Ajker Patrika

কিশোরকে বাসা থেকে নিয়ে নির্যাতনের পর ফেলে যায় রাস্তায়, হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু

ঢামেক প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মীরহাজীরবাগে চোর সন্দেহে নির্যাতনের শিকার কিশোর বাপ্পি (১৫) মারা গেছে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে তার মারধর করা হয়। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় তাকে রাস্তায় ফেলে রেখে গেলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠিয়েছে।

বাপ্পি বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার কদমতলা গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে। তার বাবা রিকশাচালক এবং মা পারুল বেগম একটি কারখানায় কাজ করেন। বাপ্পিও মায়ের সঙ্গে একই কারখানায় কাজ করত। সে ধোলাইপাড় এলাকার প্রেমগলিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকত।

বাপ্পির বড় ভাই মো. পারভেজ জানান, গত মঙ্গলবার আনুমানিক দিবাগত রাত ২টার দিকে একই এলাকার কাপশি রাসেল, মোল্লা শুভ এবং শাকিব তাঁদের বাসায় আসে। তারা অভিযোগ করে, বাপ্পি মীরহাজীরবাগের একটি বাসা থেকে জানালা দিয়ে টাকা ও বিদ্যুতের প্রিপেইড কার্ড চুরি করেছে। এরপর তাকে জোর করে ধরে নিয়ে মীরহাজীরবাগের আবু হাজী মসজিদ গলির একটি বাসার নিচতলার ‘ক্লাব ঘরে’ আটকে রাখা হয়।

পারভেজ আরও বলেন, সেখানে বাপ্পিকে রাতভর পেটানো হয়। বুধবার সকাল ৬টার দিকে চুরির টাকা ও মালামাল বের করে দেওয়ার কথা বলে বাপ্পিকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু কিছু না পেয়ে তারা আবার বাপ্পিকে নিয়ে যায়। বাপ্পিকে ছাড়াতে তার মা পিছু পিছু গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। সারা দিন নির্যাতনের পর বাপ্পি যখন নিস্তেজ হয়ে পড়ে, তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে তাকে মীরহাজীরবাগের বড়বাড়ি প্রথম গেটের সামনের রাস্তায় ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথেই বাপ্পি মারা যায়।

ঢামেক মর্গে বাপ্পির বাবা মো. শাহজাহান আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘আমার ছেলে যদি কোনো অপরাধ করেও থাকে, তাহলে মারধর করার পর পুলিশের কাছে তুলে দিত। এইভাবে নির্যাতন করে মেরে ফেলল কেন? আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’

যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আসাদুজ্জামান জুয়েল প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে জানান, চোর সন্দেহে বাপ্পি নামে ওই কিশোরকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

এসআই জুয়েল নিশ্চিত করেন, বাপ্পির মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে যার বাসায় চুরির সন্দেহে বাপ্পিকে ডেকে নেওয়া হয়েছিল, সেই ফৌজিয়া রওশন আক্তার প্রীতিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি ৫-৬ জন আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...