Ajker Patrika

ধামরাইয়ে রাস্তা কেটে জমি দখলের অভিযোগ, ভোগান্তিতে পথচারীরা 

ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২২, ১২: ১০
ধামরাইয়ে রাস্তা কেটে জমি দখলের অভিযোগ, ভোগান্তিতে পথচারীরা 

ঢাকার ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের একটি রাস্তার মাটি কেটে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় একটি চক্রের বিরুদ্ধে। নিজেদের মাটি কাটার যন্ত্র এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে দীর্ঘদিনের চলাচলের এই রাস্তার মাটি কেটে জনগণের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এলাকার কয়েকশ মানুষ। এ ঘটনায় ধামরাই থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করাও হয়েছে। 

গত সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে এবং মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের ডাউটিয়া এলাকার একটি আঞ্চলিক রাস্তার মাটি কেটে জনগণের চলাচল বন্ধ করা হয়। এরপর বুধবার রাতে ধামরাই থানায় চারজনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেন শরিফুল ইসলাম নামের এক ভুক্তভোগী। 

অভিযুক্তরা হলে উপজেলার সোমভাগ ইউনিয়নের ডাউটিয়া এলাকার ফজর আলীর ছেলে জাকির হাসান (২৮), ফারুক হোসেনের ছেলে সোহেল রানা (২৭), কাবিলার ছেলে জুয়েল রানা (২৯) ও সাবেদ আলীর ছেলে ফরিদ হোসেন (৩০)। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশের ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েকটি কারখানার শ্রমিকসহ কয়েক শ মানুষ চলাচল করে। জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার জন্য কয়েক বছর আগে স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে ওই রাস্তা নির্মাণ করা হয়। তবে একটি প্রভাবশালী মহল রাস্তার জমির মালিকানা দাবি করে মাটি কাটছে। 

রাস্তার মাটি কাটায় ভোগান্তিতে পথচারীরা। ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম জানান, সড়ক ও জনপথের রাস্তার মাটি ভেকু দিয়ে কেটেছেন জাকির হোসেন, জুয়েল রানা, সোহেল রানা, ফরিদ হোসেনসহ তাদের সহযোগীরা। এর কারণে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এই রাস্তা কাটায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন যাঁরা কারখানায় চাকরি করেন। তাঁরা প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে কারখানায় যাতায়াত করেন। এখন প্রায় এক-দেড় কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে তারা কারখানায় যান। 

শরিফুল আরও বলেন, ‘জাকির ও তাঁর সহযোগীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস করে না। তবে তাঁরা সড়কের মাটি কেটে যে দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছেন, তার বিচার চাই আমরা। এলাকার সবার পক্ষ থেকেই আমি অভিযোগ দায়ের করেছি।’ 

অভিযুক্ত ফরিদ হোসেন জানান, যাদের জমি তারাই মাটি কেটেছে। এটা সড়ক ও জনপথের জায়গা না। এটা ব্যক্তিমালিকানার জায়গা। নিজের জমি না হলে এভাবে কি কেউ মাটি কেটে নেয় নাকি? যাদের জমি তারা মাটি কেটেছে, এতে জনগণের কী! 

এ বিষয়ে সোমভাগ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আজাহার আলী জানান, ‘আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় কয়েক বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে ও স্থানীয়দের সহায়তায় ওই সড়ক পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। সড়কটি কাটায় জনগণের দুর্ভোগ বেড়েছে। যারা এ ধরনের কাজ করেছে তাদের আইনের আওতায় আনা উচিত। 

সোমভাগ ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান প্রভাষক আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। এ ব্যাপারে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। থানা যদি বিষয়টি আমাকে সমাধানের দায়িত্ব দেয়, তাহলে আমার আন্তরিকতার কমতি থাকবে না। যেহেতু থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, সেহেতু বিষয়টি থানা দেখবে।’ 

অভিযোগ দায়েরের বিষয়ে জানতে চাইলে ধামরাই থানার অফিসার্স ইনচার্জ আতিকুর রহমান বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী জানান, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গাউস উল হাসান মারুফ বলেন, ‘আমাদের জমি কেউ দখল করতে এলে আইনি ব্যবস্থা নেব। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত