Ajker Patrika

মহাসড়কে অবৈধ হাট ঈদে ভোগান্তির শঙ্কা

  • উচ্ছেদের পরপরই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবার বসে অবৈধ এসব হাট
  • প্রতিদিন দোকানপ্রতি ১৫০-২০০ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে
  • ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে: হাইওয়ে পুলিশ
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) সংবাদদাতা
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বসা অবৈধ হাট। এ কারণে প্রায়ই লেগে থাকে যানজট। সম্প্রতি গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বসা অবৈধ হাট। এ কারণে প্রায়ই লেগে থাকে যানজট। সম্প্রতি গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ওপর অবৈধ হাট-বাজার বসিয়ে চলছে ব্যবসা। যদিও মাঝেমধ্যে নামমাত্র উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। তবে একটু পরই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবার বসে এসব অবৈধ হাট। উচ্ছেদের এমন চোর-পুলিশ খেলার কারণে আসন্ন ঈদযাত্রায় জনভোগান্তির কারণ হতে পারে এই মহাসড়ক। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহাসড়কের বেশ কিছু পয়েন্টে হাট বসিয়ে চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা হচ্ছে।

এলাকাবাসী, পরিবহনশ্রমিক-যাত্রী ও পুলিশ সূত্র বলেছে, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গের ১৭টি জেলার যানবাহন চলাচল করে। অথচ কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক, সফীপুর, পল্লী বিদ্যুৎ, চন্দ্রা ত্রিমোড়, বোর্ডঘরসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ওভারপাসের নিচে ও ফুটপাতসহ এ মহাসড়কের ওপর ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট, অবৈধ হাট-বাজার বসিয়ে চলছে ব্যবসা। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মহাসড়কের পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার হাটের নিয়ন্ত্রণ করেন পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি সোহেল সরকার। তিনি বলেন, ‘যে টেন্ডার পাইছে সেই কালেকশন করে। আমার নামে তো টেন্ডার না, টেন্ডার হচ্ছে জাকিরের নামে।’ মহাসড়কে টেন্ডার কীভাবে হয় জিজ্ঞাসা করলে সোহেল বলেন, ‘জাকিরের সঙ্গে কথা বলেন।’ আপনি টাকা তোলেন জিজ্ঞাসা করলে বলেন, ‘আপনি খোঁজ নিয়ে দেখেন।’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, আগে আওয়ামী লীগ এবং বর্তমানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এ রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছে। এসব হাট-বাজারের শত শত দোকান থেকে প্রতিদিন দোকানপ্রতি ১৫০-২০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। হাইওয়ে পুলিশসহ সড়কসংশ্লিষ্ট কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ম্যানেজ করেই সিন্ডিকেট চক্র এ ব্যবসা চালিয়ে আসছে। আর সে জন্য সংশ্লিষ্টরা রয়েছেন নীরব দর্শকের ভূমিকায়।

স্থায়ীরা জানান, এবারের ঈদযাত্রা স্বস্তির করতে বিভিন্ন সময় প্রশাসনের উদ্যোগে মাইকিং করে এসব অবৈধ হাট-বাজার উচ্ছেদ অভিযান চালায় হাইওয়ে পুলিশ। কিন্তু অভিযান চালিয়ে উচ্ছেদ করার কিছুক্ষণ পরই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবার অবৈধ হাট-বাজার বসাচ্ছে সিন্ডিকেট চক্র।

উচ্ছেদের এমন চোর-পুলিশ খেলায় আসন্ন ঈদে মহাসড়কে যানজটে ভোগান্তির আশঙ্কা করছেন পরিবহনশ্রমিক, যাত্রী ও স্থানীয়রা।

বাসিন্দারা জানান, বছরে দুটি ঈদ, দুর্গাপূজাসহ বড় ছুটির সময়ে যানবাহনের চাপ বাড়ায় এখনো মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। শিল্পকারখানাগুলো একসঙ্গে ছুটি হলে এ মহাসড়কে চাপ বেড়ে যানজট আরও প্রচণ্ড হয়। এসব হাট-বাজার উচ্ছেদ করা না হলে আসন্ন ঈদযাত্রা স্বস্তিকর করতে প্রশাসনের নেওয়া সব প্রস্তুতি ভেস্তে যাবে।

এদিকে চাঁদা দিয়ে মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অটোরিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাহিন্দ্রাসহ বিভিন্ন অবৈধ যানবাহন। মহাসড়কের ওপর যত্রতত্র রয়েছে এসব যানবাহনের অবৈধ স্টেশন। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এ ছাড়া যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং, যাত্রী ওঠানামা করানো যানজটের অন্যতম কারণ। ঈদযাত্রা শুরুর আগমুহূর্তে এর সমাধান না করলে ভোগাতে পারে ঘরমুখো মানুষদের।

নাওজোড় হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন জানান, ‘বিভিন্ন সময় মহাসড়কের ওপর থাকা অবৈধ হাট-বাজার উচ্ছেদ করা হচ্ছে। শুনেছি আবারও বসেছে, সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে। তবে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত