Ajker Patrika

জয়কে হত্যার ষড়যন্ত্র মামলায় বিএনপি নেতা মিজানুরের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ৪৯
বিএনপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে এবং তাঁর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করার মামলায় সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত বিএনপির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক পরোয়ানা প্রত্যাহারের এই নির্দেশ দেন।

একই সঙ্গে মিজানুর রহমানকে আপিল করার জন্য মামলার জাবেদা নকল সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এই মামলার দুটি ধারায় সাত বছরে সাজাপ্রাপ্ত মিজানুর রহমান আদালতে হাজির হয়ে মামলায় ইতিপূর্বে জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন করেন ও জাবেদা নকল সরবরাহের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত উভয় আবেদন মঞ্জুর করেন।

আদালতের আদেশের পর মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘গত ২২ সেপ্টেম্বর তাঁর শাস্তি এক বছরের জন্য স্থগিত করে সরকার। এ কারণে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহার ও আপিল করার জন্য জাবেদা নকল সরবরাহের আবেদন করা হয়। আদালত উভয় আবেদন মঞ্জুর করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘জাবেদা নকল পাওয়ার পর তিনি আপিল করবেন।’

মিজানুর রহমান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী হওয়ায় এই মামলায় পলাতক হিসেবে সাজাপ্রাপ্ত হন। গত বছর ১৭ই আগস্ট মিজানুর রহমান, বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচজনকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূর।

সাজাপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন—জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন ও তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার।

দণ্ডবিধির দুটি ধারায় একটিতে পাঁচ বছর এবং অপরটিতে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানার টাকা পরিশোধ না করলে প্রত্যেককে আরও তিন মাসের কারা ভোগ করতে হবে বলে রায়ে বলা হয়। রায় ঘোষণার সময় সবাই পলাতক ছিলেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

রায়ে আরও বলা হয়, সাজাপ্রাপ্ত সবাই পলাতক থাকায় তারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর অথবা আদালতে আত্মসমর্পণ করার পর রায় কার্যকর হবে।

মামলার অভিযোগ ছিল, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যেকোনো সময় থেকে বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় একত্রিত হয়ে পরস্পর যোগসাজশে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন।

২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর সজীব ওয়াজেদ জয় আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য প্রদান করেন। তাঁকে হত্যার চেষ্টার ষড়যন্ত্রের ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি।

সজীব ওয়াজেদ জয় তাঁর জবানবন্দিতে বলেন, সাংবাদিক শফিক রেহমান ও মাহমুদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন এবং বিএনপির নেতৃস্থানীয় কয়েকজন তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। তিনি বিষয়টি ‘ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস’ থেকে জানতে পারেন।

যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের একজন সদস্যকে শফিক রহমান, মাহমুদুর রহমান, মামুন ও যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান এবং বিএনপির আর এক নেতা মামুনের ছেলে রিজভী আহমেদ ওরফে সিজারের মাধ্যমে ঘুষ দেন।

তিনি জানতে পারেন, এফবিআইর ওই সদস্যকে ৪০ হাজার ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন সিজার। সজীব ওয়াজেদ জয়ের গতিবিধি লক্ষ্য রাখার এবং প্রতিটা মুহূর্তের খবরাখবর খবর দেওয়ার জন্য এফবিআই সদস্যকে ঘুষ দেওয়া হয়। জয় যত দিন থাকবেন তত দিন প্রতি মাসে আরও ৩০ হাজার ডলার করে ঘুষ দেওয়ার চুক্তিও হয়েছিল ওই এফবিআই সদস্যের সঙ্গে।

জয় আরও বলেন, এফবিআই সদস্যকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র মামলা হয়। ওই মামলায় জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার ও এফবিআই এক সদস্যকে সাজা দেওয়া হয়।

এসব ঘটনার পরে বাংলাদেশে এই মামলা হয়। এই মামলা হওয়ার পর সাংবাদিক শফিক রেহমানের ইস্কাটনের বাসা থেকে এই হত্যার ষড়যন্ত্রের বেশ কিছু আলামত উদ্ধার হয় বলেও মামলায় বলা হয়।

বিচার চলাকালে এই মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।

উল্লেখ্য এই মামলায় মাহমুদুর রহমান আত্মসমর্পণ করে কারাগারে যাওয়ার পর আপিল করেন এবং তিনি বর্তমানে জামিনে আছেন। শফিক রেহমানের সাজাও সরকার স্থগিত করার পর তিনি আপিল করে জামিনে আছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

উড়তে থাকা ভারতকে থামাতে ফিল্ডিং নিল নিউজিল্যান্ড

ভারত-নিউজিল্যান্ডের চিন্তা বাদ দিয়ে আপাতত ঘুমাতে চান তিনি

ফরিদপুরে ছাত্রদলের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণার পরদিনই ১১ জনের পদত্যাগ

ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধান সাইফুল আলমের বাসা থেকে আড়াই কোটি টাকা উদ্ধার

ইতিহাস নির্মাতারা রাজনীতির ঊর্ধ্বে: ঢাবি উপাচার্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত