Ajker Patrika

টাঙ্গাইলে যমুনায় ৫ শতাধিক ঘর-বাড়ি বিলীন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলে যমুনায় ৫ শতাধিক ঘর-বাড়ি বিলীন

টাঙ্গাইলের সদর উপজেলার কাকুয়া ইউনিয়নে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে গত এক সপ্তাহে চড়পৌলী এলাকার পাঁচ শতাধিক বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। গত কয়েক দিনের প্রায় তিন শতাধিক বাড়ি ঘর নদী গর্ভে চলে গেছে। 

জানা যায়, প্রতি বছর যমুনার পানি বৃদ্ধি ও কমায় এ সময় এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। এবার মাত্র কয়েক দিনেই ৫ শতাধিক বাড়ি বিলীন হয়েছে। তাই হুমকির মুখে রয়েছে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। 

স্থানীয়রা বলেন, গত ২০ থেকে ২৫ বছর যাবৎ তারা একটি বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় প্রতি বছর তাদের এই ভাঙনের কবলে পড়তে হচ্ছে। 

সরেজমিনে চরপৌলী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নদী তীরের মানুষেরা ঘর-বাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। গাছগুলোও কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে নদীতীরে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে ঘর সরিয়ে নেওয়ার কর্মযজ্ঞ। এলাকার ইউনুস আলী, হাফিজুল ইসলাম খান, শহিদুল ইসলাম, হাফিজুল মোল্লা ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। বাড়ির ছেলে, বৃদ্ধ ও নারী সদস্যরাও ঘরবাড়ি সরানোর কাজে সহযোগিতা করছেন। 

চরপৌলী গ্রামের সাইফুল ইসলাম খান জানান, তাঁর একটি কাঠ চেরাইয়ের মেশিন ছিল। সেখানে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার কাঠ ও কেটে আনা গাছের গুঁড়ি ছিল। গত শুক্রবার রাতে প্রবল ভাঙন শুরু হলে কোনো মতে মেশিন সহ কিছু কাঠ সরাতে পেরেছি। অনেক গাছের গুঁড়ি নদীতে ভেসে গেছে। 

সুরামন আলী নামের একজন জানান, গত ১০ বছরে তিনবার বসত ভিটা নদী গর্ভে চলে গেছে। এবার বাড়ি করার মতো কোনো জায়গা নেই। কোথায় থাকবেন তারও কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। এখন ঘরগুলো খুলে নিয়ে রাস্তার পাশে রাখা হয়েছে। গত ২০ বছর ধরে একটি বাঁধ চাইতেছি সরকারের কাছে। কিন্তু বাঁধ দিল না। এক সময় আমার বিশ বিঘা জমি ছিল আর এখন বাড়ি করার মতো আর কোনো জায়গা নেই। 

আনছের আলী নামের একজন জানান, প্রতিবছর এই গ্রামে ভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু এখানে কোনো বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে না। তাই প্রতি বছর শত শত মানুষ গৃহহারা হচ্ছেন। 

শুধু বাড়িঘর নয়, চরপৌরী মিন্টু মেমোরিয়াল হাইস্কুল, চরপৌলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরপৌলী দাখিল মাদ্রাসা, উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হুমকির মুখে রয়েছে। যে কোনো সময় নদী গর্ভে এ প্রতিষ্ঠানগুলো বিলীন হতে পারে। 

কাকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মো. আলী জিন্নাহ জানান, ভাঙনের বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদে জানানো হয়েছে। মাত্র কয়েক দিনেই ৫ শতাধিক বাড়ি বিলীন হয়েছে। তাই হুমকির মুখে রয়েছে চরপৌলী মিন্টু মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ চরপৌলী দাখিল মাদ্রাসা। ভাঙন রোধে এখানে বাঁধ নির্মাণ করা জরুরি। তা না হলে আগামী দুই এক বছরের মধ্যেই চরপৌলী গ্রামটি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। 

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে জরুরি কাজ করে এ ভাঙন ঠেকানো যাবে না। শুকনা মৌসুমে এখানে স্থায়ী বাঁধের কাজ শুরু হবে। সে কাজের দরপত্র আহ্বান খুব দ্রুতই করা হবে। 

জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি জানান, ভাঙন কবলিতদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে জরুরি খাদ্য সহায়তা পাঠানো হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের কীভাবে পুনর্বাসন করা যায় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তামিম কি তাহলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হবেন

রাজনৈতিক দলের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার অভিযোগ, হেফাজতে সেনা কর্মকর্তা

পিআর পদ্ধতিতেই হবে ১০০ আসনের উচ্চকক্ষ, ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত

নারীর ‘বগলের গন্ধ’ পুরুষের মানসিক চাপ কমায়, তবে কি মানুষেরও আছে ফেরোমোন!

বাংলাদেশি পণ্যে ভারতের চেয়ে কম শুল্কের ইঙ্গিত দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত