মানুষের ভিড়

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২২, ১৬: ০৭
দৌলতদিয়া ঘাটে ঘরমুখী মানুষের ভিড়

ঈদুল আজহার ছুটিতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট দিয়ে আজ সোমবার সকাল থেকেই ঘরমুখী মানুষের ভিড় লক্ষ করা গেছে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ ঈদের পরদিনও পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে ফিরছেন। আজ সোমবার সকাল থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে আসা প্রতিটি ফেরি ও লঞ্চে ঘরমুখী মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া প্রান্তে যানবাহনের কোনো সিরিয়াল নেই। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে পণ্যবাহী ট্রাক ও দূরপাল্লার গণপরিবহন যা আসছে তা লাইনে দাঁড়িয়ে না থেকেই পছন্দমতো ঘাটে গিয়ে ফেরিতে উঠতে পারছে। অনেক সময় ফেরি ফাঁকা রেখেই পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে ফেরি। পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা অধিকাংশ ফেরিতে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেলের পাশাপাশি ঘরমুখী মানুষের চাপ ছিল বেশি। সকালের দিকে বাসসহ অন্যান্য গাড়ি তেমন একটা ছিল না। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গণপরিবহনের সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

রো রো ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর বেলা ১১টার দিকে দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ফেরিঘাটে এসে ভেড়ে। ফেরি থেকে ১টি বাস,২টি ট্রাক, ৮-১০টি ব্যক্তিগত গাড়ি ও শতাধিক মোটরসাইকেলের পাশাপাশি ছয় শতাধিক ঘরমুখী মানুষকে নামতে দেখা যায়। 

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা রাজবাড়ীর পাংশাগামী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। ছুটি পেয়েছি শনিবার থেকে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত। কিন্তু ব্যক্তিগত কিছু কাজ থাকায় তিন দিন ঢাকাতেই থাকতে হয়েছে। আজ সকাল আটটার দিকে গাবতলী থেকে লোকাল বাসে রওনা করে কোনো প্রকার ভোগান্তি ছাড়াই পাটুরিয়া ঘাটে এসে নামি। ফেরিতে নদী পাড়ি দিয়ে দৌলতদিয়ায় এসে দেখছি কী করে বাড়ি যাওয়া যায়। অন্যান্যবারের চেয়ে আজ অনেকটা সহজেই ঘাট পাড়ি দিতে পারলেও ফেরিতে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।’ 

অপরদিকে ফেরির পাশাপাশি পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি লঞ্চে ছিল মানুষের ভিড়। ফেরিতে যানবাহনের সঙ্গে মানুষের উপচে পড়া ভিড় এড়াতে অনেকে লঞ্চে নদী পাড়ি দিচ্ছেন। 

মানিকগঞ্জ থেকে মধুখালী বাবার বাড়ি যাচ্ছিলেন সালমা বেগম। তিনি বলেন, ‘বাড়িতে কোরবানি করে গোশত নিয়ে সন্তান ও ছোট বোনকে নিয়ে বাবার বাড়ি বেড়াতে যাচ্ছি। ঘাটের দুর্ভোগ এড়াতে সকালে লোকাল বাসে করে পাটুরিয়া নেমেই ফেরিতে উঠে পড়ি। ঘাটে এসে দেখি তেমন কোনো দুর্ভোগ নেই। মানুষের ভিড়ের কারণে উঠতে একটু কষ্ট হলেও স্বস্তিতেই নদী পাড়ি দিয়ে এসেছি।’ 

কুষ্টিয়ার জরিনা বেগমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘বাবারে আমরা গরিব মানুষ, কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নাই। ঢাকাতে ঈদের দিন অনেক বাসা থেকে গোশত দেয়। সেই গোশত নিয়ে আজ সোমবার বাড়িতে যাচ্ছি। তবে বিগত বছরের তুলনায় এ যেন এক নতুন দৌলতদিয়া দেখছি। এমন স্বস্তিতে কোনোবারই বাড়ি ফিরতে পারিনি।’ 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে যানবাহনের চাপ কম থাকায় ছোট-বড় ২১টি ফেরির মধ্যে ১১টি চালু রাখা হয়েছে। যানবাহনের চাপ বাড়লে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে। এখন পর্যন্ত যানবাহন পারাপারে খুব বেশি বেগ পোহাতে হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত