Ajker Patrika

রাজধানীর ডেমরায় পুলিশের ওপর হামলায় গ্রেপ্তার দুজন কারাগারে

শ্যামপুর-কদমতলী (প্রতিনিধি) ঢাকা 
উদ্ধারকৃত অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত
উদ্ধারকৃত অস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর ডেমরায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দেশীয় অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী রুদ্র বাহিনীর দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেই ডেমরা থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়েরের পর আজ শুক্রবার বিকেলে তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

গ্রেপ্তারকৃত রুদ্র বাহিনীর সদস্যরা হলেন—বাদশা ঢালী ও ছাফওয়ান হোসেন রিফাত। মারধরের শিকার অপহৃত মাছের খামারি রেজাউল হককে (৩৬) উদ্ধার করতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁদের হামলার শিকার হয় পুলিশ।

অপহৃত রেজাউল হক উদ্ধারের পর বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি ও হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন।

এ ছাড়া সারুলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আশরাফুজ্জামান বাদী হয়ে রুদ্র বাহিনীর ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে ৯৯৯-এর মাধ্যমে খবর পেয়ে সারুলিয়ার ওয়াসা রোড বালুর মাঠের পাশে একটি টিনের ঘর থেকে রেজাউলকে উদ্ধার করতে যায় স্থানীয় ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশ সেখানে পৌঁছালে আসামিরা অতর্কিত হামলা চালায়। লোহার শিকল দিয়ে কনস্টেবল জুয়েল রানার মাথায় আঘাত করা হয়। এ ছাড়া কয়েকজন আসামি কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে পুলিশ সদস্যদের জখম করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। কনস্টেবল জুয়েলকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার মাথায় ৮টি সেলাই দিতে হয়েছে।

সারুলিয়া ফাঁড়ির পুলিশের ওপর হামলার পরপরই ডেমরা থানা-পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ২ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ইখলাক খান রুদ্রের হেফাজতে থাকা দেশি চাকু, চাপাতি, দা, লোহার পাইপ ও অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় রুদ্র বাহিনীর প্রধান ইখলাক খান রুদ্র, সোহেল কাইলা সোহেল, সুজাত, ইমন, আব্দুল্লাহ, আকাশ, মো. সাজিত, হাফেজ, ছাফওয়ান হোসেন রিফাত ও বাদশা ঢালী এবং ২৫-৩০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি জড়িত ছিল। তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

ভুক্তভোগী রেজাউল হক জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা গত মঙ্গলবার করিম জুট মিলসের পাশে তার মাছের খামারে এসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে রাজি না হলে কর্মচারীসহ তাকে মারধর করা হয়। পরে তাকে অপহরণ করে ডেমরার ওয়াসা রোডের টিনের ঘরটিতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। সেখানে তাকে বেধড়ক মারধর করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। রেজাউল বলেছেন, এ ঘটনায় তার সহকর্মী টিপু সুলতান জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে ডেমরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রুদ্রের নেতৃত্বে একটি কিশোর গ্যাং এলাকায় চাঁদা আদায়, জমি দখল, অপহরণ এবং সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখানোর মতো অপরাধ করে আসছে।

এ বিষয়ে ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, রুদ্র বাহিনীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, অপহরণ ও কিশোর গ্যাং পরিচালনার একাধিক অভিযোগ রয়েছে। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

দলীয় সূত্র বলেছে, রাজনৈতিক পরিচয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ডেমরা থানা সভাপতি রুদ্রকে ইতিমধ্যেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। গত ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ স্থগিত করা হয়। তবে রাজনৈতিক পদ হারানোর পরেও তিনি অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত