Ajker Patrika

ইসলামী ব্যাংকে লুটপাট ও অবৈধ নিয়োগের প্রতিবাদে উত্তরায় মানববন্ধন

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর উত্তরায় ইসলামী ব্যাংকের লুটপাট। অবৈধ নিয়োগের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর উত্তরায় ইসলামী ব্যাংকের লুটপাট। অবৈধ নিয়োগের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর উত্তরায় ইসলামী ব্যাংকের লুটপাট ও অবৈধ নিয়োগের প্রতিবাদে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মানববন্ধন থেকে পাঁচ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়।

উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরের সোনারগাঁও জনপথ ও উত্তরা রাজলক্ষ্মী শাখায় আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরামের পক্ষ থেকে মানববন্ধনটির আয়োজন করা হয়।

ানববন্ধনে গ্রাহক ফোরামের পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো—ব্যাংক অবৈধভাবে দখলকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে হবে এবং গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নিতে হবে। ইসলামী ব্যাংক থেকে লুটপাট করা সব অর্থ ফেরত আনতে হবে এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে হবে। যারা বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ না করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে এবং ব্যাংকের সুনাম-সুখ্যাতি ধ্বংস করছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিতে হবে এবং গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ব্যাংক শতভাগ ফ্যাসিজমমুক্ত করতে হবে এবং অবৈধ নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের অবিলম্বে ছাঁটাই করতে হবে। নতুন করে দক্ষ জনবল নিয়োগ দিতে হবে। যাঁরা নিজেদের যোগ্যতার সঙ্গে ইসলামী শরিয়াহ নিশ্চিত করে ব্যাংকটি পরিচালনার মধ্য দিয়ে আবার মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করবেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংক এ দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসার ব্যাংক। এ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতারা ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এ দেশের বহু মানুষকে সুদমুক্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ দান করেছেন। আমরা গ্রাহকেরা এই ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন, বিনিয়োগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য করে আমাদের অর্থনৈতিক জীবনযাত্রা সমৃদ্ধ করেছি। ব্যাংকটি বাংলাদেশে পরপর কয়েকবার সেরা ব্যাংক হয়েছে এবং দক্ষিণ এশিয়াতেও শ্রেষ্ঠ ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু গত ফ্যাসিস্ট সরকারের কুদৃষ্টি এই ব্যাংকের ওপরে পড়ে। তারা দিনদুপুরে ব্যাংকটি দখল করে নেয়। প্রায় দেড় লাখ হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে। সে সঙ্গে অবৈধভাবে পটিয়া উপজেলা থেকে ১২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ করে। যারা ছিল অযোগ্য, অদক্ষ এবং নিয়োগের কোনো বৈধ প্রক্রিয়া মানা হয়নি। ব্যাংক তাদের বৈধ করার জন্য পরীক্ষা নিতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, কিন্তু মাত্র ৪০০ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। বাকিরা আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা তৈরি করছে।’

একটি পোশাক কারখানার মালিক এবং ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহক ও বিনিয়োগ হোল্ডার নাজমুল আহসান বলেন, ১৯৮৩ সালে এই ব্যাংকের প্রতিষ্ঠা। সারা দেশের অনেক মানুষের ভাগ্যকে এই ব্যাংক পরিবর্তন করে দিয়েছে। ইসলামী ভাব ধারায় এই ব্যাংক পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে পটিয়ার কুখ্যাত এস আলম গ্রুপ এই ব্যাংকের কর্তৃত্ব এককভাবে গ্রহণ করে। এই ব্যাংকে শুধু পটিয়ারই সাড়ে ৮ হাজার কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। মুদিদোকান চালানোর মতো যোগ্যতা নেই। অথচ এই ব্যাংকের বড় বড় পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই ব্যাংককে ধ্বংস করেছেন তাঁরা।

নাজমুল আহসান বলেন, পটিয়ার ওই গ্রুপটা এই ব্যাংককে শেষ করে দেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। ওই এস আলম গ্রুপ দেড় লাখ কোটি টাকা এই ব্যাংক থেকে নিয়েছে। ব্যাংককে তারা দেউলিয়ায় পরিণত করে দিয়েছে। এই ব্যাংককে ধ্বংস করার জন্য তাদের হিংস্র আচরণ প্রকাশ করছে।

নাজমুল আহসান আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট দিয়ে ব্যাংক পরিচালনা হতে পারে না। যাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও দক্ষতা রয়েছে, তাঁদের দিয়েই ব্যাংক পরিচালনা করতে হবে। এখানে কোনো দুর্নীতি চলবে না। নিয়ম অনুযায়ী ব্যাংক চালাতে হবে।

নাজমুল হাসান আরও বলেন, এই ব্যাংক প্রতিষ্ঠাকালে তথাকথিত প্রগতিশীলরা টিটকারি-মশকরা করেছিল। আর বলেছিল—মোল্লারা আবার ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করবে। তাদের মুখে চুনকালি দিয়ে প্রতিষ্ঠাতারা অত্যন্ত ধীরতার সঙ্গে পরিশ্রম করে এই ব্যাংককে মহিষরূপে গড়ে তুলেছেন। এই ব্যাংক বহুবার বাংলাদেশে শীর্ষ ব্যাংকে পরিণত হয়েছে। এশিয়ার মধ্যেও বিনিয়োগ ও পারফরম্যান্স দিয়ে সেরা ব্যাংক হয়েছে।

নাজমুল বলেন, এর ফলে ফ্যাসিজম যখন বাংলাদেশকে গ্রাস করেছিল, সে সময় লুটপাটকারীদের দৃষ্টি এই ব্যাংকের ওপর পড়েছিল। পরে তারা একদিন সকালবেলা রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদে দখল করে নিয়ে গেছে। তারপর তারা লুটপাট করেছে, সীমাহীন স্বেচ্ছাচারিতা করেছে। সে সঙ্গে কোনো সিস্টেমিক পদ্ধতি ছাড়া পটিয়া বাড়ি থাকায় ১২ হাজার জনবল নিয়োগ দিয়েছে তারা। অযোগ্যদের বার করে দিয়ে যোগ্যদের এখন নিয়োগ দিতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সড়কে ঝরল দুই বন্ধুর প্রাণ

নরসিংদী প্রতিনিধি
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই বন্ধু। ছবি: সংগৃহীত
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত দুই বন্ধু। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর শিবপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় অটোরিকশার চালকসহ আরও দুজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার (১ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার পচার বাড়ি এলাকায় শিবপুর-মনোহরদী আঞ্চলিক সড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন শিবপুরের বাঘাব ইউনিয়নের উত্তর জয়মঙ্গল গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে মাহমুদুল হাসান রাজ (২২) এবং গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সনমানিয়া গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে শফিক (২১)।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা জানান, ব্যবসার কাজ শেষে মনোহরদী থেকে মোটরসাইকেলে শিবপুরে ফিরছিলেন দুই বন্ধু রাজ ও শফিক। পচার বাড়ি এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী অটোরিকশার সঙ্গে তাঁদের মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই রাজ নিহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শফিকও মারা যান। এই ঘটনায় আহত অটোরিকশার চালক ও যাত্রীকে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসাইন বলেন, লাশ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিশুদের বিনা মূল্যের টিকা কার্ড নিতে হচ্ছে টাকা দিয়ে

চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরে নবজাতকদের বিনা মূল্যের টিকা কার্ড অভিভাবকেরা টাকা দিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ উঠেছে, চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকা কেন্দ্রের ইনচার্জ বিল্লাল হোসেন টিকা কার্ড তৈরি করার বিনিমিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে ১০০ থেকে ২০০ টাকা করে নিচ্ছেন।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যায়, বিল্লাল হোসেন অভিভাবকদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করছেন। ভিডিওটি নজরে আসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। তারা বিল্লাল হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে। নোটিশে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে এবং কেন তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বিল্লাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত
বিল্লাল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিল্লাল হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।

হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কে এম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘টিকা কার্ড দিতে অর্থ নেওয়া সম্পূর্ণভাবে নিয়মবহির্ভূত। অভিযোগটি অত্যন্ত গুরুতর এবং এর সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। ভিডিওটি আমাদের নজরে আসার পরই আমরা তাৎক্ষণিক অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে শোকজ করেছি। জবাব পাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পঞ্চগড়ে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৩৩
ভোরবেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা
ভোরবেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে বাস। ছবি: আজকের পত্রিকা

উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৭৯ শতাংশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঠান্ডার আমেজ বেশি থাকলেও রোদ উঠলেই চারপাশ ধীরে ধীরে উষ্ণ হয়। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস জানায়, গত সপ্তাহে জেলার তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করেছে। সোমবার ১৩ দশমিক ৩, রোববার ১৩ দশমিক ১, শনিবার ১৩ দশমিক ১, শুক্রবার ১৩ দশমিক ৫, বৃহস্পতিবার ১৩ দশমিক ২, বুধবার ১২ দশমিক ৯, মঙ্গলবার ১২ দশমিক ৮, সোমবার ১৩ দশমিক ৪ এবং রোববার ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়।

জেলা ঘুরে দেখা গেছে, ফসলি জমি ও ঘাসের ডগায় শিশির জমে আছে এবং সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বইছে হিমেল হাওয়া। বিকেল গড়ালেই তাপমাত্রা কমতে থাকে এবং মধ্যরাতের পর শীতের তীব্রতা বেড়ে যায়। ঘন কুয়াশার কারণে ভোরবেলায় যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।

দরজিপাড়া এলাকার ভ্যানচালক কুদ্দুস আলী বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে হালকা কুয়াশা পড়লে আজ একটু কুয়াশা ও শীতের মাত্রা বেড়েছে। ভ্যান চালালেই পুরো গা ভিজে যাচ্ছে। যাত্রীও নাই। মনে হচ্ছে পুরোদমে শীত পড়া শুরু হলো।’ এক পথচারী রাকিব হাসান বলেন, ‘সকালে প্রতিদিনের মতো হাঁটতে বেরিয়েছি। মনে হচ্ছে, আজ থেকে শীত বাড়বে। অন্যদিনের তুলনায় আজকে খুবই ঠান্ডা।’

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, শীত ধীরে ধীরে নামছে। আজ ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে। সামনে শীত আরও তীব্র হতে পারে। শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাবুবাজার সেতুর যানজটে ভোগান্তিতে লাখো মানুষ

  • ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রবেশপথ এই সেতু।
  • আধা মিনিটের রাস্তা পার হতে লাগছে ৩-৪ ঘণ্টা।
  • উল্টো পথে অটো-ভ্যান, সেতুর ওপর অস্থায়ী বাজার।
কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪০
বাবুবাজার সেতুর ওপর যানবাহনের সারি। দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা। সম্প্রতি সেতুর জিঞ্জিরা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা
বাবুবাজার সেতুর ওপর যানবাহনের সারি। দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ছে যাত্রীরা। সম্প্রতি সেতুর জিঞ্জিরা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকার বাবুবাজার এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত বাবুবাজার সেতু সাধারণ মানুষের জন্য এখন যেন গলার কাঁটা। রাজধানীর সঙ্গে মাওয়া, মুন্সিগঞ্জ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সড়ক যোগাযোগের প্রধান প্রবেশদ্বার এটি। ১৯৯৪ সালে নির্মাণকাজ শুরু হওয়া সেতুটি ২০০২ সালের মে মাসে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এটির দৈর্ঘ্য ৭৫০ মিটার, প্রস্থ ১৭ দশমিক ৫ মিটার। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের চাপ বেড়ে যাওয়ায় এই সেতুকে কেন্দ্র করে বেড়েছে যানজট। এটি পরিণত হয়েছে লাখো মানুষের দুর্ভোগের স্থানে।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা ও যানজট নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। বাবুবাজার সেতুর যানজট নিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করব। কোনো অসাধু কর্মকর্তা অবৈধ স্টেশনসংক্রান্ত সুবিধা নিলে তা কঠোরভাবে দমন করা হবে।’

কেরানীগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখান, লৌহজংসহ দক্ষিণাঞ্চলের অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। মিটফোর্ড হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহার করতে হয় তাদের। অথচ যানজটের কারণে মাত্র আধা মিনিটের রাস্তা পার হতে সময় লাগে তিন থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত।

এতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ছাড়াও জরুরি চিকিৎসাসেবা বাধাগ্রস্ত হয় অনেকের। যানজটে যথাসময়ে হাসপাতালে পৌঁছাতে না পেরে মাঝপথে রোগীর অবস্থা আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে।

ভুক্তভোগীরা জানান, উল্টো পথে অটোরিকশা ও ভ্যানের বিশৃঙ্খলা, সেতুর ওপর অস্থায়ী বাজার, দুই পাশে অবৈধ সিএনজি, ট্রাক ও বাসস্টেশন গড়ে ওঠা, সড়কে স্থায়ীভাবে পার্ক করা গাড়ি; সব মিলিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। একদিকে প্রশাসনিক তদারকির অভাব, অন্যদিকে নিয়মনীতি না মানার প্রবণতায় পুরো এলাকায় দেখা যায় গাড়ির দীর্ঘ সারি।

সাইফুল করিম নামের একজন পথচারী বলেন, অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান না হলে সাধারণ মানুষের রক্ষা নেই। মুমূর্ষু রোগীদের বহনকারী গাড়ি ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকে। এতে ঢাকার হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে, অথচ প্রশাসন নীরব। পান্না নামের একজন গৃহবধূ বলেন, ‘ব্রিজে এমন যানজট যে চিনকুটিয়া চৌরাস্তা থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত একটানা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বাচ্চাদের স্কুলে আনা-নেওয়াতেও অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের।’

কদমতলী চৌরাস্তার আরিফ খান বলেন, লাখো মানুষের যাতায়াতের সুবিধা হলেও বাবুবাজার সেতু

এখন নিত্যদিনের দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন সেতু নির্মাণ, অবৈধ দখল উচ্ছেদসহ কার্যকর তদারকি না হলে এই ভোগান্তি আরও বাড়বে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, সেতুতে ২০০-২৫০ অটো-ভ্যান চলাচল করে। এগুলোর প্রতিটি থেকে মাসে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা ওঠানো হয়; যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের পকেটে ঢোকে। এটা বন্ধ করতে না পারলে যানজট কমবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত