Ajker Patrika

ট্রেনে উঠতে না পেরে স্টেশন মাস্টারকে পেটালেন আ.লীগের নেতা–কর্মীরা

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ০১: ১৫
ট্রেনে উঠতে না পেরে স্টেশন মাস্টারকে পেটালেন আ.লীগের নেতা–কর্মীরা

গাজীপুর মহানগরীর জয়দেবপুর রেলস্টেশনে ঢাকায় যাওয়ার জন্য কাঙ্ক্ষিত ট্রেনে উঠতে না পেরে ক্ষুব্ধ কয়েক ব্যক্তি স্টেশন ইনচার্জসহ রেলের ছয় কর্মীকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, অভিযুক্তরা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জয়দেবপুর রেলস্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। তবে অভিযুক্তরা এ ঘটনায় জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন। 

মারধরে আহত হয়েছেন জয়দেবপুর রেলস্টেশন মাস্টার মো. হানিফ আলী, রেলওয়ে নিরাপত্তাকর্মী রাশেদ মন্ডল, রাসেল হাওলাদার, আব্দুল মজিদ, মনির হোসেন ও মোশাররফ হোসেন। তাঁদের মধ্যে স্টেশন মাস্টার মো. হানিফ আলীকে চিকিৎসার জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের আঘাত গুরুতর নয়।
 
সংশ্লিষ্টরা জানায়, রাজধানীতে ঢাকা মেট্রোরেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সদর মেট্রো থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাসুদ রানা এরশাদের নেতৃত্বে শতাধিক নেতা-কর্মী ঢাকায় যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁরা যে সময় যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, ওই সময় কোনো ট্রেন ছিল না। আবার আন্তনগর ট্রেনে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে তাঁরা উঠতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে স্টেশনে দায়িত্বরত মাস্টারের ওপর হামলা চালান। এ সময় স্টেশন মাস্টারসহ ছয়জন আহত হন।

স্টেশন মাস্টার হানিফ আলী বলেন, ঢাকায় যাওয়ার জন্য তাঁদের কোনো ট্রেন রিজার্ভ ছিল না। গফরগাঁও, টাঙ্গাইল, হাইটেক সিটি, মহেড়া থেকে ট্রেন রিজার্ভ করে নিয়ে গেলেও জয়দেবপুর থেকে কোনো রিজার্ভ ট্রেন ছিল না। ওনারা যে সময় যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তখন শুধু চাঁপাই এক্সপ্রেস ছিল। ঢাকার কন্ট্রোল থেকে বলা হয়েছিল ৪টার পর থেকে ট্রেনটি আবার চালাবে। কিন্তু ৪টার পর তাঁরা ঢাকায় গেলে অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন না, আবার বাকি ট্রেনগুলো থামবেও না। তাঁদের দাবি ছিল রিজার্ভ করা ট্রেন থামিয়ে তাঁদের তুলে দেওয়ার। কিন্তু রিজার্ভ করা ট্রেনের লোকদের আপত্তির মুখে রিজার্ভ ট্রেনগুলোও থামানো যাচ্ছিল না। এ সময় টাঙ্গাইল আওয়ামী লীগের ভাড়া করা  টাঙ্গাইল স্পেশাল ট্রেনটি জোর করে থামিয়ে দিলেও তাঁদের ওই ট্রেনে ওঠায়নি। 

বিষয়টি ট্রেনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস থামিয়ে মাসুদ রানা এরশাদের সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীদের তুলে দিতে বলেন। ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস থামানো হলেও অতিরিক্ত যাত্রীর ভিড় থাকায় তাঁরা উঠতে পারেননি। এরপরই তাঁরা আমাদের ওপর হামলায় চালান। 

তিনি আরও বলেন, তিনি পায়ে, বুকে, পিঠে, মাথায় আঘাত পেয়েছেন। চিকিৎসার জন্য গাজীপুর শহিদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সুস্থ হয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। 

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগে নেতা মাসুদ রানা এরশাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, স্টেশন কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তিনি বলেন, ‘আমরা ট্রেনে ওঠার পর দেখতে পাই কিছু উত্তেজিত লোকজন স্টেশন মাস্টারকে মারধর করছে। আমি দেখে ট্রেন থেকে নামতে নামতে অন্যরা তাকে উদ্ধার করে তার কক্ষে নিয়ে যায়।’ কারা মেরেছে জানতে চাইলে তিনি কারও নাম বলেননি এবং বলেন, ‘তারপরেও এর সঙ্গে আমাদের কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত