Ajker Patrika

শ্বশুরবাড়ি থেকে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বার লাশ উদ্ধার, আটক স্বামী

মাদারীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ১৭: ৩২
Thumbnail image

মাদারীপুরে শ্বশুরবাড়ি থেকে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ ঈশিতা আক্তারের (৩৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের সুইচারভাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্বামী এনামুল ঢালীকে (৪২) আটক করেছে।

পারিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকজন পিটিয়ে ঈশিতাকে হত্যা করেছে। নিহত ঈশিতা আক্তারের এক মেয়ে ও এক ছেলে আছে।

পুলিশ, স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের সুইচারভাঙ্গা গ্রামের মাজেদ ঢালীর ছেলে এনামুল ঢালীর সঙ্গে প্রায় এক যুগ আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় একই উপজেলার ঘটমাঝি গ্রামের আইয়ুব আলী মাতুব্বরের মেয়ে ঈশিতা আক্তারের। বিয়ের সময় ঈশিতার বাবার বাড়ি থেকে নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র দেওয়া হয় এনামুলের পরিবারকে।

এরপরও আরও যৌতুকের জন্য ঈশিতার ওপর নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। এ বিষয় নিয়ে উভয় পরিবারের লোকজন বেশ কয়েকবার পারিবারিকভাবে সমাধানের জন্য বসলেও কোনো প্রতিকার হয়নি। সবশেষ শনিবার রাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে ঈশিতার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, যৌতুক না দেওয়ায় এনামুল ও তাঁর বড়ভাই টুটুল ঢালীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছে ঈশিতাকে। পরে বিষয়টি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।

ঈশিতার ভাই সোহেল মাতুব্বর বলেন, ‘আমার বোনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। যৌতুকের জন্য এভাবে মেরে ফেলবে, কখনো ভাবতে পারিনি। এই ঘটনায় জড়িত এনামুল ও তার পরিবারের লোকজনের কঠিন বিচার চাই।’

ঈশিতার মামা মো. আকাশ বলেন, ‘আমার ভাগনিকে ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছে। এখন তাঁরা বলছে, আত্মহত্যা করেছে। ৮ মাসের গর্ভবতী কোনো মা আত্মহত্যা করতে পারে না। এর আগেও যৌতুকের জন্য ঈশিতাকে নির্যাতন করেছে। এই ঘটনায় এমন বিচার চাই, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন ঘটনা ঘটাতে সাহস না পায়।’

ঘটনার পর থেকে গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক থাকায় তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান বলেন, গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে। এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী এনামুলকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া নিহতের পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে মামলা রেকর্ড করে বাকি অপরাধীদের ধরার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত