Ajker Patrika

দখল হওয়া ‘হাইক্কার খাল’ উদ্ধারে বছিলায় মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১১ জুন ২০২৪, ২২: ১৮
দখল হওয়া ‘হাইক্কার খাল’ উদ্ধারে বছিলায় মানববন্ধন

দখল হওয়া হাইক্কার খাল উদ্ধারে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার যৌথভাবে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), বুড়িগঙ্গা রিভারকিপার, বুড়িগঙ্গা নদী মোর্চা এবং বছিলা এলাকাবাসী। 

ধরার সদস্যসচিব পরিবেশ ও মানবাধিকারকর্মী শরীফ জামিল বলেন, ‘নদীর জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে—ছোট নদী, শাখা নদী, উপনদী, খাল। কাজেই আমরা যদি এগুলোকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলি, প্লাবন অঞ্চলকে ভরাট করে ফেলি, খালগুলোকে বেঁচে থাকতে না দিই—তাহলে আমাদের বসতি হুমকির মুখে পড়ে যাবে। খালগুলো উদ্ধার না হলে নদী মৃত। হাত-পা না থাকলে মানুষ যেমন বেঁচে থাকবে না, তেমনই এই খালগুলো ছাড়া নদী মৃতপ্রায়।’ 
 
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমরা একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, কিন্তু বুড়িগঙ্গার পাড়ে এই বহুতল বিল্ডিং ও অবৈধ দখলদারদের বৈধতা দেওয়া একটি শ্রেণির মানুষকে সুখী করে। অন্যদিকে যে মানুষগুলো নদীর সঙ্গে বছরের পর বছর বসবাস করে আসছে, তাদের অসুখী করেছে এবং নদীকেন্দ্রিক জীবন ও জীবিকা থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে।’

রিভার বাংলা সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করে উন্নয়ন করলে, তা কখনো দীর্ঘস্থায়ী হবে না। আজ অথবা কাল আমরা সকলেই এর দ্বারা আক্রান্ত হব। প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসকারী উন্নয়ন থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে।’ 

ধরার সদস্য মামুন কবীরের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে এলাকাবাসীর সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন ‘নিরাপদ চিকিৎসা চাই’-এর মহাসচিব উম্মে সালমা, বনলতা নারী উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান ইসরাত জাহান লতা, আমিনবাজার ঘাট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আমজাদ আলী লাল। এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য দেন বছিলা পুরাতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মানিক হোসেন, জেলেপাড়া মন্দির কমিটির সভাপতি স্বপন রাজবংশী, জেলে নেতা গোপাল রাজবংশী প্রমুখ। 

গত ১১ মার্চ আজকের পত্রিকায় ‘উন্নয়নের চাপে মরতে বসেছে হাইক্কার খাল’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, বুড়িগঙ্গা নদী থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলার শ্রীখণ্ড মৌজা হয়ে রায়েরবাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধসংলগ্ন কবরস্থানের মধ্য দিয়ে লাউতলা খাল ও রামচন্দ্রপুর খালের সঙ্গে ১৫ বছর আগেও যুক্ত ছিল হাইক্কার খাল। ২০১০ সালের জুলাই মাসে ‘রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধসংলগ্ন কবরস্থান উন্নয়ন প্রকল্প’ নেয় ডিএনসিসি। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পর হাইক্কার খালের স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে খাল দখলে দখলদারদের জন্য সুযোগ তৈরি হয়। 

গত ৪ এপ্রিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২য় পরিষদের ২৬তম করপোরেশন সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হাইক্কার খাল হতে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে নৌকা চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু দুই মাস ফেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত